চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে ‘বাঁধন’ এর ৮ম বর্ষপূর্তি উদ্যাপন অনুষ্ঠানে সাহিদুজ্জামান টরিক

স্টাফ রিপোর্টার

‘বাঁধন’ চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ইউনিট, পদ্মা জোনের ৮ম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের সম্মেলনকক্ষে এ আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিঙ্গাপুর বাংলাদেশ বিজনেস চেম্বারের (বিডিচ্যাম) প্রেসিডেন্ট এবং সাহিদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাহিদুজ্জামান টরিক। তিনি ফিতা কেটে বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন এবং আলোচনা সভা শেষে কেক কাটেন অতিথিবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাহিদুজ্জামান টরিক বলেন, আমি প্রথম রক্ত দিই ১৯৯০ সালে। এরপর থেকে মোট ১৯ বার রক্ত দিয়েছি। কারণ, আমি মনে করি মানুষের উপকারে আসা থেকে বড় কাজ আর কিছু হতে পারে না। একবার একজন আলেমের অজুর পানি এনে দেওয়া কিংবা মৃত্যুপথযাত্রী কারো জীবন বাঁচাতে রক্তদান, এগুলো এমন সওয়াবের কাজ যা আল্লাহ তায়ালার সন্তষ্টি অর্জনের মাধ্যম হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘বাঁধনের প্রত্যেক কর্মী নিঃস্বার্থভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। তারা কাউকে দেখানোর জন্য নয়, বরং মানুষের জন্য কাজ করতে এসেছেন। এমনকি রাত ৩টায় কারো সাহায্যের প্রয়োজন হলে তারাও সাড়া দেয়। আপনাদের যারা কিছু না থাকা সত্ত্বেও রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচান, তাদেরকে স্যালুট জানাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি ৩০ বছর ধরে বিদেশে আছি। প্রতিদিন সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠে বা”চাদের স্কুলে দিয়ে ৯টার মধ্যে অফিসে উপস্থিত হই। কঠোর পরিশ্রম করেই আজকের অবস্থানে পৌঁছেছি। আমি চুয়াডাঙ্গায় জন্ম নিয়েছি, এখানকার আলো বাতাসেই বড় হয়েছি। ১৯৮৬ সালে এই কলেজ থেকেই আমি ইন্টারমিডিয়েট পাস করি। ওই বছর কলেজ থেকে সর্বোচ্চ ফলাফলকারী ৩ জনের একজন ছিলাম আমি।

তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নিজের ভিতরের শক্তিকে জাগ্রত করুন। মন ছোট করবেন না, ভাববেন না আপনার বাবা কৃষক ছিলেন বা আপনি গ্রাম থেকে এসেছেন, এসব নয়, বরং ভাবুন আপনি কে। কঠোর পরিশ্রম ছাড়া সফলতার বিকল্প নেই।

ব্যবসা জীবনের শুরু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি আমাকে ব্যবসা শিখিয়েছেন, তিনি বলেছিলেন প্রথম পাঁচ বছর কোনো শখ থাকবে না, ঘুরতে যাওয়া নয়, শুধু কঠোর পরিশ্রম। পাঁচ বছর পর ফিরে তাকিয়ে দেখলে বুঝতে পারবে তুমি কী করেছো।’

রক্তদানের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানের সুবিধা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সিঙ্গাপুরে রক্তদানের পর ডোনারদের ইজি চেয়ারে বসিয়ে হট হরলিক্স ও কেক দেওয়া হয়। আমাদেরও আরও আধুনিক হতে হবে। বাঁধন থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। আমাদের সন্তানেরাও একদিন বাঁধনের মাধ্যমে আত্মত্যাগ শিখবে।’

নিজেকে কৃতীসন্তান বলে পরিচয় দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আলাদা কেউ নই, আপনাদের মতই একজন। আমি রোজ রাতে কাঁদতাম, কবে বাংলাদেশে ফিরব। আমার বাবা আমাকে সাহস দিতেন, এই মাসটা থাকো, না পারলে পরের মাসে চলে এসো। তাই বলি, কঠোর পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই।’

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাঁধন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ইউনিট পদ্মা জোনের সভাপতি রাসেল আলী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক রিয়াদ হাবিব। অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ব্যব¯’াপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুর রহমান, দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুলতান মাহমুদ, বাংলা বিভাগের প্রভাষক আজিম হোসেন, দর্শন বিভাগের প্রভাষক জমসেদুর রহমান ও প্রভাষক সাবিনা আতুন।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাঁধন কেন্দ্রীয় পরিষদের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিকাইল, ঢাকা ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (ডুসাক) সভাপতি মোস্তফা ইকবাল হৃদয়, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ আহমেদ, বাঁধন সরকারি কলেজ ইউনিট পদ্মা জোনের উপদেষ্টা সাজেদুর রহমান, সজিবুল ইসলাম, সুজাউদ্দীন টুটুল, সাকিব বিশ্বাস ও শরিফুল। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন হাসিবুল, মর্তুজা, ইয়াসিন আরাফাত, নুসরাত, ফাতেমা, আইরিন, সাকিব, ইকরামুল, অয়ন, মাহফুজ, ইব্রাহিম, বাঁধন, আশিক, রনি, হালিমা, আয়েশা, মিথিন ও নাহিদ হাসান।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *