আলমডাঙ্গা অফিস
অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়েছে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার কুখ্যাত চাঁদাবাজ সিরাজুল ইসলাম (৩৫)। তিনি আলমডাঙ্গার গোবিন্দপুর মাঠপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল রহমানের ছেলে।
আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের অভিযানে গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে তাকে চুয়াডাঙ্গা আদালতে পাঠানো হয়েছে। সিরাজুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে ফোকট বন্ডবিল ও গোবিন্দপুর মাঠপাড়া এলাকাজুড়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। অভিযোগ রয়েছে, সে প্রকাশ্যে দিনে-দুপুরে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করত। শুধু তাই নয়, নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের নাম ভাঙিয়ে ভয়ভীতি দেখাত। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, সিরাজুল কখনো বলত—“তুই আওয়ামী লীগ করিস, টাকা না দিলে তোকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেব।”
আবার কখনো বলত—“তুই টাকা না দিলে তোকে আওয়ামী লীগের দোসর বানিয়ে দেব।”
একজন ভুক্তভোগী বলেন, “সে বলে, ‘আমি চাইলে তোকে এখনই ধরে থানায় নিয়ে যেতে পারি। পুলিশ আমার কথায় উঠে বসে। মামলা দিয়ে তোকে শেষ করে দেব।’”
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সিরাজুল ইসলাম প্রকাশ্যে এক বাড়িওয়ালাকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায়ের চেষ্টা করছে। ভিডিওটি ভাইরাল হতেই এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি ওঠে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা জানান, “সে মাঠপাড়ায় এসে বলে, ‘আমি সিরাজ ভাই, আমার পেছনে বড় বড় নেতা আছে। টাকা না দিলে ভালো হবে না।’ আমরা গরিব মানুষ, বাধ্য হয়ে টাকা দিই।”
এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদুর রহমান পিপিএম বলেন,
“সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওর ভিত্তিতে আমরা তদন্ত শুরু করি। বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, “যে ব্যক্তি প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, পুলিশের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করে, তার বিরুদ্ধে যদি কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের আর কোনো নিরাপত্তা থাকবে না।”
তারা আরও বলেন, শুধুমাত্র সিরাজুলকে গ্রেফতার করলেই হবে না, তার পেছনে থাকা রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পৃষ্ঠপোষকদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।