দামুড়হুদার জয়রামপুর স্টেশনে সাগরদাঁড়ি ও কপোতাক্ষ ট্রেনের স্টপেজের দাবীতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি

দর্শনা অফিস:

দামুড়হুদা জয়রামপুর রেল স্টেশনে সাগরদাঁড়ি ও কপোতাক্ষ ট্রেনের আপ ডাউন স্টপেজের দাবীতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার বেলা ৪ টার সময় এই মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সাগরদাঁড়ি ও কপোতাক্ষ  দুইটি ট্রেন স্টেশনে আটকা পড়ে। ট্রেন দুটির একটি রাজশাহী থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল এবং অপরটি খুলনা থেকে রাজশাহীর  উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল। মানববন্ধনকারীরা কপোতাক্ষ ট্রেন দেড় ঘন্টা ও সাগরদাঁড়ী ট্রেন জয়রামপুর রেলস্টেশনে আধা ঘন্টা আটকে রাখে।

দামুড়হুদা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী জয়রামপুর রেল স্টেশনে সাগরদাঁড়ি ও কপোতাক্ষ ট্রেনের আপ ডাউন স্টপেজের দাবিতে স্থানীয়রা মানববন্ধন করেছে। তারা সাগরদাঁড়ি ও কপোতাক্ষ ট্রেন যেনো স্টপেজ দেয় সেজন্য শত শত মানুষ জয়রামপুর রেল স্টেশনে বিভিন্ন প্লেকার্ড নিয়ে ট্রেন থামানোর উদ্দেশ্যে অবস্থান নেয়। সংবাদ শুনে দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি হুমায়ূন কবির ও সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থল ছুটে আসেন। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমাদের জয়রামপুর রেল স্টেশন জেলার একটি পুরাতন ও ঐতিহ্যবাহী রেল স্টেশন। রাজশাহী মেডিক্যালসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের যাতায়াতের জন্য এই স্টেশনে যেনো সাগরদাঁড়ি ও কপোতাক্ষ আপ ডাউন ট্রেন থামানো হয়। এখানে স্টপেজের দাবীতে আমরা আজ মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। এই লাইনে প্রথম গেদে থেকে জগতী স্টেশন পর্যন্ত রেল যোগাযোগ চালু হয়। তখন থেকেই এই জয়রামপুর স্টেশন চালু ছিলো। কিন্তু বর্তমানে এই স্টেশনটি প্রায় বন্ধ হবার উপক্রমে আছে, বলতে গেলে এখন জয়রামপুর স্টেশন বন্ধ আছে। আমাদের দাবী এই স্টেশনটি অতি তাড়াতাড়ি যাতে চালু হয় আমরা জনগণ সেই দাবী জানান। কর্মসূচি চলাকালীন সময়ে দুইটি ট্রেনকে স্থানীয়রা থামিয়ে দেন। এসময় সাগরদাঁড়ি ও কপোতাক্ষ দুইটি ট্রেন জয়রামপুর স্টেশনের কাছে এসে থেমে যায়।

সাবেক সেনা সদস্য লাজিব আক্তার সিদ্দিকী বলেন, ঐতিহ্যবাহী জয়রামপুর রেল স্টেশনে আগে স্টেশন মাস্টার ছিল, স্টাফদের থাকার জায়গা ছিল, গেটম্যান ছিল। এখান এখানে আর কিছুই নাই স্টেশনটি বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা চাই স্টেশনটি আবার নতুন করে চালু করা হোক । এখানে যেন আগের মত স্টেশন মাস্টার এবং গেটম্যানসহ সকল বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সুবিবেচনায় দেখবেন এমনটি আশা করেন।

জয়রামপুর মানবকল্যান যুব সংগঠন এর সভাপতি মোঃ মনিরুল ইসলাম মিলন বলেন, ঐতিহ্যবাহী জয়রামপুর রেল স্টেশনে গেট ম্যান না থাকার কারণে বেশ কয়েকটি তাজা প্রাণ-অকালে ঝরে গেছে। এই স্টেশনটিতে স্টেশন মাস্টারসহ কোন লোকজন নেই। কিন্তু এক সময় এই ঐতিহ্যবাহী জয়রামপুর রেল স্টেশনে ৪৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিল। কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে গেছে। ১৮৬২ সালে গেদে থেকে জগতী রেললাইন চালু হয়। তখন থেকেই জয়রামপুর রেল স্টেশন জমজমাট ছিল। এই অঞ্চলে প্রায় দুই লক্ষের অধিক মানুষ এই জয়রামপুর স্টেশন ব্যবহার করতো। এখানে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী জয়রামপুর গুড়েরহাট যেখান থেকে সারা বাংলাদেশে ট্রেনের মাধ্যমে খেজুরের গুড় বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হতো।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *