স্টাফ রিপোর্টার:
চুয়াডাঙ্গায় কৃষকদের সঙ্গে প্রতারণা করে নকল ভুট্টাবীজ বিক্রির অভিযোগে প্রতারকচক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে সদর থানা পুলিশ। গতকাল সোমবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা শহরতলীর কুলচারা এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় তিন বস্তা প্যাকেটজাত ভেজাল ভুট্টাবীজসহ চক্রের মূল হোতা ইমরান হোসেন (৩৫) ও সহযোগী মুজিবুর রহমানকে (৪০) পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
জানা যায়,, দীর্ঘদিন ধরে চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জ বাজারে আসাদুল ট্রেডিং ও নিশাদ এগ্রো সিডস এর প্যাকেট ব্যবহার করে নকল বীজ তৈরির করছিল। আসল কোম্পানির মোড়কের বীজ সরিয়ে ফেলে, তার জায়গায় সস্তা ফিড ভুট্টা লাল রং করে ভরে কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছিল।
বীজ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিক আসাদুল হক বলেন, একজন চাষী ফসল না ওঠার অভিযোগ করলে বিষয়টি নিয়ে আমি অনুসন্ধান শুরু করি। পরে জানতে পারি, আমাদের আসল মোড়ক কেটে বীজ বের করে ফেলে বাজার থেকে কেনা ভুট্টা ঢোকানো হচ্ছে। যেখানে একটি কেজি বীজের দাম ৬০০ টাকা, সেখানে তারা সেই নকল বীজ ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি করেছে। এটি কৃষকদের সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত করার শামিল। এ বিষয়ে সদর থানায় অভিযোগ করি।
চুয়াডাঙ্গা জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার নুরুল ইসলাম বলেন, এ অঞ্চলে আমদানিকৃত উন্নত জাতের ভুট্টাবীজই কৃষকের মূল ভরসা। কিন্তু আটক দুইজনের বক্তব্য থেকে জানা গেছে, তারা ১৫০ কেজিরও বেশি নকল বীজ বিক্রি করেছে—যা কমপক্ষে ৭০/৮০ বিঘা জমিতে রোপণযোগ্য। এতে মাঠের উৎপাদন মারাত্মকভাবে কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এবং শত শত কৃষক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ খালেদুর রহমান বলেন, ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে উদ্ধার করা প্যাকেটগুলো পরীক্ষা করে দেখেছি, সেগুলো অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে কেটে ভিতরের আসল বীজ বের করা হয়েছে। এরপর সাধারণ ফিড ভুট্টা রং করে পুনরায় মোড়কে আটকে দেওয়া হয়েছে। শুধু চুয়াডাঙ্গা নয়, দিনাজপুরসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায়ও কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে এই নকল বীজ পাঠানো হয়েছে বলে তথ্য মিলেছে। ইমরান ও মুজিবুরকে আটক করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।



