স্টাফ রিপোর্টার
চুয়াডাঙ্গায় ৭ দফা দাবিতে জেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির উদ্যোগে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে। বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চুয়াডাঙ্গা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে জেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির পক্ষ থেকে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধন শেষে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেনের মাধ্যমে স্মারকলিপি পেশ করা হয়।
এ সময় চুয়াডাঙ্গা জেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন- চুয়াডাঙ্গা জেলা ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি খাঁজা নাসির উদ্দিন শান্তি, সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুল মোতালেব, কোষাধ্যক্ষ আবেদুদ্দোজা কেবল, নির্বাহী সদস্য আসিরুল ইসলাম সেলিম, আবুল হোসেন, হায়দার আলী, হেলাল উদ্দিন, আজিম খান, শাহজান আলী, জাবালুল বাশার সেলিম বিশ্বাস প্রমুখ।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে সংগঠনটির সভাপতি খাঁজা নাসির উদ্দিন শান্তি বলেন, আমরা বাংলাদেশের ইটভাটা মালিকগণ বিগত ৩৫/৪০ বৎসর যাবৎ অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে ইটভাটার ব্যবসা পরিচালনা করিয়া আসছি। দেশের রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ীসহ সকল অবকাঠামো নির্মাণে ব্যবহৃত ইট সরবরাহ করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখেছি। দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সমতা রেখে আমরা ইটভাটার মালিকগণ বায়ুদূষণ রোধে সরকার নির্দেশিত আধুনিক প্রযুক্তির ‘জিগজাগ’ ভাটা স্থাপন করি যাহা জ্বালানী সাশ্রয়ী, পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি ও উপমহাদেশে টেকসই এবং সহজ প্রযুক্তি হিসাবে পরিচিত। আমরা সাত দফা দাবি আকারে উল্লেখ করেছি।
দাবিগুলো হলো; ১। ২০১৩ সনের ইটভাটা নিয়ন্ত্রন আইনের জিগজাগ ভাটা বৈধ পদ্ধতির উল্লেখ থাকলেও উক্ত আইনের ৮(৩)(ঙ) এবং ৮ (৩) (খ) উপ-ধারায় “দুরত্ব নির্দিষ্ট” করনের কারণে দেশের কিছু জিগজাগ ইটভাটার মালিকগণ ছাড়পত্র ও লাইসেন্স পাচ্ছেন না। ইতোমধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর হাইব্রিড কিলন এবং ট্যানেল কিলন এর ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ এলাকার দুরত্ব ১০০০ মিটারের পরিবর্তে ৪০০ মিটার নির্ধারণ করেছে সুতরাং আমাদের জিগজ্যাগ ভাটার জন্য উক্ত আইনের ৮ (৩) (ঙ) ধারায় নিষিদ্ধ এলাকার দুরত্ব ৪০০ মিটার এবং আইনের ৮ (৩) (খ) এ বনের দূরত্ব ৭০০ মিটার করে লাইসেন্স ও ছাড়পত্র পাওয়ার জন্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিপত্র জারীর মাধ্যমে পরিচালনা করার সুযোগ প্রদানের আবেদন জানাচ্ছি। ২। জিগজাগ ইটভাটায় কোন প্রকার হযরানী বা মোবাইল কোর্ট করা যাবে না, তাহা না হলে আমরা ভ্যাট টেক্স দেয়া বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবো ৩। কোন ইটভাটা বন্ধ করতে হলে সরকারী ভাবে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়ে বন্ধ করতে হবে ৪। মাটি কাটার জন্য ডিসির প্রত্যয়নপত্র নেয়ার বিধান বাতিল করতে হবে ৫। পরিবেশগত ছাড়পত্র, ডি.সি লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিস লাইসেন্স, ট্রেড লাইসেন্সসহ অন্যান্য কাগজপত্রাদি ইস্যু/নবায়নের সময় কেন্দ্রীয় ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির প্রত্যয়নপত্র বাধ্যতামূলক ভাবে জমা দেয়ার বিধান করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ করছি। ৬। ইটভাটাকে শিল্প হিসাবে ঘোষণা দেয়ার দাবী করছি ও ৭। ইটভাটা পরিচালনায় দীর্ঘ মেয়াদী পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
সংগঠনদের সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুল মোতালেব সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়ে বলেন, আমরা যারা ইট ভাটার ব্যবসা করছি আমাদেরকে ৩ বছর সময় দিতে হবে। যাতে এ সময়ের মধ্যে আমরা সরকারী নিয়মের মধ্যে ইটভাটা তৈরী করতে পারি। উপরোক্ত দাবীসমূহ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে আলোচনায় না বসলে পবিত্র ঈদের পরে ঢাকায় মহাসমাবেশ এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্য্যালয় পদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।



