স্টাফ রিপোর্টার
২০ লাখ টাকা পাওনা আদায়ের জেরে চুয়াডাঙ্গায় সমবায় অফিসের অফিস সহায়ক ইকবাল হোসেনকে বাসায় আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে এক নারীর বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা চুয়াডাঙ্গা সমবায় কোয়াটারে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ইকবাল ও অভিযুক্ত নারী রোকসানা খাতুনকে থানায় নিয়ে আসে। তবে রাতেই দুই পক্ষের সমঝোতা শেষে ৩ জনের মুচলেকায় ইকবালকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় রোকসানা খাতুন বাদী হয়ে ইকবালের নামে সাধারন ডায়েরী করেছেন। জিডি নং ৮৪১।
জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা কোর্টপাড়ার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে এবং দীর্ঘদিন ধরে চুয়াডাঙ্গা সমবায় অফিসে অফিস সহায়ক পদে কর্মরত। মঙ্গলবার বিকালের দিকে পুলিশ সদস্য মহসিনের স্ত্রী রোকসানা পাওনা টাকা উদ্ধারের জন্য ইকবালকে তার ভাড়া বাসায় ডেকে নেন। পরে কৌশলে ইকবালকে ওই বাড়িতে আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এলাকার লোকজন দ্রুত ছুটে আসেন এবং ইকবাল হোসেনকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ উভয় পক্ষকে শান্ত করে ইকবাল হোসেন এবং অভিযুক্ত রোকসানা চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় নিয়ে যায়। পাওনা টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই গোলযোগ চলছিল।
এ ব্যাপারে পুলিশ কনষ্টেবল মশিম উদ্দিনের স্ত্রী রোকসানা খাতুন বলেন, কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকুরী দেওয়ার নাম করে ২০২২ সালে দুই দফায় তাদের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা নেন। ৩ বছর পার হলেও চাকুরী দিচ্ছেনা আবার টাকা ফেরত দিচ্ছেনা ইকবাল। টাকা দেওয়ার সময় ইকবালের কাছ থেকে প্রমাণ স্বরুপ চেক, জমির দলিল আমরা রেখে দিয়। মঙ্গলবার বিকালে আমার স্বামী না থাকার সুযোগে ইকবাল আমার বাড়িতে এসে চেক ও জমির দলিল ফেরত চায়। আমি সেটা দিতে অস্বীকার করি। এক পর্যায়ে তাকে আমি আমার আটকে তালা দিয়। পরে ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশ এসে ইকবালকে আটক করে নিয়ে যায়।
এদিকে ইকবাল বলেন, ব্যবসা সংক্রান্ত কাজের জন্য সে আমাকে টাকা দিয়েছে। আমার কাছ থেকে প্রতি মাসে লাভ নেয়। মঙ্গলবার চেক ফেরত দেওয়ার নাম করে আমাকে তার বাড়ি ডেকে নিয়ে আটকে রাখে।
অপরদিকে ৩ জনের জিম্বায় মঙ্গলবার রাতে ইকবালকে থানা থেকে মুক্ত করা হয়। নিচে জামিননামার কপি হুবহুবু তুলে ধরা হলো। আমি নিম্ন-স্বাক্ষরকারী উপরোক্ত সাক্ষীদের মোকাবেলায় উপরোক্ত জামিনদারের জামিনে যাইয়া এই অঙ্গীকার করিতেছি যে, সাক্ষীর কলামে উল্লেখিত মোছাঃ রোকসানা খাতুন আমার নিকট নগদ ২০,০০,০০০/- (বিশলক্ষ) টাকা পাওনা আছে। উক্ত টাকা আমি পরিশোধ করতে না পারায় সে আমাকে প্রায় ১ বছর যাবত চাপ প্রয়োগ করছে। গত ১৫/১২/২০২৫ খ্রিঃ সাক্ষীর নিকট প্রদত্ত সোনালী ব্যাংক কোর্ট বিল্ডিং শাখা, চুয়াডাঙ্গা’র ১৫,০০,০০০/- (পনেরলক্ষ) টাকার ১টি চেক ডিজঅনার করেন। উক্ত বিষয়ে আলাপ করার জন্য আমি অদ্য ১৬/১২/২০২৫ খ্রিঃ বিকাল অনুমান ০৪.৩০ ঘটিকার সময় তার বাড়ীতে যায়। ভুল বোঝাবুঝির জন্য সাক্ষী মোছাঃ রোকসানা খাতুন জাতীয় জরুরী সেবা-৯৯৯ কল দেয়। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশ গিয়ে আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে আমার পরিবারের লোকজন সাক্ষী মোছাঃ রোকসানা খাতুন এর সহিত আগামী ১৪/০১/২০২৬ খ্রিঃ ১০,০০,০০০/- (দশলক্ষ) টাকা পরিশোধ করবে, অবশিষ্ট ১০,০০,০০০/- (দশলক্ষ) টাকা পরিশোধের তারিখ উক্ত দিন ধার্য করবে মর্মে বিষয়টি আপোষ মিমাংসা করে নেয়। নির্ধারিত তারিখে আমি টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে সাক্ষী মোছাঃ রোকসানা খাতুন আমার বিরুদ্ধে আদালতে বা থানায় মামলা করতে পারবে। এবিষয়ে পুলিশ অথবা আদালত কর্তৃক তলবমাত্র যথাসময়ে যথাস্থানে হাজির হইতে বাধ্য থাকিব। অন্যথায় বাংলাদেশ সরকারের প্রচলিত আইনামলে আসিতে বাধ্য থাকিব।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, তারা উভয়ে বিষয়টি মিমাংসা করেছে।
চুয়াডাঙ্গায় পাওনা টাকা নিয়ে সমবায় কর্মচারী ইকবালকে আটকে রাখলো নারী থানায় জিডি, মুচলেকায় মুক্ত



