চুয়াডাঙ্গায় এনজিও বিষয়ক সমন্বয় সভায় জেলা প্রশাসক জহিরুল ইসলাম

স্টাফ রিপোর্টার

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন, জিও-এনজিও মিলেই মানুষের সেবাটা নিশ্চিত করতে হবে। সরকার একা সব কাজ করে না, বরং ফ্যাসিলিটেটর হিসেবে সহযোগিতা করে। তাই প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে আত্মহত্যা, বাল্যবিয়ে ও তালাকের মতো সামাজিক সমস্যার কুফল সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এনজিও বিষয়ক সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

জেলা প্রশাসক জহিরুল ইসলাম আরও বলেন, আত্মহত্যার প্রবণতা চুয়াডাঙ্গায় উদ্বেগজনক। শুধু পরামর্শ দিলেই হবে না, মাঠপর্যায়ে সচেতনতা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। এখানে যারা আসেন তারা এসব কর্মকাণ্ডের সাথে থাকে না। এ চেয়ারে বসে আত্মহত্যা, বাল্যবিয়ে ও তালাকের প্রবণতার কথা বললে হবে না। সুতরাং এনজিও প্রতিনিধিদের দায়িত্ব হলো প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে নিয়মিত উঠান বৈঠক, সমাবেশ ও কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। তিনি জানান, আত্মহত্যা ও বাল্যবিয়ে রোধে যেখানে প্রবণতা বেশি, সেখানে মাসে মাসে সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম করা যেতে পারে। প্রয়োজনে আমি নিজেও এসব কর্মসূচিতে অংশ নেবো।

তিনি এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলোকে উদ্দেশ্য করে বলেন, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহ অঞ্চলে আত্মহত্যা, বাল্যবিয়ে ও তালাকের হার তুলনামূলকভাবে বেশি। তাই বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে এনজিও প্রতিনিধিদের মাঠপর্যায়ে মাদকসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দেখলে অবশ্যই প্রশাসনকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে হবে।

সভায় জেলা প্রশাসক উল্লেখ করেন, কাগজে-কলমে বাল্যবিয়ে শূন্য দেখানো হলেও বাস্তবতা ভিন্ন। অনেক বাল্যবিয়ে রেজিস্ট্রিবিহীনভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। অথচ তালাকের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রি থাকায় তার পরিসংখ্যান সহজেই প্রকাশ পাচ্ছে। সে তুলনায় তালাকের হারও বেড়েছে বলে তিনি জানান।

জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার আশফাকুর রহমানের সঞ্চালনায়  এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজানুর রহমান, কৃষি প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন, টিটিসির অধ্যক্ষ মুছাবেরুজ্জামান, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার সাহা, যুব উন্নয়নের উপ-পরিচালক ফিরোজ আহম্মেদ, ব্র্যাকের সমন্বয়কারী মানিক ম্যাক্সিমিলিয়ান রুগগা, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক জহির রায়হান, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারন ও বাসসের জেলা প্রতিনিধি  বিপুল আশরাফ সহ বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি।

জেলা প্রশাসক সকল এনজিও প্রতিনিধিদের উদ্দেশে শেষবারের মতো আহ্বান জানিয়ে বলেন, সচেতনতাই সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। মাঠপর্যায়ে গিয়ে যদি আমরা সঠিক বার্তা পৌঁছে দিতে পারি, তবে আত্মহত্যা, বাল্যবিয়ে ও তালাকের মতো সামাজিক সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *