স্টাফ রিপোর্টার
বাংলা ঋতু অনুযায়ী এখন চলছে শরৎকাল। আজ সোমবার আশ্বিন মাসের ২৮ তারিখ। কার্তিক মাস ও অগ্রহায়ণ মাস মিলে হেমন্তকাল। এই সময়ে প্রকৃতিতে ধীরে ধীরে শীতের আগমন ঘটে, বিশেষ করে সকাল ও সন্ধ্যায় কুয়াশা এবং হিমেল বাতাস অনুভূত হয়।
আবহাওয়াবিদদের মতে, অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাব কমে যাবে, দ্বিতীয় সাপ্তাহ থেকেই মৌসুমি বায়ু দেশের রংপুর ও রাজশাহী অঞ্চল থেকে বিদায় নেওয়া শুরু করবে।
এদিকে, দেশজুড়ে বৃষ্টিপাত কমেছে। মৌসুমি বায়ুর প্রবণতা কমে আসায় শীতল আবহাওয়া বিরাজ করছে। সেই সঙ্গে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদও নেমে এসেছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণপশ্চিম মৌসুমি বায়ু দেশ থেকে বিদায় নিতে পারে। এ অবস্থায় ফের টানা ৫ দিন দেশের ৩ বিভাগে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম জানিয়েছেন, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। এতে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণপশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিতে পারে।
আবহাওয়াবিদদের ভাষ্য, মৌসুমি বায়ু বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে শুষ্ক উত্তর–পূর্ব বায়ু প্রবাহিত হওয়ায় আকাশ পরিষ্কার থাকে, বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কমে আসে এবং দিন–রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য বাড়ে। যা শীত মৌসুমের সূচনার ইঙ্গিত দেয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাংলাদেশে জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দক্ষিণ–পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকে। এটি সমুদ্র থেকে স্থলভাগে আর্দ্র বায়ু বয়ে আনে, ফলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। তবে মৌসুমি বায়ু বিদায়ের পর প্রবাহিত হয় উত্তর–পূর্ব দিকের বায়ু, যা আসে ভারতের হিমালয় অঞ্চলের দিক থেকে। এই বায়ু শুষ্ক ও ঠান্ডা, তাই ধীরে ধীরে দেশের আবহাওয়া শুষ্ক হয়ে ওঠে এবং তাপমাত্রা কমতে শুরু করে।
এ অবস্থায় সোমবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে এই সময়ে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকলেও দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।
এদিকে মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার (১৪–১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এরমধ্যে মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়া বুধবার সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
অন্যদিকে আগামী শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। আর এই সময়েও সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে বর্ধিত ৫ দিনে আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, সাধারণত নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে দেশে শীতের আমেজ আসে। তবে নভেম্বরের শুরু থেকে হালকা শীত অনুভূত হয়। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে দেশের উত্তর ও উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলে রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। এরপর ধীরে ধীরে শীতল তাপমাত্রা ছড়িয়ে পড়বে সারাদেশে।