চুয়াডাঙ্গায় বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উদযাপন

স্টাফ রিপোর্টার

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান বলেছেন আমাদের জমির তুলনায় জনসংখ্যা অনেক বেশি। জনসংখ্যা বেশি হলে আমরা অনেক সময় চিন্তা করি এটি সমস্য। কিন্তু এটাকে আমরা যদি প্রোপার ইউটিলাইজ করতে পারি, তাদেরকে আমরা যদি সেভাবে দক্ষ জনসংখ্যা হিসাবে গড়ে তুলতে পারি। তাহলে সেটি কিন্তু সম্পদে পরিনত হয়। উন্নত দেশের দিকে তাকালে আমরা সহজেই বুঝতে পারব, আমাদের লাখ লাখ জনসংখ্যা যা না করতে পারে, অনেক দেশে যারা টেকনিক্যাল বিষয়ে পারদর্শী এসকল উন্নত দেশ এগুলোতে এগিয়েছে, তাদের ১ /২ জন মানুষই কিন্তু আমাদের দেশের ১০ লাখ-২০ লাখ মানুষের সমান।  বিশ^ জনসংখ্যা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত মন্তব্য করেন। মিজানুর রহমান আরো বলেন, প্রবাসী শ্রমিক হিসাবে প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ আমরা বিদেশে পাঠাচ্ছি। তারা আমাদেরকে ফরেন রেমিটেন্সসহ বিভিন্নভাবে দেশের জন্য সহায়তা করছে। কিন্তু এই মানুষগুলিকে যদি আরো দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারতাম তাহলে রিটার্ন অনেকগুন বেশি আসত। আমাদের সমসাময়িক যেসব দেশ স্বাধীন হয়েছে। তারা আজ আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে গেছে। তাদের পলিসি ও প্লান ভালো থাকার কারনে তারা বিশে^র বুকে মাথা উচু করে দাড়িয়েছে।

গতকাল সোমবার সকাল ১০ টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সন্মেলন কক্ষে বিশ^ জনসংখ্যা দিবসের আলোচনাসভা ও সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক দীপক কুমার পাল। এবার দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়  “ছিলো নায্য ও সম্ভাবনাময় বিশে^ পছন্দের পরিবার গড়তে প্রয়োজন তারুন্যেও ক্ষমতায়ন”। লতিকা ইয়াসমিনের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলোওয়াত করেন আবু সায়েম। এরপর গীতা পাঠ করেন মনিতোষ বৈরগী।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পরিচালক ডা. রাকিবুল ইসলাম। এবার সারাদেশের ন্যায় চুয়াডাঙ্গায় ৩৫তম বিশ^ জনসংখ্যা দিবস পালন করা হচ্ছে। ১৯৯০ সালের ১১ জুলাই থেকে এ দিবস পালিত হয়ে আসছে। তরুণ প্রজন্ম দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ। কেননা তরুণরাই একসময় পরিণত মানুষ হয়। ২০২৪ সালের এক সমীক্ষায় দেখা যায় পৃথিবীর বর্তমান জনসংখ্যা ৮ বিলিয়ন, যার প্রায় ২৫ শতাংশই তরুন প্রজন্ম। অর্থাৎ ১৫-২৪ বছর বয়সী মোট জনগোষ্ঠীর ২ বিলিয়ন তরুণ।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে সিম থং, এ্যানিমেশন ও ডকুমেন্ট উপস্থাপন করেন। ডকুমেন্টে দেখা গেছে চুয়াডাঙ্গা জেলায় ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত সক্ষম দম্পতি ২ লাখ ৬৮ হাজার ৭৯ জন। পদ্ধতি গ্রহনকারীর সংখ্যা ২ লাখ ১৫ হাজার ৫৫১ জন। জেলায় বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.৩০ ভাগ। দেশে প্রত্যাশিত গড় আয়ু ১৯৯১ সালে ৫৬.১ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২২ সালে ৭২.৩ এ উপনীত হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা জেল প্রশাসন ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় আয়োজিত জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে আরো বক্তব্য রাখেন ছাত্র প্রতিনিধি জুলাই যোদ্ধা আসলাম হোসেন অর্ক, সিরাজুম মুনিরা, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক বিপুল আশরাফ, প্রথম আলো পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি শাহ আলম সনি। এছাড়াও মাঠ পর্যায়ে শ্রেষ্টত্ব অর্জনকারী আফরিনা বেগম, হালিম উদ্দিন তাদের বক্তব্যে বলেন নিরাপদ মাতৃত্য সেবার জন্য কাজ করি। সেই সাথে পরিবার পরিকল্পনার সেবাটি আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে দিয়ে থাকি।

অনুষ্ঠানের অন্যন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্যান) কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর দেবাশীষ কুমার দাস, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দিল আরা চৌধুরী, জেলা তথ্য অফিসার, জেলা জাসাসের সাধারন সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম জেলা সমবায় অফিসার ছাত্র প্রতিনিধি সজিবুল ইসলাম প্রমুখ। পরে মাঠ পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ১৪ জনকে কর্মিকে সনদপত্র ও ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *