তারেক রহমানের সাথে বৈঠক শেষে নিজ এলাকায় ফিরে আবেগঘন সংবর্ধনা পেলেন বিএনপি নেতা শরীফ

স্টাফ রিপোর্টার
বিএনপি চেয়ারপারর্সনের গুলশান অফিসে ভার্চুয়ালী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যন তারেক রহমানের সাথে বৈঠক শেষে চুয়াডাঙ্গায় ফিরে শত-শত নেতাকর্মীর ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো: শরীফুজ্জামান শরীফ। বুধবার বিকেল চারটায় ঢাকা থেকে বড় বাজার চৌরাস্তার মোড়ে শহীদ হাসান চত্বরে মো: শরীফুজ্জামান শরীফের পৌঁছানোর পর নেতা-কর্মীদের মধ্যে এক নজিরবিহীন উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়, যা মুহূর্তের মধ্যে এক বিশাল সংবর্ধনা জনসমাবেশে রূপ নেয়। মূলত বিএনপি নেতা শরীফের আসার খবর ছড়িয়ে পড়লে জেলা, পৌর এবং সদর উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, সেচ্ছাসেবক দলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শত শত নেতা-কর্মী তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে সমবেত হন। নেতা-কর্মীরা সুদৃশ্য পুষ্পস্তবক এবং ফুলের মালা দিয়ে তাঁদের প্রিয় নেতাকে উষ্ণ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
এসময় আবেগঘন পরিবেশে ‘ধানের শীষের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ’ এবং ‘তারেক রহমানের নির্দেশ মেনে চলার’ অঙ্গীকার সংবলিত শ্লোগান ধ্বনিতে পুরো এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে। নেতা-কর্মীদের এই স্বতঃস্ফূর্ত ভিড় এবং আবেগ ছিল চোখে পড়ার মতো। সাধারণ মানুষও তাদের অভিভাবকতুল্য নেতাকে দেখতে রাস্তার দুই পাশে ভিড় করেন। জনস্রোত সামাল দিতে স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে বেশ বেগ পেতে হয়। সংবর্ধনা পর্ব শেষে নেতা-কর্মীরা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো: শরীফুজ্জামান শরীফকে নিয়ে পায়ে হেঁটে এক বিশাল মিছিল সহকারে তাঁর বাড়ির দিকে রওনা হন এবং মিছিলটি বিএনপি নেতা মো: শরীফুজ্জামান শরীফের পুরাতন হাসপাতাল রোডের বাড়িতে গিয়ে শেষ হয়।
এদিনের সংবর্ধনা এবং মিছিলের আয়োজন চুয়াডাঙ্গা বিএনপিতে এক নতুন সাংগঠনিক ঐক্যের বার্তা দিয়েছে। দলীয় নেতারা মনে করছেন, তারেক রহমানের ঐক্যের আহ্বানে সাড়া দিয়ে চুয়াডাঙ্গার নেতা-কর্মীরা ধানের শীষের বিজয়ের জন্য এখন একাট্টা। মো: শরীফুজ্জামান শরীফ উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে আগামী দিনে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চূড়ান্ত সংগ্রামে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমার চুয়াডাঙ্গার সংগ্রামী নেতা-কর্মীরা! আপনাদের এই অভূতপূর্ব সংবর্ধনা আমার চোখ খুলে দিয়েছে। আমি ঢাকা থেকে ফিরে যা দেখছি, তা হলো চুয়াডাঙ্গার মানুষ আর বিএনপি এখন এক সুতোয় গাঁথা। আমাদের নেতার নির্দেশ হলো—এখন আর পিছিয়ে থাকার সময় নেই! আমাদের মাঠ গুছিয়ে রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আপনারা এখন থেকেই ঘরে ঘরে যান, প্রতিটি ভোটারকে অনুপ্রাণিত করুন! আপনারা মাঠ গোছান! আপনারা বিজয় সুনিশ্চিত করুন! আমি আপনাদের সঙ্গে ছিলাম, আছি, এবং চূড়ান্ত লড়াইয়েও আপনাদের সঙ্গেই থাকব, ইনশাআল্লাহ। আপনারা জানেন, বিএনপি সব সময় শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয়, এটি হলো শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে গড়া জনগণের দল। আমাদের গঠনতন্ত্রের মূল কথাই হলো—মানুষের দুঃসময়ে পাশে থাকা, এটাই আমাদের নৈতিক ও মানবিক দায়িত্ব। আপনারা এই দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে দেখেছেন, এই দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছিল, মানুষের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। সেই ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে আপনাদের আন্দোলনের ফসল হিসেবে। এই নির্বাচন আমাদের ১০ দফা আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ—জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রাম।
তিনি বলেন, আমরা কেবল ক্ষমতায় যেতে চাই না, আমরা রাষ্ট্রের কাঠামো মেরামত করতে চাই। তাই ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কার রূপরেখা হলো আমাদের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা। এই রূপরেখা বাস্তবায়িত হলে দেশের কৃষক, শ্রমিক, ব্যবসায়ী—সব শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের জীবনের পরিবর্তনের বাস্তব প্রতিফলন দেখতে পাবেন। ৩১ দফায় অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন গঠন করে সিন্ডিকেট ভাঙা হবে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে এবং তরুণ প্রজন্মের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গায় পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি, সিনিয়র সহ-সভাপতি রাফিতুল্লাহ মহলদার, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান লিপটন, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক পল্টু, সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হাফিজুর রহমান মুক্ত, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল মালিক সুজন, জেলা জাসাস এর সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহেদ মোহাম্মদ রাজিব খান, জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি তৌফিকুজ্জামান তৌফিক, জেলা যুবদলের যুগ্ন সম্পাদক ও স্বর্নশিল্প শ্রমিক ইউনিয়ন এর সাধারন সম্পাদক আমের হুছাইন আমির, জেলা যুবদলের সহ-সাধারন সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক জুয়েল মাহমুদ,সহ-সভাপতি খন্দকার আরিফ, যুগ্ম সম্পাদক নাইম আহমদ,জেলা ওলামা দলের সদস্য সচিব হাফেজ মওলানা মাহাবুল হক, সদর উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মতিউর রহমান মিশর, সদস্য সচিব মহলদার ইমরান রিন্টু, যুগ্ম আহবায়ক রায়হানুল কাজল, হাফিজুর রহমান হ্যাপি, পৌর ছাত্রদলের আহবায়ক মাজেদুল আলম মেহেদী, সদস্য সচিব কৌশিক আহমেদ রানা, সদর উপজেলা ওলামা দলের সভাপতি শরীফুজ্জামান সুমন, চুয়াডাঙ্গা পৌর ও সদর উপজেলার সকল ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ অঙ্গসংগঠন ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *