সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে কোন নাগরিককে পুশইন করা আন্তজার্তিকভাবে মানবাধিকার লংঘন দর্শনা সীমান্তে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকে-বিজিবি- বিএসএফ

দর্শনা অফিস
দর্শনা সীমান্তে সীমান্ত সংশ্লিষ্ট দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকাল ৩ টার সময় বিজিবির চুয়াডাঙ্গা-৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হাসান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যম কর্মীদেরকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এর আগে দুপুর ১২ টা থেকে ১ পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপী এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চুয়াডাঙ্গা-৬ ব্যাটালিয়নের অধীন দর্শনা বিওপি এলাকার সীমান্তের ৭৬ নং মেইন পিলারের নিকট শূন্য লাইনে বাংলাদেশ অংশে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। পতাকা বৈঠকে বিজিবির পক্ষে চুয়াডাঙ্গা-৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. নাজমুল হাসান এবং বিএসএফের পক্ষে ৩২-ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট শ্রী সুজিত কুমার নেতৃত্ব দেন। বৈঠকে সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। আলোচনায় চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে অভিবাসন হিসেবে বসবাসরত বাংলাদেশী নাগরিকদেরকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে পুশইন করার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে কোন নাগরিককে পুশইন করা একদিকে যেমন সীমান্ত আইন লংঘন। অন্যদিকে আন্তজার্তিকভাবে মানবাধিকার লংঘনের সামিল। বিএসএফ সদস্যদের উপস্থিতিতে ভবিষ্যতে যাতে সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে পুশইনের মত কোন ঘটনা সংঘটিত না হয় সেলক্ষ্যে বিএসএফের স্থানীয় কমান্ডারগণকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের জন্য বিজিবির অধিনায়ক বিএসএফের কমান্ড্যান্টকে অনুরোধ করেন।
তিনি আরো বলেন, যদি কোন বাংলাদেশী নাগরিককে প্রত্যাবাসন করার প্রয়োজন দেখা দেয় সেক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তালিকা বিজিবির কাছে হস্তান্তর করতে হবে। বর্নিত নাগরিকদের জাতীয়তা ও পরিচয়পত্র নিশ্চিতকল্পে অতি দ্রুত সময়ে প্রত্যাবাসন করা হবে বলে বিএসএফ কমান্ড্যান্টকে আশ্বস্ত করা হয়। ভারতে অবৈধভাবে অভিবাসনকৃত বাংলাদেশী নাগরিকদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বিজিবির ব্যাটালিয়ন কমান্ডারের প্রস্তাবিত বিষয়টির সাথে বিএসএফ কমান্ড্যান্ট একমত পোষণ করেন। সীমান্ত দিয়ে পুশইনের ঘটনা যেন না ঘটে সে ব্যাপারে লোকাল কমান্ডারগণকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হবে বলে বিজিবির অধিনায়ককে আশ্বস্ত করেন বিএসএফ।
এছাড়া সীমান্ত হত্যা বন্ধসহ সীমান্ত সুরক্ষার লক্ষ্যে অবৈধ সীমান্ত অতিক্রম, চোরাচালান প্রতিরোধ, সীমান্তে টহল তৎপরতা বৃদ্ধি এবং গোয়েন্দা নজরদারী কার্যক্রম অব্যহত রাখার বিষয়ে উভয় ব্যাটালিয়ন কমান্ডারগণ একমত পোষণ করেন। সীমান্তে দায়িত্ব পালনকালে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং সীমান্ত সংশ্লিষ্ট যে কোন ঘটনা এক অপরের সাথে তথ্য আদান প্রদানের বিষয়ে সহমত পোষণ করেন। বৈঠক শেষে উভয়ই ব্যাটালিয়ন কমান্ডার নিকটস্থ ৭৬ নং সীমান্ত পিলার পরিদর্শন করেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *