স্টাফ রিপোর্টার
চুয়াডাঙ্গার পৌর এলাকার বেলগাছীতে সোহেল রানা (২৫) নামের এক যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার ভোরের দিকে বেলগাছী গ্রামের খরার মাঠে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে। পরে বেলগাছি এলাকা থেকে চুয়াডাঙ্গা ডিবি পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে এ হত্যাকাণ্ডের মূল ঘাতক ফারুককে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। নিহত সোহেল চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বেলগাছীর বকচরপাড়ার আসাবুল হকের ছেলে। অভিযুক্ত ফারুক (৪০) চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বেলগাছি জোয়ার্দ্দার পাড়ার তাহের উদ্দিনের ছেলে।
জানা যায়, বেলগাছী গ্রামের সোহেল কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। মাঠে চাষাবাদ সহ খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা ছিল তার কাজ। গত সোমবার বিকেল চারটার দিকে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। সারারাত মাঠেই রাত্রীযাপন করেছেন বলে স্থানীয়দের দাবি। তার বাবা আসাবুল ও বড়ভাই জুয়েল রানা ভোরে মাঠে গেলে তাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। পরে স্থানীয়দের খবর দিলে তারা সদর থানা পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশটি উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা বলেন, ব্যক্তিগত শত্রুতা ও পূর্ব বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে তদন্তেই প্রকৃত কারণ উদঘাটন হবে বলে মনে করছেন তারা। নিহতের বাবা আসাবুল হক বলেন, বেলগাছি জোয়ার্দার পাড়ার মৃত তাহের উদ্দিনের ছেলে ফারুকের সঙ্গে এক সপ্তাহ আগে পেয়ারা বাগানের একটি পেয়ারা গাছের ডাল ভাঙ্গা ও পেয়ারা খাওয়া নিয়ে সোহেলের সঙ্গে দ্বন্দ্ব হয়। গত এক সপ্তাহ আগে ফারুক ও তার সহযোগীরা সোহেলকে হত্যার হুমকি দেয়। এরই জের ধরে ফারুক তার ছেলেকে হত্যা করেছে বলে তিনি দাবী করেন।
নিহত সোহেলের ফুফু মমতাজ বেগম বলেন, সোহেল খুবই নরম স্বভাবের ছিল। কারো সাথে কোন ঝগড়া-বিবাদে জড়াতো না। তবে কিছুদিন আগে স্থানীয় মৃত তাহের উদ্দিনের ছেলে ফারুকের সাথে পেয়ারার ডাল ভাঙ্গা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। সপ্তাহখানেক আগে সোহেলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখমও করেছিল ফারুক। তারই জের ধরে হয়তো ফারুক তাকে গলা কেটে হত্যা করেছে। সোহেলের একটি ছয় বছরের মেয়েও আছে। সেই ছোট্ট মেয়েটি এই অল্প বয়সেই পিতৃহারা হয়ে গেল। আমরা এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই।
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার( ক্রাইম এন্ড অপস) জামাল আল নাসের জানান, বেলগাছীতে সোহেল নামের এক যুবক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করা হয়েছে । আমরা মূল ঘাতক ফারুককে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে। হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।
চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, চুয়াডাঙ্গার বেলগাছিতে এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আমরা জেনেছি নিহত সোহেল রাতে খেজুর গাছের রস পাহারার জন্য এসেছিল। পূর্ব শত্রুতার জেরে দুর্বৃত্তরা তাকে গলা কেটে হত্যা করেছে। লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী বিস্তারিত জানা যাবে। তবে হত্যাকাণ্ডের সাথে যেই জড়িত থাকুক আমরা তাকে গ্রেফতার করবো এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করব।



