জীবননগর অফিস
রূপকথার মতো দৃশ্য। নীল আকাশ চিরে গ্রামে অবতরণ করল একটি হেলিকপ্টার, আর সেই হেলিকপ্টার থেকে নামলেন লাল শেরওয়ানিতে সজ্জিত এক বর। ঘটনাটি ঘটেছে জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের কয়া গ্রামে। শুধু পিতার শখ পূরণ আর প্রিয়তমাকে চমকে দেওয়ার জন্যই হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করতে এলেন সৌদি প্রবাসী সাকিব(২৩)।
শাকিব ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের গাড়াপোতা গ্রামের বিল্লাল খানের পুত্র। পিতা পুত্র দুজনেই সৌদি প্রবাসী। তিন ভাই বোনের মধ্যে শাকিব পরিবারের বড় পুত্র। গতকাল শুক্রবার দুপুরে তিনি নিজ গ্রাম থেকে আকাশপথে জীবননগরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন এবং মাত্র ৬ মিনিটেই পৌঁছে যান জীবননগর হাই স্কুল মাঠে তারপর সেখান থেকে প্রাইভেট যোগে পৌঁছে যান কনের বাড়িতে। এদিকে হেলিকপ্টারটি হাই স্কুল মাঠে অবতরণ করতেই মুহূর্তে ভিড় জমে যায়। মাঠ যেন উৎসবস্থলে পরিণত হয়। শিশু, বৃদ্ধ, নারী সবার হাতে মোবাইল, কেউ ভিডিও করছেন, কেউ সেলফি তুলছেন। কনের বাড়ির পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয় বরকে।
বর শাকিব জানান, ছোটবেলা থেকে আমার বাবার স্বপ্ন ছিল হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করব। আল্লাহর রহমতে সেই স্বপ্ন আজ বাস্তবে রূপ নিল। দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে পিতা -পুত্র বসবাস করছেন। সেখানে তাদের নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
কনে আসমা খাতুন(১৯) জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের কয়া গ্রামের ইব্রাহিম খলিলের কন্যা। তিনি মাদ্রাসায় মাওলানা বিষয়ে পড়াশোনা করছিলেন।
এদিকে কনের পিতা ইব্রাহিম খলিল জানান, আমার কন্যার পাঁচ মাস আগে শাকিবের সাথে বিয়ে হয়। এরপর আমার বেয়াই বিল্লাল খানের স্বপ্ন পূরণের জন্য জামাই হেলিকপ্টারে করে আমার কন্যাকে তুলে নিতে আসলো। আর এতে আজ আমরা অনেক খুশি।
বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে কনেকে সঙ্গে নিয়ে আবার হেলিকপ্টারে চড়ে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন শাকিব। পুরো গ্রামজুড়ে এখনও আলোচনার ঝড়-এই বিয়ে যেন বাস্তবের রূপকথা!