স্টাফ রিপোর্টার
চুয়াডাঙ্গার নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেনের সাথে জেলার সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বেলা ৩টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভার শুরুতেই জেলার সাংবাদিকদের সাথে পরিচিতি হোন নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন। এরপর জেলা প্রশাসকের কাছে সাংবাদিকরা জেলার অবকাঠামগত বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।
আসন্ন ত্রয়োদশ নির্বাচনে উদাহরণ হিসেবে অবাধ নির্বাচনের প্রত্যাশা রেখে দাবি উঠান সাংবাদিকরা। সরকারিভাবে কৃষকদের কাছ থেকে সচ্ছতার সাথে ও সঠিক দামে ধান কিনতে পারে জেলার সরকারি খাদ্য গুদাম এ ব্যাপারে সভায় বলা হয়।
এ সময় পুর্বের মৌসুমে জীবননগর উপজেলার খাদ্য গুদাম অফিসে ধান চাল সংগ্রহে ব্যাপক অনিনিয়মের চিত্র তুলে ধরা হয়। এই অনিয়ম সিন্ডিকেট ভাঙার দাবি জানান গণমাধ্যম কর্মীরা। যানজট নিরসন ও রোগীদের সুবিধার্থে সদর হাসপাতালের সড়কটি একমুখী সড়ক করার দাবি জানানো হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলায় প্রবেশমুখে একটি ওয়েলকাম গেইট স্থাপনের জন্য দাবি জানান জেলার গণমাধ্যম কর্মীরা। চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য নবাগত জেলা প্রশাসককে সভায় অবগত করা হয়। অনলাইন জুয়া ও মাদকের উপদ্রব কমানোর জন্য আইনি পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে মনে করেন তারা। চুয়াডাঙ্গা শহরের ফুটপাত দখলমুক্ত করার আহ্বান জানানো হয় এ সভা থেকে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, আমি প্রথম জেলা প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছি। এই জেলাকে চিনতে এবং জানতে সাংবাদিকদের সহায়তা প্রয়োজন। চুয়াডাঙ্গার প্রধান নদী মাথাভাঙ্গা দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে আমরা বদ্ধ পরিকর। পরবর্তীতে কেউ যদি মাথাভাঙ্গা নদী দুষণ ও দখল করে তাহলে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। সামনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বিগত নির্বাচনের তুলনায় এবার ভিন্ন রকম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচন অন্য জাতীয় নির্বাচন থেকে একটু ভিন্ন। আসন্ন নির্বাচনে দুটি ব্যালট থাকবে। একটি গণভোটের ব্যালট ও অন্যটি সংসদ নির্বাচনের ব্যালট। এবারই প্রথম নির্বাচনে প্রবাসী ও সরকারী কর্মচারীরা ভোট দানের সুযোগ পাবে। আমরা এমন একটি নির্বাচন উপহার দিতে চাই, যেটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সবাইকে উপহার দেবো এটি আমার ওয়াদা। জনমনে জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কে পজিটিভ ধারণা দিতে সকল সাংবাদিকের সহায়তা প্রয়োজন।
তিনি আরোও বলেন, সদর হাসপাতালে চিকিৎসায় নিতে আসা রোগীদের যাতে দুর্ভোগ না হয় সেব্যাপারে খেয়াল রাখা হবে। ধান চাল সংগ্রহ অনিয়মে জড়িতদের ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলার কোচিং সেন্টার বাণিজ্য শেষ করা হবে। চুয়াডাঙ্গার বড় বাজার চত্বরের দখলমুক্ত ও যানজট নিরসন করা হবে। চুয়াডাঙ্গার যেকোন উন্নয়নমুলক কাজ দায়িত্বের সাথে করতে হবে। জেলায় চলমান যে প্রকল্পগুলো আছে তা সম্পন্ন করা হবে। সবার সহযোগীতাই নতুন ভাবে চুয়াডাঙ্গা গড়তে চাই। এ জন্য সবাই সবার জায়গা থেকে চেষ্টা করতে হবে। সবাই পাশে থেকে সাহস দিলে কাজ করতে ভয় লাগবে না। একটা একটা করে চুয়াডাঙ্গার সব সমস্যার সমাধান হবে।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক সরদার আল-আমীন, দৈনিক আজকের খাসখবরের প্রধান সম্পাদক ও চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজিব হাসান কচি, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক আজকের চুয়াডাঙ্গা পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক বিপুল আশরাফ, দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপন, সিনিয়র সাংবাদিক শেখ সেলিম, মানিক আকবর, আমার দেশ পত্রিকার প্রতিনিধি মফিজ জোয়ার্দার, সাংবাদিক আবুল হাশেম, রফিকুল ইসলাম, মেহেরাব্বিন সানভী, সাংবাদিক রিফাত রহমান, রেজাউল করিম লিটন, হুছাইন মালিক প্রমুখ।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নয়ন কুমার রাজবংশীর সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক শারমিন আক্তার, সহকারী কমিশনার এস এম আব্দুর রউফ শিবলু, আবদুল্লাহ আল নাঈম, স্থানীয় দৈনিক পশ্চিমাঞ্চল পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আজাদ মালিতা, দৈনিক প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি শাহ আলম সনি প্রমুখ।



