জীবননগরে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্টি হয়েছে চরম জনদুর্ভোগ পনির নিচে তলিয়ে গেছে নিচু এলাকার রাস্তাঘাট ও জমির ফসল

জীবননগর অফিস

গতকাল সোমবার দুপুর থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে জীবননগরে চরম জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে পানির নিচে। বৃষ্টি পাতের সাথে ঝোড়ো বাতাসে নষ্ট হয়েছে জমির ফসল। প্রবল বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে এতে অনেক মানুষ গৃহবন্দী হয়ে গেছে। গত কয়েকদিন ধরে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয়তার কারণে মাঝারি ও হালকা বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। মাঝে দুইদিন বিরতির পর গতকাল সোমবার আবারও মুশলধারে বৃষ্টিপাত  শুরু হয়েছে।

এই বৃষ্টিপাতের কারণে জীবননগর উপজেলার জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। দিন মজুর খেটে খাওয়া মানুষদের বসে থেকে দিন পার করতে হচ্ছে। সারাদিন বৃষ্টির কারনে মানুষ অতিপ্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে না। ভ্যান, অটোরিকশা ও সিএনজি চালকরাও বেকার সময় কাটাচ্ছেন। বৃষ্টিপাতের কারণে নিচু স্থানের রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। রাস্তার ওপর সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। সাধারণ পথচারী ও শিক্ষার্থীদের চলাচলে চরম ভোগান্তি পেতে হচ্ছে। রাস্তার ওপর পানি জমে থাকার কারনে রাস্তার ইট খোয়া উঠে গিয়ে অনেক ক্ষতি হচ্ছে। রাস্তা ডুবে যাওয়ার কারনে রোগীদের হাসপাতালে নিতে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে স্বজনরা। জীবননগর পৌরসভার অনেক রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

এদিকে বৃষ্টি পাতের কারনে উপজেলার নিচু জমির ফসল গুলো পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে।  বৃষ্টির সাথে ঝড় হওয়ার কারনে ভেঙ্গে পড়েছে কলা ও পেঁপে গাছ। স্বর্ণ ধানের বীজতলা পানিতে ডুবে গেছে। বিশেষ করে  ধান, পাট, কলা, পেঁপে, কচু, মরিচ চাষিদের বেশি ক্ষতি হয়েছে। অনেকের পুকুর পাড় ভেসে মাছ চলে গেছে।

চাষিরা বলছেন, আষাঢ় মাস শুরু থেকে বৃষ্টিপাত হয়ে যাচ্ছে। জমিতে জো হচ্ছে না। এভাবে বৃষ্টিপাত হতে থাকলে সব ফসলেরই ক্ষতি হবে। উপজেলার উথলী গ্রামের কৃষক ছাত্তার আলী বলেন, আষাঢ় মাসে এমন বৃষ্টিপাত আমি অনেক বছর দেখিনি। বিলের মাঠে দুই বিঘা জমিতে আউশ ধানের চাষ করেছিলাম।গ ত কয়েক বছর ধরে ধান ভালো হয়। পানিতে ডুবে না। কিন্তু এবার বৃষ্টির কারনে ধানগুলো পনির নিচে তলিয়ে গেছে।

সজীব হোসেন নামের আরেক কৃষক বলেন, প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে ক্ষেতের জমির ফসল সব ডুবে গেছে। জমির মহাজনের টাকা ও সারের দোকানের বাকি কিভাবে পরিশোধ করবো! জনদুর্ভোগ কমাতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দ্রুত পানি অপসারণের ব্যবস্থা করার দাবি করে এলাকাবাসী।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, বঙ্গপসাগরে স্থল নিন্মচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এ কারনে গতকাল সোমবার চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহসহ কয়েকটি জেলায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গাসহ খুলনা বিভাগে বৃষ্টিপাত অব্যহত থাকতে পারে। তবে আজ মঙ্গলবার বৃষ্টি কিছুটা কমতে পারে। গত ২৪ ঘন্টায় অর্থাৎ রবিবার রাত ৯টা থেকে সোমবার রাত ৯টা পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গায় ৮৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ছিলো ঘন্টায় ৪০ কিলোমিটার ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *