স্টাফ রিপোর্টার
চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক নির্বাচন-২০২৬ উপলক্ষ্যে সেক্রেটারী পদে চার প্রার্থীর নির্বাচনি ভাবনা কি ? এ বিষয়ে সোমবার একান্তে কথা হয়। ৪ প্রার্থীর মনের কথা পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে সেক্রেটারী পদে বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মনোনীত প্রার্থী এবং বারের বর্তমান সেক্রেটারী আহসান আলী, জামায়াত ইসলামী সমর্থিত বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিল মনোনীত প্রার্থী আসাদুজ্জামান আসাদ, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের বিদ্রোহী প্রার্থী খন্দকার অহিদুল আলম (মানি খন্দকার) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আনছার আলী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপর সেক্রেটারী প্রার্থী মোসলেম উদ্দিন (২) গত শনিবার নির্বাচনের থেকে সরে দাড়ানোর ঘোষনা দিয়েছেন।
অ্যাড. আহসান আলী চুয়াডাঙ্গা গুলশানপাড়ার মৃত সাবেদ আলীর ছেলে। তিনি রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের আওতায় কুষ্টিয়া আইন মহাবিদ্যালয় থেকে ল’পাশ করেন। এরপর ১৯৯৯ সালের ১৫ মার্চ থেকে চুয়াডাঙ্গা বারে প্র্যাকটিস শুরু করেন। তিনি নির্বাচিত হলে, বারের আইনজীবীদের স্থান সংকুলানের ব্যবস্থা করবেন। আইনজীবীদের বেনোভলেন্ট ফান্ডের স্লাব ও উৎসব ভাতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ গ্রহন করবেন। বার ও বেঞ্চের সাথে সু-সম্পর্ক বজায় রাখা হবে। বিচার প্রার্থীদের বিশ্রামাগার, ওয়াশরুমের ব্যবস্থা ও বসার জায়গার চেষ্টা করা হবে। বিচারালয়ে দালালমুক্ত পরিবেশ গঠনে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহন করা হবে। বার উন্নয়নে যাবতীয় কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
অ্যাড. আসাদুজ্জামান দামুড়হুদার জয়রামপুর ষ্টেশনপাড়ার মৃত ইব্রাহিম হোসেনের ছেলে। বিএ পাশের পর কুষ্টিয়া আইন মহাবিদ্যালয় থেকে এলএলবি পাশ করেন। এরপর ২০০২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি চুয়াডাঙ্গা বারে যোগদান করেন। তিনি নির্বাচিত হলে, আইনজীবী সমিতির সকল সদস্যের স্থান সংকুলানের সু-ব্যবস্থা করবো। বারের অবকাঠামো সমস্যা দূর করার চেষ্টা করবো। আইনজীবী সমিতিতে যেসকল বিচারপ্রার্থী আসেন তাদের বসার স্থান ও ওয়াশরুম নিরসনের জন্য কাজ করবো। আইনজীবী সমিতিতে খাবার পানির সমস্যা আছে। আধুনিক পদ্ধতির পানির ফিল্টারের ব্যবস্থা করা হবে। বার ও বেঞ্চের সাথে সু-সম্পর্ক তৈরীর ক্ষেত্রে সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আইনজীবীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে। বিচারক সংকট মোকাবেলার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হবে। সকল দলমতের উর্ধ্বে উঠে তরুণ আইনজীবীদেরকে প্র্যাকটিস এর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় আইনী সহায়তা প্রদানসহ পারষ্পারিক সুসম্পর্ক বৃদ্ধির সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।
অ্যাড. খন্দকার অহিদুল আলম (মানি খন্দকার) চুয়াডাঙ্গা সবুজপাড়ার খন্দকার নাযীমুল কাদিরের ছেলে। তিনি খুলনা বিএল কলেজ থেকে বিএসএস (অনার্স) এমএসএস (মার্স্টাস) অর্থনীতি পাশ করে খুলনা সিটি ল’কলেজ থেকে এলএলবি পাশ করেন। এরপর ২০০৪ সালের ৩০ জুন চুয়াডাঙ্গা বারে প্র্যাকটিসে যোগদান করেন। তিনি তিনবারের বারের যুগ্ম-সম্পাদক ছিলেন। নির্বাচিত হলে, আদালত সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহে ঘুষ ও দুর্নীতি দূর করা হবে। আসামির জামিনের বেলবন্ড দাখিলে হয়রানি বন্ধ করা হবে। বারকে সিসি ক্যামেরা ও ইন্টারনেট এবং সাউন্ড সিস্টেমের আওতায় আনা হবে। সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়ার ক্ষেত্রে বৃহত্তর কুষ্টিয়া জেলার আইনজীবী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রতিয়োগিতার আয়োজন করা হবে। আইনজীবীদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আসলে আলোচনার ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করা হবে। বার ও বেঞ্চকে সম্পূর্ণ রাজনীতিমুক্ত রাখা হবে। দলমতের উর্দ্ধে থেকে আইনজীবীদের কল্যানে কাজ করবো। বাৎসরিক ম্যাগাজিন বই বের করা হবে। যার খরচ বার বহন করবে না। আইনজীবীদের জন্য ক্যান্টিন ও কাজের সুবিধার্থে আরও কিছু কম্পিউটার কাম ফটোকপির দোকানের ব্যবস্থা করা হবে।
অ্যাড. আনছার আলী চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হায়দারপুর গ্রামের মৃত রইছ উদ্দিন বিশ^াসের ছেলে। বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা সিনেমা হলপাড়ার বাসিন্দা। তিনি রাজশাহী ল’ কলেজ থেকে এলএলবি পাশ করেন এবং ১৯৮৫ সালের ১০ মার্চ চুয়াডাঙ্গা বারে প্র্যাকটিসে যোগদান করেন। তিনি নির্বাচিত হলে, বারের সদস্যদের স্বার্থ-সংরক্ষণ হয়, সেই চেষ্টা করবো। এছাড়া, আদালত প্রাঙ্গণে ঘুষ, দুর্নীতি ও অসাদারচারণ এসব প্রতিহত করার চেষ্টা করবো। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয় সেই চেষ্টা করবো। দেশের মধ্যে বারের ভাবমূর্তি ১ম শ্রেনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় সেই চেষ্টা করবো। আমার বারের কোন সদস্য বিপদে পড়লে তাকে উদ্ধারে এগিয়ে যাবো। বিচারকদের সাথে কোন বিষয়ে সমস্যা হলে আমি তা দ্রুত নিরসনের চেষ্টা করবো।
প্রসংগত, আগামী ২৯ নভেম্বর শনিবার চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক নির্বাচন-২০২৬ অনুষ্ঠিত হবে। ২০৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।



