মুক্তিযুদ্ধে বিরত্বগাথা ৭ ডিসেম্বর-চুয়াডাঙ্গা মুক্ত দিবস-২০২৫

আজ ৭ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গা মুক্ত দিবস। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালিত হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনও এই গৌরবময় দিবসটি যথাযোগ্য গুরুত্বের সাথে পালনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহন করেছে। দিবসটি সম্পর্কে কিছু কথা…

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম খুলনা বিভাগের অন্তর্গত মাথাভাঙ্গা-নবগঙ্গা-চিত্রা-ভৈরব নদীবিধৌত সবুজ বৃক্ষরাজি ঘেরা প্রাকৃতিক সোন্দর্যের প্রতীক এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রথম অস্থায়ী রাজধানী হিসাবে পরিচিত একটি ছোট্ট জেলা-চুয়াডাঙ্গা। এই জেলার পশ্চিমে ভারতের পশ্চিমবর্গের নদীয়া জেলা, উত্তর-পশ্চিমে মেহেরপুর, উত্তর পূর্বে কুষ্টিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্বে ঝিনাইদহ জেলা অবস্থিত। চুয়াডাঙ্গা জেলার আয়তন ১১৭০.৮৭ বর্গ কি. মি. এবং লোক সংখ্যা ১৯,২০,০৯৮ জন (২০১১ সালের আদমসুমারী আনুসারে)। এই জেলার উপর দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা অতিক্রম করায় শীতের সময় তীব্র শীত এবং গরমের সময় প্রচন্ড গরম অনুভূত হয়। ঢাকা থেকে ২৫০ কি. মি. দূরে অবস্থিত।

বাঙালির ইতিহাসে গৌরবময় অধ্যায় মুক্তিযুদ্ধ। আর এই মুক্তিযুদ্ধে চুয়াডাঙ্গার মুক্তিকামী দামালছেলেদের অবদান ছিল অপরিসীম। মূলত চুয়াডাঙ্গা ছিল স্বাধীনতার সূতিকাগার হিসাবে পরিচিত। দক্ষিণ-পশ্চিম রণাঙ্গনের হেড কোয়াটার ছিল চুয়াডাঙ্গা। এর হাইকমান্ড ছিলেন চুয়াডাঙ্গার তদানিন্তন ই.পি.আর. উঁইং কমান্ডার মেজর আবু ওসমান চৌধুরী এবং সহ অধিনায়ক ছিলেন ক্যাপ্টেইন আজম চৌধুরী। এদুজন সামরিক কর্মকর্তার ভূমিকা ছিল অগ্রনীয়। এখানে ই.পি.আর ক্যাম্প থাকায় চুয়াডাঙ্গাতে একটি শক্তিশালী প্রতিরোধ বাহিনী এবং মহাকুমা-সংগ্রাম পরিষধ গঠন করা সম্ভব হয়েছে। এই সংগ্রাম পরিষধের আহ্বয়ক এবং দক্ষিণ-পশ্চিম রণাঙ্গনের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন ডাঃ আসহাব উল হক, ওরফে হ্যাবা ডাক্তার। তাঁর নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষধ অত্যন্ত শক্তিশালী ছিল। সংগ্রাম পরিষধের তথ্যকেন্দ্র ছিল চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ সংলগ্ন এ্যাসোসিয়েশন হল। স্মৃতিবিজরীত এই ভবনটি বিলুুপ্তির পথে।

অধিনায়ক মেজর আবু ওসমান চৌধুরী এবং প্রধান উপদেষ্টা ডাঃ আসহাব উল হক এর নেতৃত্বে ২৫ মার্চ’৭১  কালরাত্রে পাক হানাদার বাহীনী অপারেশন সার্চ লাইট নামে ঘুমন্ত নিরীহ বাঙালির উপর ঝাপিয়ে পড়ে এবং দেশ ব্যাপি গণহত্যা চালাই। পরের দিন অর্থাৎ ২৬ মার্চ’৭১ চুয়াডাঙ্গা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। তখন ই.পি.আর, বাঙালি সদস্য, পুলিশ সদস্য, আনসার, মুজাহিদ, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ আপামর জনতা, ছাত্রজনতা নিয়ে একটি শক্তিশালী প্রতিরোধ বাহিনী গঠন করা হয়। এদের সহযোগিতায় রাস্তায় গাছ ফেলে পাক বাহিনীর গতিরোধ করা হয়, যেন কোন ভাবেই যশোর সেনানিবাস থেকে কোন সেনা চুয়াডাঙ্গায় ঢুকতে না পারে। এছাড়াও ঝিনাদহে যশোরের অদূরে বিষয়খালি ব্রীজ এর নিকট শক্ত একটি বেরীকেট দেওয়া হয়, পাকসেনাদের আটকানোর জন্য।

ফলে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহসহ এবং যশোরের একটি বড় অংশ ছিল মুক্ত অঞ্চল। এই অঞ্চলকে বলা হত রিপোর্টিং স্পর্ট। বাংলাদেশের সকল অঞ্চল পাকসেনাদের দখলে গেলেও এই রিপোর্টিং স্পর্টে  পাক বাহিনী প্রবেশ করতে পারিনি। এই অঞ্চলটি ২৫ মার্চ’৭১ থেকে ১৬ এপ্রিল’৭১ পর্যন্ত মুক্ত ছিল। এই দীর্ঘ সময় মুক্ত থাকায় দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংবাদিক সহজেই ভারতের কলকাতা থেকে গেদে রেলস্টেশন হয়ে চুয়াডাঙ্গায় পৌছে প্রতিরোধ যুদ্ধের খোজখবর নিয়ে ভারতের বিভিন্ন পত্রিকাসহ প্রাচ্যের পত্রিকাই খবর প্রকাশত হতো। ফলে জনমত সৃষ্টিতে সহজ হয়েছে। হাঠাৎ এপ্রিল’৭১ র প্রথম সপ্তাহে বিবিসির সাংবাদিক মার্ক টালী চুয়াডাঙ্গা সংগ্রাম পরিষদের তথ্য কেন্দ্র সাহিত্য পরিষদ সংলগ্ন এ্যাসোসিয়েশন  হলে এসে পৌছায়। ঐ সময় প্রধান উপদেষ্টা ডাঃ আসাবুল হক এবং আমি নিজে সেখানে উপস্থিত ছিলাম। এ্যাসোসিয়েশন হলের বারান্দা এবং সিঁড়িতে দাড়িয়ে প্রায় একঘণ্টা যাবৎ চুয়াডাঙ্গা প্রতিরোধ যুদ্ধের তথ্য আমাদের কাছ থেকে শোনেন। পরবর্তীতে তিনি প্রাচ্যের বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় যুদ্ধে খবর প্রকাশ করেন।

ইতিমধ্যে ২৬ মাচ’৭১ পাক হানাদার বাহিনী হঠাৎ করে কুষ্টিয়া শহর দখল করে নেয়। সঙ্গে সঙ্গে খবর চুয়াডাঙ্গা পৌছালে চুয়াডাঙ্গার প্রতিরোধ বাহিনী, সহঅধিনায় আজম চৌধুরীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া অবস্থানরহ পাকবাহিনীর উপর তৃমুখী আক্রমন শুরু করে এবং ৩০ মার্চ’৭১ এ পূনরায় কুষ্টিয়া শহর অবমুক্ত হয়। এটি মুক্তিযুদ্ধের একটি অবিস্মরনীয় ঘটনা। এই আক্রমনে পাক সেনারা অনেক যন্ত্রপাতি ফেলে পালিয়ে যায় এবং অনেকে মৃত্যুবরণ করেন।

৩০ এপ্রিল’৭১  দুপুরের দিকে ঢাকা থেকে পালিয়ে জনাব তাজউদ্দিন আহমেদ (পরবর্তীতে অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী) মাগুরা, ঝিনাইদহ হয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌছেন। তখন ডাঃ আসাবুল হক ও অন্যান্য সংগ্রাম পরিষদের সদস্যদের সাথে প্রতিরোধ যুদ্ধ নিয়ে কথাবাত্রা হয়। তিনি চুয়াডাঙ্গার শক্ত ঘাটি এবং বৃহৎ মুক্ত অঞ্চল দেখে অভিভুত হন। তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে উপদেশ দিয়ে যান যে, এই মুক্ত অঞ্চলেই অস্থায়ী সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে, আপনি ব্যবস্থা করুন। তাজউদ্দিন সাহেব চুয়াডাঙ্গা থেকে জীবননগার চ্যাংখালী বর্ডার হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম। তিনি ভারতে গিয়ে অন্যান্য এমপি, এমএনএ এর সঙ্গে পরামর্শ করে ১০ এপ্রিল’৭১ একটি অস্থায়ী সরকার গঠন করেন এবং ১৪ এপ্রিল’৭১ চুয়াডাঙ্গায় শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে।

ডাঃ আসহাব-উল-হক চুয়াডাঙ্গায় নবনির্মিত আধুনিক হসপিটালে শপথ গ্রহন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। ইতিমধ্যে পাক হানাদার বাহিনী চুয়াডাঙ্গার শক্ত অবস্থানের কথা বুঝতে পেরে ৩ এপ্রিল’৭১ সকাল ১০:৩০ মিনিটের দিকে পাকিস্তানের দুটি মিরেজ যুদ্ধবিমান চুয়াডাঙ্গা শহরের উপর দিয়ে পাক দিতে থাকে এবং চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশন, ই.পি.আর ক্যাম্প (বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন) কাঁচা পাকা ঘর ও অন্যান্য স্থানে ব্যপক বোমরা হামলা করে, ফলে অনেক জায়গায় আগুন লেগে যায়। এটিই ছিল মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের উপর প্রথম বোমা হামলা। এই কথাটি না বললেই নয় যুদ্ধ বিমান দুটি যখন আকাশে ঘুরতে থাকে তখন আমার বাসা ছিল কলেজের সন্নিকটে হাসপাতাল রোডে। বাসার উপরে টিনের চালা ছিল। আমার কাছে ছিল একটি বন্দুক, বন্দুকটি আমার ভাই ছিলেন তখন পুলশের সার্কেল ইন্সপেক্টর। যুদ্ধ শুরু হলে তার কাছ থেকে বন্দুকটি নিয়ে ছিলাম। যুদ্দ বিমান দুটি ড্রাইভ দিয়ে আমার বাসার সন্নিকোটে আসে তখন আমি ঐ বন্দুক দিয়ে কয়েক রাউন্ড ফায়ার দিই। কয়েক রাউন্ড ফায়ার দেওয়ায় দেখা গেল বিমানতো পড়লোই না। বরং বিমান থেকে মেশিনগানের সাহায্যে আমার বাসার উপরে গুলি পড়তে শুরু করল, আমি তখন আমার সন্তান পরিবার নিয়ে পাশের আমবাগানে আশ্রয় নিই। আমার সঙ্গে ছিলেন অর্থনীতির অধ্যাপক মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন এবং একজন নাপিত, নামটি মনে আসছে না।

১৪ এপ্রিল’৭১ র শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান চুয়াডাঙ্গাতে হওয়ার কথা কিন্তু নিরাপত্তজনীত কারণ ভেবে প্রধান অধিনায়ক মেজর আবু ওসমান চৌধুরী, যুদ্ধকালীন সময় থাকতেন পুরাতন জেলখানার পশ্চিমে ডিস্ট্রিক বোর্ডের ডাকবাংলায়। ডাকবাংলার সম্মুখে এন্টিএ্যায়ারক্র্যাপ্ট গান ফিট করা থাকত। একই সঙ্গে ডাঃ আসাবুল হক ও অন্যান্য মুক্তিসেনাদের নিয়ে ১৪ এপ্রিল’৭১ ভোরে গাড়ি বহরসহ মেহেরপুরের দিকে অগ্রসর হন। বলে রাখা ভালো শহরের বাড়িঘর থেকে আগেই স্ব-স্ব পরিবার বর্গকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরীত হয়েছিল। মোটামুটি শহর ফাকা ছিল। এমতাবস্থায় শেষাব্দি মেহেরপুরের ভারত বর্ডার সংলগ্ন বৈদ্যনাথবাবুর আমরুকাণনে শপথ বাক্য পাঠের ব্যবস্থা করা হয় এবং সেখানেই ১৭ এপ্রিল’৭১ মুক্তিযুদ্ধের অস্থায়ী সরকার শপথ বাক্য পাঠ করেন। তখন থেকে ঐ জায়গার নাম করণ হয় মুজিবনগর। দক্ষিণ-পশ্চিম রণাঙ্গনের মুক্তিযুদ্ধের কৃতিত্ব ছিল চুয়াডাঙ্গার। মুক্তিযুদ্ধের আর একটি স্মৃতিবিজরীত স্থান হলো শ্রীমন্ত টাউনহল। এখানে যুদ্ধের প্রথম পর্যায়ে আনসার, মুজাহিদ, স্বেচ্ছাসেবি, ছাত্রজনাত আশ্রয় নিত এবং এখানে খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা থাকত। সেই স্মৃতিঘেরা টাউনহলটি আর নেই সেখানে এখন পৌর টাউন হল নির্মিত হয়েছে। শ্রীমন্ত টাউন হলটি মহাকুমা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রনে ছিল। যতদূর জানাযায়, ১০০ বছর আগে চুয়াডাঙ্গার মহাকুমা প্রশাসক শ্রীমন্তবাবুর নেতৃত্বে এই হলটি নির্মিত হয়েছে এবং তাঁরই নামানুসারে এই হলটি নামকরণ শ্রীমন্ত টাউল হল বলা হয়। পাশাপাশি ব্যক্তিপর্যায়ে আবুল হোসেন স্মৃতি পাঠাগার নামে একটি প্রতিষ্ঠান ছিল। বর্তমানে সেটিও নেই। কিন্তু চুয়াডাঙ্গা জেলা নাগরিক সমাজ এই দুইটি স্থাপনা ফেরত পাওয়ার দাবি রাখে।

৫ আগস্ট’৭১ আরেকটি স্মরনীয় দিন। এই দিনটিকে চুয়াডাঙ্গাবাসী স্থানীয় শহীদ দিবস হিসাবে প্রতিবছর গুরুত্বসহকারে পালন করে। এই দিনে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার বাগোয়ান-রতনপুর গ্রামে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের একসমূহ যুদ্ধ হয়, তাতে ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে ০৮জন শহীদ হন এবং বাকীরা আহতাবস্থায় পিছু হটতে বাধ্য হয়। এই শহীদ ০৮ জনের লাশ জগন্নাথপুর মাঠে এনে হানাদার বাহিনী দুটি গর্তে চার জন করে মাটি চাপা দেয়। স্বাধীনতার পর ঐ গণকবরের ওপর একটি স্মৃতিশোধ নির্মিত হয়। এটি আট কবর নামে পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধে চুয়াডাঙ্গার অবদান ছিল অনেক। এখান থেকেই স্বাধীন বাংলার ট্রেন-টেলিকম প্রথম চালু হয়। এই চুয়াডাঙ্গাতেই প্রথম রেড-ক্রস, পরে সেটি রেড ক্রিসেন্ট নামে পরিবর্তীত হয়। এর সভাপতি ছিলেন ডাঃ আসাবুল হক এবং মহাসচিব ছিলেন তাদানিন্তন মেডিকেল অফিসার ডাঃ করেশী। এছাড়াও রাষ্ট্রীয় সীলমহোর  এনএনসাহ কর্তৃক নির্মিত হয়। চুয়াডাঙ্গা ছিল মুক্তিযুদ্ধের অস্থায়ী রাজধানী। এখান থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাজধানী নামে একটি পত্রিকা বের হতো। এতো গৌরবউজ্জল ইতিহাস থাকা সত্তেও চুয়াডাঙ্গাবাসী এর কোন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাইনি। এটি খুবই দুঃখ জনক।

৭ ডিসেম্বর মুক্ত দিবস সম্পর্কে লিখতে গিয়ে একটু পিছনে চলে গিয়েছিলাম, যা আমার সবই দেখা এবং অংশগ্রহনমূলক। আগের দিন ৬ ডিসেম্বর’৭১ মুক্তিবাহিনী সন্ধার মধ্যে তিন দিক থেকে চুয়াডাঙ্গা ঘিরে ফেলে। পাক হানাদার বাহীনি সেটা বুঝতে পেরে মাথাভাঙ্গা ব্রিজের একপাশে বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়ে যোগযোগ বিচ্ছিন্ন করে। অতঃপর ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে রাত্রেই হানাদার বাহিনীর অফিসাররা নিজ নিজ জীপগাড়ী নিয়ে চুয়াডাঙ্গা ছেড়ে আলমডাঙ্গা হয়ে কুষ্টিয়ার দিকে চলে যায়। সঙ্গে সঙ্গে সেনারাও পালিয়ে যায়। পাক-বাহিনী শহরে দুটি স্থাপনায় থাকতেন, একটি সরকারি কলেজ এবং অন্যটি সদর হাসপাতাল। হাসপাতাল ত্যাগের সময় সেখানকার গচ্ছিত গোলাবারুদ ও খাদ্যে আগুন লাগিয়ে দেয়, সে আগুন কয়েকদিন ধরে পুড়তে থাকে। ৭ ডিসেম্বর ভোরের মধ্যেই পাক হানাদার মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশে, প্রথম অস্থায়ী রাজধানীর পবিত্র ভূমিতে মুক্তিসেনারা প্রবেশ করে, লাল সবুজের পতাকা উত্তোলন করেন এবং থানা, ট্রেজারি, ব্যাংক, রেলস্টেশন, খাদ্যগুদাম, হাসপাতালসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখলে নেয়। তারপর থেকে প্রশাসনিক কাজ শুরু হয়।

লেখক অধ্যাপক সিদ্দীকুর রহমান

সাবেক অধ্যক্ষ

চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ও দর্শনা সরকারি কলেজ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *