আজকের চুয়াডাঙ্গা মনিটর
মাদাগাস্কারে প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনার পদত্যাগের দাবিতে টানা তৃতীয় সপ্তাহে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সোমবার রাজধানী আন্তানানারিভোসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।
আন্তানানারিভোতে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। বিক্ষোভকারীদের বড় অংশই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তারা প্রথমে পানি ও বিদ্যুতের ঘাটতির প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করলেও পরে তা সরকারের দুর্নীতি ও ব্যর্থতার বিরুদ্ধে বৃহত্তর বিক্ষোভে রূপ নেয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি দেশটির সবচেয়ে বড় গণআন্দোলন। কেনিয়া ও নেপালের তরুণ প্রজন্মের আন্দোলন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মাদাগাস্কারের তরুণরাও রাস্তায় নেমেছে। ‘জেনারেশন জেড (জেন জি) নামে পরিচিত এই তরুণ আন্দোলনের মাধ্যমে দারিদ্র্য, বৈষম্য ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
মালাগাসি টেলিভিশন স্টেশনগুলো জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় টোলিয়ারা এবং উত্তরাঞ্চলীয় দিয়েগো সুয়ারেজ শহরেও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনা মন্ত্রিসভা ভেঙে দেন, কিন্তু তাতে আন্দোলন থামেনি। এখন বিক্ষোভকারীরা সরাসরি তার পদত্যাগ দাবি করছে।
জাতিসংঘের তথ্যানুযায়ী, বিক্ষোভের প্রথম দিকে অন্তত ২২ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে। তবে সরকার এই তথ্য অস্বীকার করেছে।
শুক্রবার এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনা বলেন, তিনি বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ শোনার জন্য প্রস্তুত, তবে পদত্যাগের কোনো পরিকল্পনা নেই। তার কার্যালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, এই আন্দোলনকে কিছু রাজনৈতিক গোষ্ঠী দেশের স্থিতিশীলতা নষ্টের জন্য ব্যবহার করছে।
রাষ্ট্রপতির দপ্তর জানিয়েছে, শনিবার কয়েকটি বেসরকারি সংগঠন রাজোয়েলিনার সঙ্গে বৈঠক করেছে। তবে অন্য কয়েকটি সংগঠন বৈঠকে অংশ নেয়নি, কারণ তারা চেয়েছিল সরকার বিক্ষোভের নিরাপত্তা ও আটক বিক্ষোভকারীদের মুক্তির নিশ্চয়তা দিক।
বহু খনিজসম্পদ, জীববৈচিত্র্য ও কৃষিজমি থাকা সত্ত্বেও মাদাগাস্কার বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ। স্বাধীনতার পর থেকে দেশটির মাথাপিছু আয় প্রায় ৪৫ শতাংশ কমে গেছে। ৫১ বছর বয়সি প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনার ভবিষ্যৎ এখন ক্রমবর্ধমান জনরোষ ও রাজনৈতিক অস্থিরতার মুখে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।