গাংনীতে ঘুষের টাকা না দেওয়ায় অফিস সহায়ককে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

মেহেরপুর অফিস

নিয়োগ পরর্বতী জাতীয় করণের পাওনা ঘুষের টাকা না দেওয়ায় হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে না দিয়ে অফিস সহায়ককে বিদ্যালয়ে থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মেহেরপুরের গাংনী সরকারী পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, সরকারি বিধি মোতাবেক ২০১৫ সালের ১২ জুলাই বিদ্যালয়ে এমএলএসএস (পিয়ন) পদে নিয়োগ পত্র পায় হাসানুজ্জামান এবং ১৫ জুলাই ২০১৫ তারিখে তিনি বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। নিয়োগ পত্র দেওয়ার সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুজ্জামান ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা নেন। বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হলে ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর হাসানুজ্জামান অফিস সহায়ক হিসেবে জাতীয়করণভুক্ত হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০১৮ সালের ২১ মে, স্মারক নং- ৩৭,০০,০০০০,০৭১,১৮,০০২.১৭ (অংশ-২)-৬০৪ এবং ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর তারিখের স্মারক নং-৫৭.০০.০০০০.০১.১৫.৬২৮.১৮-২১৩৮ অনুযায়ী এ জাতীয়করণ কার্যকর হয়।

ভুক্তভোগী অফিস সহায়ক হাসানুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন,  বিদ্যালয়ে চাকরিতে যোগদানের সময় প্রধান শিক্ষক আশরাফুজ্জামান আমার কাছে থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা নিয়েছিলো। চাকরি জাতীয়করণের পর থেকেই তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত থাকেন। নানা সময় অপমান, অপদস্ত করেন। গতকার বৃহস্পতিবার সকালে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে গেলে প্রধান শিক্ষক আমাকে স্বাক্ষর করতে দেননি। এই বিদ্যালয়ে চাকরি করতে হলে জাতীয়করণের জন্য ব্যয় বাবদ আমাকে আরও টাকা দিতে হবে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেন। তিনি আরও জানান, বিষয়টি তিনি তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার হোসেনকে মৌখিকভাবে অবগত করেছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক বলেন, প্রধান শিক্ষক আশরাফুজ্জামান দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করে আসছেন। বিগত সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি বিভিন্নভাবে অনিয়ম করে প্রতিষ্ঠনের টাকা লুটপাট করেছে। বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের সময় প্রত্যেক শিক্ষকদের থেকে ৪-৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়েছেন।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আশরাফুজ্জামান বলেন, হাসানুজ্জামান সব সময়ই শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরণ করে। বেশিরভাগ দিনই ইচ্ছামাফিক বিদ্যালয়ে আসে। আজও দেরি করে আসায় বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলার স্বার্থেই হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দেওয়া হয়নি এবং আজ সারাদিনই সে বিদ্যালয়ে ছিলো। তার অভিযোগ ভিত্তিহীন।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার হোসেন জানান, অফিস সহকারী হাসানুজ্জামান আমাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছে যে ঘুষের টাকা না দেওয়ায় তাকে বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দেওয়া হয়নি। লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। তবে আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিবো।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *