আলমডাঙ্গা অফিস
আজকের এই জনসমুদ্র দেখে প্রমাণিত হয় চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপিসহ প্রত্যেকটি ইউনিট কমিটি অত্যন্ত শক্তিশালী। প্রতিটি ইউনিয়নের প্রত্যেকটি ওয়ার্ড অত্যন্ত শক্তিশালী। বিগত দিনগুলোতে ফ্যাসিস্ট সরকারের এত দমন পীড়নের মধ্যে দিয়েও আমরা কঠোর কর্মসূচি পালন করেছি। প্রত্যেকটি মহল্লায় ও গ্রামে ধানের শীষের দুর্গ গড়ে তুলতে হবে। যে নির্যাতন ও নিপীড়নের মধ্যে দিয়ে আমাদের ১৭ বছর পার হয়েছে আমাদের নেতা জনাব তারেক রহমান বলেছেন আমাদের সংগ্রাম এখনো শেষ হয় নাই। সংগ্রাম যখন শেষ হবে তখন এই দেশে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। যতদিন পর্যন্ত নির্বাচন না হবে ততদিন আমরা কোন সালিশ বিচার, টাকা আদায়, কোন প্রকার ঝামেলায় যাবো না। ‘ধানের শীষের জন্য আমরা মাঠ রেডি রেখেছি। দল যাকে মনোনয়ন দিবে আমরা একসাথে কাজ করবো।’ গতকাল শনিবার বিকেল চারটায় আলমডাঙ্গা শহরের এরশাদ মঞ্চে আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের পক্ষে অনুষ্ঠিত জনসভায় উপরোক্ত মন্তব্য করেন মো. শরীফুজ্জামান শরীফ।
শনিবার দুপুরের পর থেকেই জনসভায় অংশগ্রহণ করতে আলমডাঙ্গা পৌরসভা ও আলমডাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে নেতাকর্মীরা দলে উপস্থিত হতে থাকেন জনসভা স্থল উপজেলা পরিষদ চত্বরের এরশাদ মঞ্চে। আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চত্বর, থানা রোড, স্টেসন রোড, চারতলা তলা মোড়সহ পুরো শহর লোকে লোকারন্য হয়ে ওঠে। ‘শহীদ জিয়া অমর হোক, জিয়ার সৈনিক এক হও, এক জিয়া লোকান্তরে, লক্ষ্য জিয়া ঘরে ঘরে, তারেক জিয়া বীরের বেশে, আসবে ফিরে বাংলাদেশ,’ এ ধরনের নানা স্লোগানে মুখরিত হয় পুরো শহর।
জনসভায় আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আখতার হোসেন জোয়ার্দ্দারের সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শরীফুজ্জামান শরীফ আরো বলেন, আপনারা যেন ভেবে নিয়েন না, যে বিএনপি ক্ষমতায় চলে এসেছে। কেউ চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসে পড়বেন না, কেউ বিচার সালিশে মাতব্বরী করবেন না, কেউ নিজের ইউনিয়নে ছুরি ঘোরানোর চেষ্টা করবেন না। আপনারা নম্র ও শান্তভাবে ভোটারদের পাশে থাকবেন সাধারণ মানুষের পাশে থাকবেন। আপনাদের আচরণে সন্তুষ্ট হয়ে যেনো আগামী নির্বাচনে মানুষ ধানের শীষে ভোট দেয়। ‘একটি প্রায় ধ্বংস স্তুপ দলকে প্রতিনিয়ত পরিশ্রমের মাধ্যমে তারেক রহমান আমাদের উজ্জিবিত করেছেন। ফ্যাসিস্টদের নির্যাতন, নিপীড়ন সহ্য করে হলেও আমরা কেন্দ্র ঘোষিত প্রত্যেকটি দলীয় আয়োজন সম্পন্ন করেছি। মনোনয়ন নিয়ে আমি কথা বলবো না। কথা হলো একটাই আমাদের মার্কা ধানের শীষ। ধানের শীষের জন্য আমরা মাঠ রেডি রেখেছি। দল যাকে মনোনয়ন দিবে আমরা একসাথে কাজ করবো।’ আজকে আমাদের জনসমুদ্র থেকে প্রমাণিত হয় চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির প্রতেকটি ইউনিট শক্তিশালী। আপনারা প্রত্যেকে এই দলের দায়িত্ব পালন করেন। আহ্বায়ক কমিটি থেকে নির্বাচনের মাধ্যমে জেলা কমিটি তৈরি করা হয়েছে। ইউনিয়ন কমিটিগুলো তৌরির সময় বার বার বাধা দেয়া হয়েছে। শত কষ্টেও প্রতিটি স্থানে নির্বাচনের মাধমে ইউনিয়ন কমিটি হয়েছে। আমাদের কোনো পকেট কমিটি নেই। তফসিল দিয়ে প্রকাশ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে উপজেলা এবং পৌর কমিটি তৈরি হয়েছিলো। এই ফর্মুলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। তিনি প্রকাশ্যে ভোটাভোটির মাধ্যমে কমিটি তৈরির নির্দেশনা দিয়েছিলেন। জেলা কমিটি গঠনের সময় অনেকে অপচেষ্টা করেছে। আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কমিটি হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে জেলা কমিটি হবে। সেটাই আমাদের জেলায় হয়েছে।’
এ সময় মো. শরীফুজ্জামান শরীফ আরও বলেন, ‘আমাদের নেতা জনাব তারেক রহমান বলেছেন, ‘এখনো সংগ্রাম শেষ হয়নি। গণতন্ত্রের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে, সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।’ আমরা বলতে চাই, মনোনয়ন যেই পাক না কেন, আমরা ধানের শীষের হয়ে চুয়াডাঙ্গা ১ ও ২ আসন আমাদের মা আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশ নায়ক তারেক রহমানকে দিতে পারি সেটিই আমাকের লক্ষ্য। এখানে ব্যাক্তির কোনো মূল্য নেই। মনোনয়নে প্রতিদ্বন্দ্বীতা থাকবে। আমরা চাই সেটি সাংগঠনিকভাবে হোক। এই ১৭ বছর যারা নির্বিচারে মামলা খেয়েছে, বছরের বছর পর অত্যাচারের স্বীকার হয়েছে, জেল খেটেছি। তাঁদেরকে যারা বাচিয়ে রেখেছে, তাদের কথাও ভাবতে হবে। তারেক রহমানের প্রত্যেক উপজেলায় লোক আছে। তিনি সকল খবর রাখেন।’
ভাংবাড়িয়া ইউনিয়ন থেকে সমাবেশে অংশ নিতে আসা আব্দুল জলিল বলেন, “আমরা গ্রামের মানুষ হয়েও আজ আলমডাঙ্গা শহরে এসে মনে করছি উৎসবে এসেছি। এত বড় জনসমাগম আমি জীবনে দেখিনি। আমরা চাই ধানের শীষের বিজয়ের মাধ্যমে আবারো দেশের গণতন্ত্র ফিরুক। নেতারা যেভাবে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, আমরাও শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকবো।” জামজামী ইউনিয়ন থেকে আসা রানা আহমেদ বলেন, “এই জনসভা প্রমাণ করে বিএনপি আজও জনগণের হৃদয়ের দল। আমরা নেতাদের পাশে থেকে সবসময় রাজপথে আছি। আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের জয় ছাড়া আমরা ঘরে ফিরবো না।”
আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো: আনোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় জনসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সদস্য খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু, সাংগঠনিক সম্পাদক মো সফিকুল ইসলাম পিটু, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ মিল্টন, আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি মো আজিজুর রহমান পিন্টু, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো: আমিনুল হক রোকন, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো: জিল্লুর রহমান ওল্টু, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এম শাহজাহান মুকুল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো আবু জাফর মন্টু, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম, জেলা মহিলা দলের সভাপতি রউফ উর নাহার রিনা, জেলা কৃষক দলের আহবায়ক মোকাররম হোসেন, জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব ও বাড়াদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোবারক হোসেন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো সাইফুর রশীদ ঝন্টু, জেলা মৎসজীবি দলের আহবায়ক কামরুজ্জামান বাবলু, জেলা জাসাস এর সাধারণ সম্পাদক মো সেলিমুল হাবিব সেলিম, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মো মোমিনুর রহমান মোমিন, জেলা আইনজীবী ফোরাম এর আহবায়ক অ্যাড. আ স ম আব্দুর রউফ, জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. মারুফ সারোয়ার বাবু, জেলা ওলামা দলের আহবায়ক মওলানা আনোয়ার হোসেন।