জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কমিটির মাসিক সভা, সার ডিলার , ডায়াগনষ্টিক সেন্টার, পেট্রোল প্যাম্পের বিরুদ্ধে অনিয়ম পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষনা 

স্টাফ রিপোর্টার

চুয়াডাঙ্গায় জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১২টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। সভায় প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (এনডিসি) সামিউল আজম।

সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, যারা প্রকৃত ব্যবসায়ী তারা কিন্তু হুটহাট করে লাভের দিকে তাকায় না। তারা একটা স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেনেন্ট করে চলে। প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ক্রেতাকে লক্ষ্মী মনে করে। এরা ক্রেতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না। যারা অসাধু ব্যবসায়ী তারা তাড়াতাড়ি লাভবান হওয়ার জন্য বিভিন্ন পথ অবলম্বন করে। এসব ব্যবসায়ীরা বেশিদিন টেকে না। আমি ব্যবসায়ী নেতাদের অনুরোধ করবো যদি কোনো ব্যবসায়ী ক্রেতাদের হয়রানি অথবা ক্ষতিগ্রস্ত করে আমাদের জানালে আমরা সেসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। এছাড়া পৌর এলাকায় শহীদ হাসান চত্বর থেকে পোষ্ট অফিস পর্যন্ত এবং হাসপাতাল সড়কে ফুটপথ দখল করে যারা ব্যবসা পরিচালনা করছেন তাদেরকে অবিলম্বে উচ্ছেদ করে সাধারণ জনগণের চলাচল উন্মুক্ত করা হবে। এছাড়া হোটেল, বেকারী মালিক-কর্মচারীদের বিভিন্ন বিষয়ের ওপর সচেতনতামূলক সভার আয়োজন করা হবে। সবমিলিয়ে আমরা চেষ্টা করবো যাতে ভোক্তার অধিকার নিশ্চিত হয়।

সভায় জেলা প্রশাসক জানান, শহীদ হাসান চত্বর থেকে শুরু করে প্রিন্স প্লাজা মার্কেট পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে রাস্তা দখল করে ভ্রাম্যমাণ দোকানীরা বসে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে। এ অবস্থা চলতে থাকলে সাধারণ পথচারীরা চলাচল করবে কীভাবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ জানান, বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা দোকানের সামনে ১০ ফিট রাস্তা ওইসব ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতিদিন হিসেবে ভাড়া দিয়ে থাকে। আমরা ওইসব ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেছি, তারা আমাদের জানিয়েছে প্রতিদিন আমরা এ জায়গার ভাড়া দিয়ে থাকি। এ অবস্থায় এখান থেকে উঠে গেছে আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে কীভাবে চলবো। সভায় জানানো হয়, কোনো ব্যবসাদার তাদের দোকানের সামনে সড়ক ভাড়া দেবে এটা মেনে নেয়া যাবে না। এ ব্যাপারে দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এসব ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীদের বহুবার নিষেধ করা হয়েছে কিন্তু তারা এ ব্যাপারে কোনো কর্ণপাত করেন না। আমরা শত চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি।

এছাড়া চুয়াডাঙ্গা সমবায় নিউ মার্কেট রবিবার ও আশাপাশের সকল দোকান শুক্রবার বন্ধ রাখার আহ্বান জানানো হয়। শুধুমাত্র শুক্রবারে নিচের বাজারে কাঁচাবাজার সংলগ্ন মুদি দোকান বেলা ১২টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। এ নির্দেশনা যারা মানবে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। অপরদিকে জেলার সকল ক্লিনিকগুলোতে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রাখার আহ্বান জানানো হয়। এসকল প্রশ্নের উত্তরে জেলা প্রশাসক বলেন, গুটি কয়েক ব্যবসায়ীর কারণে সকল ব্যবসাদারদের বদনাম হচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে যথাযথভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিশেষ করে ফুটপথ দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চলবে। এছাড়া সার ডিলার ও অবৈধ ক্লিনিক-ডায়াগনষ্টিক সেন্টার, পেট্রোল প্যাম্পের বিরুদ্ধে কোনো অনিয়ম পেলে বড় ধরণের জরিমানা করা হবে বলেও জেলা প্রশাসক জানান। এর বাইরে এলপিজি সিলিন্ডার গ্যাস সরকার নির্ধারিত মূল্যের বেশী নিলে সেই দোকান বা ডিলারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুল হাসান, পরিবেশ অধিদপ্তরের সিনিয়র কেমিস্ট নরেশ চন্দ্র বিশ্বাস, জেলা স্যানেটারি ইন্সপেক্টর গোলাম রহমান, ৬-বিজিবির নায়েক সুবেদার জাকির হোসেন, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার স্যানিটারী ইন্সপেক্টর নার্গিস জাহান, জেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা খন্দকার শাওন হাসনাত, কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সহিদুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ, জেলা দোকান মালিক সমিতির আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম মালিক লার্জ, সদস্য সচিব সুমন পারভেজ প্রমুখ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *