অনলাইন ডেস্ক
অফিস মানেই কাজের চাপ। একটি শেষ না হতেই যেখানে আরেকটি কাজ এসে উপস্থিত! মাঝে মাঝে এত বেশি কাজ জমে যায় যে, খাওয়ার কথাও মনে থাকে না। অথচ দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকলে শরীর দুর্বল হয়ে উঠতে পারে। এতে শরীরে ভর করে ক্লান্তি। ফলে কাজে মনোযোগ দিতে সমস্যা হতে পারে।তবে, কাজের ফাঁকে ফাঁকে হালকা খাবার খেয়ে নিলে আপনার শরীর ও মন সতেজ থাকবে এবং কাজ করার প্রতি আগ্রহও বাড়বে।
অফিসে কাজের ফাঁকে ঝটপট খেতে পারবেন, এমন কিছু পুষ্টিকর খাবারের কথা বলা হলো। যেসব খাবার মশলাদার আর মুখরোচক সিঙ্গারা-সমুচার পরিবর্তে বেছে নিতে পারেন। আসুন জেনে নিন, সেসব খাবারগুলো সম্পর্কে–
শুকনা ফল ও বীজ
বাড়তি শক্তি ও ক্যালরি জোগাতে ড্রাই ফ্রুট বা শুকনা ফলের জুড়ি নেই। কিশমিশ, শুকনা খেজুর, আখরোট, কাঠবাদাম, চীনাবাদাম পুষ্টিগুণে ভরপুর। এসব ফল পচনশীল নয় এবং সহজেই বহনযোগ্য। তাই চাইলেই ছোট কৌটায় ভরে অফিসে নিজের ডেস্কের পাশে রেখে প্রতিদিন কিছু পরিমাণ করে খেতে পারেন।
এ ছাড়া অফিসে আরও রাখতে পারেন মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টে ভরপুর চিয়া, তিল, সূর্যমুখী ও কুমড়ার বীজ। শুকনা ফল আর বীজ দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে। ফলে অতিভোজন থেকে বিরত থাকা যায়।
আপেল
খাওয়া নিয়ে অনিয়ম করায় অধিকাংশ অফিসগামী কর্মীই অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভুগে থাকেন। উচ্চ ফাইবার ও পানিযুক্ত আপেল এক্ষেত্রে দারুণ ভূমিকা রাখতে পারে। নিয়মিত আপেল খেলে মস্তিষ্কের নিউরনগুলোও কর্মক্ষম থাকে। এতে কাজে মনোযোগ ধরে রাখা সম্ভব হয়। কয়েক টুকরা আপেল খেলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকবে। ডেস্কে তাই সব সময় একটি আপেল রাখা রাখতে পারেন।
ছোলা-মুড়ি
ছোলাতে প্রচুর পরিমাণে ফোলেট এবং ফাইবার আছে, সেই সঙ্গে আছে আমিষ, ট্রিপট্যোফান, কপার, ফসফরাস এবং আয়রন। ছোলার সঙ্গে সবচেয়ে ভালো লাগে মুড়ি মাখিয়ে খেতে। মুড়িতে রয়েছে উচ্চ পরিমাণে শর্করা যা আমাদের শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। কাজের ফাঁকে চট করে খেয়ে নিতে পারেন ছোলা–মুড়ি। এতে পেট লম্বা সময় ধরে ভরা থাকবে। তবে মুড়িতে তেল ও লবণ মেশানো যাবে না। সেদ্ধ ছোলা আর মুড়ির সঙ্গে শসা, কাঁচামরিচ মিশিয়ে খেলে স্বাদ বাড়বে। আর এই পুষ্টিকর খাবার বাসা থেকে নিয়ে আসতে পারেন।
কিশমিশ ও শুকনা খেজুর
কিশমিশ ও খেজুর প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি এবং এতে থাকা ফাইবার, আয়রন ও ভিটামিন শরীরকে সতেজ রাখে। কিশমিশ দ্রুত শক্তি জোগায়, আর খেজুরে থাকা খনিজ উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
বিস্কুট ও চানাচুর
অফিসে ক্ষুধা লাগলে বিস্কুট ও চানাচুর হতে পারে সহজ ও পুষ্টিকর খাবার। হোল-গ্রেইন বা ওটস বিস্কুট দ্রুত খাওয়ার জন্য ভালো এবং এতে প্রচুর ফাইবার থাকে, যা হালকা ক্ষুধা মেটাতে সাহায্য করে। অন্যদিকে, চানাচুর মসলা ও ডাল-ভাজা মিশ্রণে তৈরি, যা স্বাদে বৈচিত্র্য এনে দেয় এবং অল্প পরিমাণে খেলে তৃপ্তি মেলে।
ওটমিল
বর্তমানে ওটস বা ওটমিলের জনপ্রিয়তা অনেক বেড়ে গিয়েছে। কারণ এর স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। যেকোনো খাদ্যশস্যের তুলনায় ওটস খেলে পেট দীর্ঘক্ষণ ভরা থাকে। ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার হওয়ায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে ওটস।
ওটসের সঙ্গে তরল দুধ, কিংবা টক দই, মধু আর পছন্দমতো ফল মিশিয়ে প্রতিদিন অফিসে নিয়ে যেতে পারেন। শুধু হালকা খিদে মেটাতে নয়, যারা ওজন কমাতে চাচ্ছেন, তাঁরা দুপুরেও লাঞ্চ হিসেবে এই আইটেম খেতে পারেন।
সেদ্ধ ডিম
ডিমের অনেক উপকার। ডিম খেলে পেট তো ভরেই, তার সঙ্গে নানারকম পুষ্টিকর উপাদানও শরীরে যাবে। সেদ্ধ ডিম ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই যারা ওজন কমাতে চান, তাঁরা অফিসে খিদে পেলে অনায়াসে ডিমের ওপর নির্ভর করতে পারেন। তাছাড়া এটি এমন একটি খাবার যা দিনের যেকোনো সময় খাওয়া যায়। বাসা থেকে অফিসে ডিম নিয়ে আসাও সহজ। চুলায় ডিম সেদ্ধ হতে বসিয়ে দিয়ে আপনি অনায়াসে অফিসের জন্য প্রস্তুত হয়ে নিতে পারেন।
দই-চিড়া
মুহূর্তেই কাজের ক্লান্তি দূর করে শরীরে সতেজতা এনে দেওয়ার মতো একটি খাবার হলো দই-চিড়া। চিড়া কার্বোহাইড্রেটের অন্যতম উৎস। সারাদিনের কর্মব্যস্ততায় আমাদের শরীরের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ শক্তি সরবরাহ করতে পারে এই চিড়া। আবার দইকে বলা হয় প্রাকৃতিক প্রোবায়োটিক। নিয়মিত দই-চিড়া খেলে বাড়বে হজম প্রক্রিয়া, দূর হবে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা।