স্টাফ রিপোর্টার
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার দক্ষিণ গোরস্থানপাড়ায় একটি ভাড়া বাসা থেকে গুলশান আরা চমন (৬৫) নামের এক নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। নিহত গুলশান আরা চমন এর পিতার নাম মহির উদ্দিন জোয়ার্দ্দার এবং তিনি দক্ষিণ গোরস্থানপাড়ার মরহুম পুলিশ সদস্য আবুল কাশেমের স্ত্রী। তিনি দীর্ঘ সাত বছর ধরে ওই এলাকার হাসানুজ্জামানের ভাড়া বাসায় একাই বসবাস করে আসছিলেন। তার কোনো সন্তানাদি ছিল না। স্বামীর পেনশনের টাকা দিয়েই জীবিকা নির্বাহ করতেন।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার থেকে তাকে আর বাড়ির বাইরে দেখা যায়নি। সোমবার দুপুরে ভাড়া বাসার ভেতর থেকে দুর্গন্ধ ছড়ালে প্রতিবেশীরা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ দরজার গ্রিল কেটে ভেতরে ঢুকে রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে। বাড়ির মালিক অবসরপ্রাপ্ত অডিট অফিসার হাসানুজ্জামান স্বপন, বলেন চমন দীর্ঘদিন ধরে এখানে ভাড়া থাকলেও তিনি নিরিবিলি জীবনযাপন করতেন। দুই বছর আগে এই বাড়িতে উঠলেও তার আগে একই পাড়ার অন্য ভাড়া বাসায় ছিলেন। নিহতের বোন খুশি জানান, “বৃহস্পতিবার বাজারে যাওয়ার কথা বলে চমন আমাকে ফোন করেছিলেন। সেদিনই শেষ দেখা হয়। এরপর আর যোগাযোগ হয়নি।” তিনি আরও জানান, চমন ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন এবং অতীতে স্ট্রোকও করেছিলেন। প্রতিবেশি হামিমুজ্জামান সুমন বলেন, শুনেছি ওই নারী ডায়াবেটিকস, উচ্চ রক্তচাপসহ নানান জটিল রোগে ভূগছিলেন। ৩ দিন তার কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। গতকাল দুপুরের দিকে তার রুম থেকে দূগন্ধ ছড়ালে বিষয়টি চাওড় হয়। এদিকে নিহতের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে উৎসুক জনতা তাকে দেখতে ভীড় জমায়। গুলশান আরা চমন বহুদিন ধরে এলাকায় ভাড়া থাকলেও তেমন কারও সঙ্গে মেলামেশা করতেন না। তিনি একাই নীরব ও নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করতেন। ময়না তদন্ত শেষ হলে আজ মঙ্গলবার নিহতের মরদেহ দাফন করা হবে বলে পরিবার সুত্র জানায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালেদুর রহমান বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অসুস্থতার কারণেই মৃত্যু হয়েছে। বাড়ির মূল ফটক ভেতর থেকে তালাবদ্ধ ছিল। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মারা যাওয়ার পর তার নাক ও মুখ নিয়ে রক্ত ঝরেছে। এ ঘটনার আগেও সে কয়েকবার অসুস্থ হয়ে পড়েছিলো। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত নয়।