দর্শনা অফিস
দর্শনায় স্বর্ণ বন্ধক লেনদেনের জেরে জুয়েলারি ব্যবসায়ীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার ৪দিন পর আসামি রিমনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ৯ সেপ্টেম্বর দুপুর ৩টার দিকে দর্শনা পুরাতন বাজারের বন্ধু জুয়েলার্সে স্বর্ণ বন্ধক লেনদেন নিয়ে ব্যবসায়ী সঞ্জয় সান্তারার সঙ্গে রিমনের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রামনগর কালিদাসপুর মহল্লার ফারুক হোসেনের ছেলে রিমন (৩৭) পূর্বপরিকল্পিতভাবে হাতুড়ি দিয়ে সঞ্জয় (৩৬) মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যায়। এতে সঞ্জয় গুরুতর জখম হন। ঘটনার পর থেকে দর্শনা থানা পুলিশ, সিসিআইসি টিম ও ডিবি যৌথভাবে আসামিকে খুঁজতে থাকে। তদন্তে জানা যায়, হামলার পর রিমন ঢাকা পালিয়ে যায়। গতকাল সোমবার ভোরে ঢাকা থেকে ফেরার পথে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ শহীদ তিতুমীর বলেন, পুরাতন বাজারে বন্ধু জুয়েলার্সে একটি মারামারির ঘটনার সংবাদ পাই, আমি ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। একপর্যায়ে জানতে পারি আসামি পূর্বপরিকল্পিতভাবে বন্ধু জুয়েলার্সের কর্ণধর সঞ্জয় সান্তারার ওপর হামলা চালিয়ে পালিয়ে গেছে। গ্রেপতারের পর আসামি রিমন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হামলার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি আরও বলেন, স্বর্ণ বন্ধক ও সুদের টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে।তিনি আরও বলেন, রিমন গত ৭ সেপ্টেম্বর কিছু স্বর্ণ বন্ধক রেখে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার লেনদেন করেছিলেন। শর্ত ছিল, এক ঘণ্টার মধ্যে টাকা ফেরত নিলে ৬ হাজার টাকা সুদ দিতে হবে এবং ১৫ দিন পর ফেরত দিলে একই অঙ্ক পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু রিমন ৭ সেপ্টেম্বর বন্ধক রেখে ৯ সেপ্টেম্বর টাকা ফেরত দিতে এলে সুদের অঙ্ক নিয়ে বিতর্ক হয়। এর জের ধরেই হামলার ঘটনা ঘটে।
এদিকে এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। তাদের দাবি, সুদের কারবারকে কেন্দ্র করে যে অশান্তি সৃষ্টি হচ্ছে তা শুধু একজন ব্যক্তিকে নয়, বরং পুরো সমাজকেই বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। তারা বলেন, বন্ধক বা সুদের নামে প্রতারণা সাধারণ মানুষের সর্বনাশ ডেকে আনছে। দর্শনায় এ ধরনের অবৈধ ব্যবসা রুখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরও কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন। তাদের দাবি, শুধু আসামি গ্রেপ্তার নয়, বরং এ ধরনের সুদ ব্যবসার মূল চক্রকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। গ্রেপ্তারকৃত আসামি রিমনকে আদালতে সোপর্দ করার পর জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।



