ঢাকা কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার মানোন্নয়নে করণীয়” শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত

ঢাকা অফিস

দেশের কারিগরি শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ খাতকে আরও সময়োপযোগী, দক্ষতাভিত্তিক এবং বাজার-চাহিদানির্ভর করার লক্ষ্যে একটি সমন্বিত রূপরেখা প্রণয়নের উদ্দেশ্যে গতকাল মঙ্গলবার  কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকায় “কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার মানোন্নয়নে করণীয়” শীর্ষক একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

অপপবষবৎধঃরহম ধহফ ঝঃৎবহমঃযবহরহম ঝশরষষং ভড়ৎ ঊপড়হড়সরপ ঞৎধহংভড়ৎসধঃরড়হ (অঝঝঊঞ) প্রকল্পের সহায়তায় কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত সচিব ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল খায়ের মোঃ আক্কাস আলী। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সামসুর রহমান খান, অতিরিক্ত সচিব ও অ্যাসেট প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মীর জাহিদ হাসান এবং বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোঃ রুহুল আমিন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুফল ঘরে তুলতে হলে কারিগরি শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নেই। কারিগরি শিক্ষাকে জনপ্রিয় করতে হলে এর গুণগত মান বৃদ্ধিতে সচেষ্ট হতে হবে। এ কাজের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত আমাদের সম্মানিত শিক্ষকগণ। তাঁদের গুণগত মান বৃদ্ধির লক্ষ্যেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। শিক্ষকদের পদ শূন্য রেখে কারিগরি শিক্ষার মান বৃদ্ধি করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে শূন্য পদের বিপরীতে শিক্ষক নিয়োগের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তাঁদের যথাযথ প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে।

অংশগ্রহণকারী শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বিভিন্ন মতামত ও প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষিতে মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের যা রিসোর্স আছে, তাই নিয়েই কারিগরি শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধিতে এগিয়ে আসতে হবে। নৈতিক শক্তিতে বলিয়ান হয়ে পাঠদান পরিচালনা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের প্রতি মমত্ববোধ ও দায়বদ্ধতা থাকতে হবে। তিনি চলমান বিভিন্ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজ এ কর্মশালায় যেসব চাহিদার কথা উঠে এসেছে, তার অনেকটাই পূরণ হয়ে যাবে যদি প্রকল্পগুলো সঠিক সময়ে যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়। পাশাপাশি তিনি কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, সেবা প্রার্থীদের হয়রানি করা যাবে না, বরং সঠিকভাবে সময়মতো সেবা প্রদানের নজির স্থাপন করতে হবে।

কর্মশালার শুরুতেই একটি প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের সার্বিক কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। প্রেজেন্টেশনটি উপস্থাপন করেন প্রকৌশলী মোঃ আক্তারুজ্জামান। প্রেজেন্টেশনটির উপর মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন এবং মূল্যবান মতামত প্রদান করেন ঝিনাইদহ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ আনিচুর রহমান মৃধা, টেকনাফ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, গোয়ালন্দ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সুলতানা মেহেরুনা জামান, দুর্গাপুর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ বিপ্লব বিকাশ পাল চৌধুরী, খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ শেখ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের উপাধ্যক্ষ সাহেলা পারভীন, ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মোঃ রেজাউল করিম এবং পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ অনিমেষ পাল। এছাড়া, আলোচনায় আরও অংশগ্রহণ করেন ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোঃ মিজানুর রহমান এবং রংপুর আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয়ের পরিচালক খন্দকার মোঃ নাহিদ হাসান।

কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকবৃন্দসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। কর্মশালায় মূল অংশগ্রহণকারী ছিলেন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালকবৃন্দ, আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালকবৃন্দ, অধিদপ্তরাধীন টিটিটিসি, ভিটিটিআই, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজসমূহের প্রতিষ্ঠান প্রধানগণসহ প্রায় ২৫০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *