চুয়াডাঙ্গায় ছাত্র সমাজের আয়োজনে জুলাই যোদ্ধাদ ‘আমার চোখে বাংলাদেশ’ আলোচনা সভা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

স্টাফ রিপোর্টার

চুয়াডাঙ্গায় ছাত্র সমাজের আয়োজনে ২৪ এর জুলাই আন্দোলনে আহত যোদ্ধা ও সমর্থনকারীদের সংবর্ধনা হিসেবে “আমার চোখে বাংলাদেশ” নামক আলোচনা সভা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেল ৪ টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সম্মেলন কক্ষে ছাত্র সমাজের উদ্যোগে এ সভা ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান, আকাক্সক্ষা, প্রাপ্তি এবং আগামীর পথচলা নিয়ে আলোচনা হয়। এসময় চুয়াডাঙ্গা জেলার ২ জন  শহীদ পরিবারের হাতে স্মৃতিফলক শহীদদের ছবি তুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি প্রায় ৬০ জন জুলাই যোদ্ধা ও জুলাই সমর্থনকারীদের সম্মাননা স্মারক ও উপহার দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা। বিশেষ অতিথি ছিলেন শহীদ শাহরিয়ার শুভর পিতা মো. আবু সাইদ এবং শহীদ মাসুদ রানার বড় ভাই বাবুল আক্তার।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সদস্য সচিব মো. সাফফাতুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে জেলা ছাত্র সমাজের নেতাকর্মী, জুলাই যোদ্ধা এবং স্থানীয় ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া রাকিব বলেন, আমরা সে সময় আন্দোলন করেছিলাম স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট হটানোর দাবিতে এবং স্বপ্ন দেখেছিলাম নতুন এক বাংলাদেশ গড়ার। যেখানে থাকবে না দুর্নীতি, অনিয়ম, চাঁদাবাজি। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয় এগুলো এখনো কিছুই কমেনি। আরো দুঃখ হয় যারা আন্দোলনে জীবন বাজি রেখে অংশ নিয়েছে তাদের ভিতরেও আত্মীয়বাজি, স্বজনপ্রীতি মানসিকতার লোকজন ঢুকে আমাদের কমিটি কে কলুষিত করেছে। জুলাই আন্দোলনের ট্যাগ লাগিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। ডিসি অফিস সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে জুলাইকে ব্যবহার করে বিভিন্ন কমিটিতে ঢুকে অনিয়ম করছে। 

চুয়াডাঙ্গার তরুণ গণমাধ্যমকর্মী জাতীয় দৈনিক আজকের পত্রিকা ও ইংরেজি পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মেহেরাব্বিন সানভি তার বক্তব্যে বলেন, জুলাই আন্দোলনে ছাত্র জনতার পাশাপাশি গণমাধ্যমকর্মীদের অবদানও অনস্বীকার্য। কিন্তু দুঃখ হয় জুলাই আন্দোলনের পর বৈষম্যবিরোধীরা জেলা উপজেলার যেসব কমিটি দেওয়া হয়েছে। সেসব কমিটির নেতারা গণমাধ্যমকর্মীদের খোঁজখবর নেয়নি। আমরা জুলাই আন্দোলনে যারা সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছি তারাও কিন্তু ঝুঁকির মধ্যে ছিলাম। তথ্য সংগ্রহ থেকে শুরু করে তথ্য প্রচারের পর পর্যন্ত বিভিন্নভাবে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছিলাম। তবে এক বছর পার হলেও কোন এক অদৃশ্য কারণে আমাদের ত্যাগ অপ্রকাশিত হয়ে আছে। এখন পর্যন্ত কেউ আমাদের খোঁজখবর রাখেনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমার বাংলাদেশ পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব এডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা বলেন, জুলাই আন্দোলন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায় হিসেবে রচিত হয়েছে। এখন বাংলাদেশের প্রত্যেকটি নাগরিক স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে। প্রশ্ন করতে পারছেন তবে কিছু কিছু দল বা রাজনৈতিক মতাদর্শের লোকজন নির্বাচনের কথা শোনাচ্ছে। নির্বাচনের জন্য কিন্তু এই গণঅভ্যুত্থান হয়নি। তখনকার সময় দেয়ালে দেয়ালে স্লোগান লেখা হয়েছে। নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখা হয়েছে সেই স্বপ্ন আমার আপনার সবারই উচিত বাস্তবায়নের জন্য কাজ করা। আমি আরো বলতে চাই, যে স্বৈরাচার হটানোর জন্য আন্দোলন হয়েছে যদি নতুন করে সেই স্বৈরাচার কেউ বা কারা তৈরি করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে আবার আন্দোলন গড়ে তুলবো। আপনারা এখন স্বাধীনভাবে লিখতে পারছেন, বলতে পারছেন, প্রশ্ন করতে পারছেন। আপনারা সঠিক সত্য সব সময় তুলে ধরেছেন। জুলাই আন্দোলনে আপনাদের অবদান অনেক। আসুন দেশ বিনির্মানে আমরা সকলে নিজ নিজ জায়গা থেকে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলি। এদেশ আমার আপনার সকলের।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *