চুয়াডাঙ্গায় আলোচিত ২ মাদরাসাছাত্র পেটানোর ঘটনায় মামলা, শিক্ষক ইব্রাহিম গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার

চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার দীননাথপুর জামেয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া কওমিয়া মাদ্রাসার দুই ছাত্রকে বেধড়ক পিটিয়ে জখমের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ইব্রাহিমকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দুপুরে আহত শিক্ষার্থী মিরাজের বাবা মিলন আলী বাদি হয়ে শিশু আইনে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপরই আটক শিক্ষক ইব্রাহিমকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ খালেদুর রহমান বলেন, মাদরাসা কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষককে আটকিয়ে রেখেছিল। খবর পেয়ে মধ্যরাতে পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে গতকাল শুক্রবার দুপুরে শিশু আইনে আহত শিক্ষার্থী মিরাজের পিতা মিলন বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে  শিক্ষক ইব্রাহিমকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মাখালডাঙ্গা ইউনিয়নের কুকিয়া চাঁদপুর গ্রামের গোরস্থান পাড়ার, মিলনের ছেলে মিরাজ (১২) ও একই এলাকার বজলুর রহমানের ছেলে রাব্বি (১৩)।

এর আগে, বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে দীননাথপুরে অবস্থিত জামেয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া কওমিয়া মাদ্রাসায় এই মারধরের ঘটনা ঘটে। গুরুতর অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পর আহত শিক্ষার্থী মিরাজ জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে তারা চারজন মিলে মাদ্রাসার মসজিদে ঘুমাচ্ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন হুজুর ইব্রাহিমের ভাগ্নে হুজাইফা। ঘুমের ঘোরে ভুলবশত হুজাইফার গায়ে পা স্পর্শ হয়ে যায়। বিষয়টি নিজের চোখে দেখে ফেলেন শিক্ষক ইব্রাহিম। এরপর কোনো কথা না বলে ঘুমন্ত অবস্থাতেই লাঠি হাতে পেটাতে শুরু করে আমাকে ও রাব্বিকে। পরে আমাদের দুজনকে পাশের কক্ষে নিয়ে গিয়ে মেহগনি গাছের ডাল দিয়ে বেধড়ক মারতে থাকে। ঘটনার পর আহত শিক্ষার্থী রাব্বি জানায়, আমাকে কেন মারছেন। জিজ্ঞাসা করতেই আরও বেশি মারধর করে মেহগনি গাছের চেলা কাঠ দিয়ে। মারধরের পর শিক্ষক হুমকি দেন ঘটনাটি পরিবারকে জানালে তাদের জবাই করে টুকরো টুকরো করে ফেলা হবে অথবা মাদ্রাসার ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হবে।

               ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মিরাজের মা জানান, “আমি বাড়িতে কাজ করছিলাম। হঠাৎ দেখি আমার ছেলে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে বাড়ি ফিরেছে। শরীরে ধুলোবালি লেগে আছে। কী হয়েছে জানতে চাইলে ছেলেটি জানায়, ঘুমের মধ্যে হুজুরের ভাগ্নের গায়ে পা লেগে যাওয়ায় হুজুর নির্মমভাবে মারধর করেছে। জামা খুলে দেখি পুরো শরীরে আঘাতের দাগ। আমার সন্তান অন্যায় করলে আমাদের বলতে পারতেন, কিন্তু এভাবে মারধর করা মানবিক নয়। আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *