স্টাফ রিপর্টার
শারদীয় দুর্গাপূজা ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষ্যে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন মন্দিরে শুভেচ্ছা উপহার বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে চারটায় জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এর আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পাঠানো উপহার মন্দির কমিটির নেতাদের হাতে তুলে দেন উপস্থিত অতিথিরা। এসময় সম্প্রীতির বন্ধন ও দেশের প্রতি ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে নেতাকর্মীরা সবার গলায় জাতীয় পতাকা পড়িয়ে দেন। পূজা উদযাপনে প্রতিটি মন্দির কমিটির পাশে দাঁড়াতে তারেক রহমানের উপহার হিসেবে পৌর এলাকা ও সদর উপজেলার মোট ২১টি মন্দিরে নগদ অর্থও প্রদান করা হয়।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের জেলা আহ্বায়ক সুরেশ কুমার আগরওলার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ। প্রধান অতিথি বলেন, ‘শারদীয় দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের নয়, বরং এটি আমাদের সামগ্রিক জাতীয় সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই উৎসবকে ঘিরে সম্প্রীতি, ভালোবাসা এবং ভ্রাতৃত্ববোধ আরও সুদৃঢ় হয়। তাই আমরা মনে করি, প্রতিটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানই আমাদের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক।’ ‘আমরা সবাই বাংলাদেশি, এটাই আমাদের মূল পরিচয়। ধর্ম, বর্ণ বা রাজনৈতিক মতপার্থক্য দিয়ে আমাদের বিভক্ত হওয়া উচিত নয়। দেশ ও সমাজের স্বার্থে সকলকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। এই আয়োজন যেন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয় সেজন্য জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পাশাপাশি জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরাও স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করবে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, উৎসবের আনন্দ যাতে প্রত্যেক মানুষ সমানভাবে উপভোগ করতে পারে।’
শরীফুজ্জামান শরীফ গত বছরের উদ্যোগের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘গত বছরের ন্যায় এ বছরও আমি চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের নির্বাচনি এলাকার প্রতিটি মন্দির ক্রমান্বয়ে পরিদর্শন করব। যে মন্দির সর্বোচ্চ শৃঙ্খলা, পরিচ্ছন্নতা, সজ্জার এবং আপ্যায়নের মাধ্যমে উৎসবকে সুন্দরভাবে সম্পন্ন করবে, সেই মন্দিরকে পুরস্কৃত করা হবে। এ উদ্যোগ শুধু উৎসবের মান বাড়াবে না, বরং প্রতিটি মন্দিরকে উৎসাহিত করবে সেরা আয়োজনের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে।’
‘আমরা শুধু রাজনৈতিক কর্মী নই, আমরা এ জেলার সন্তান। তাই এই জেলায় যেকোনো উৎসব বা অনুষ্ঠানকে শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘন পরিবেশে সম্পন্ন করা আমাদের দায়িত্ব। আমাদের নেতা তারেক রহমানের পক্ষ থেকে যেসব উপহার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে, তা মূলত সম্প্রীতির প্রতীক। তিনি সবসময়ই চান, ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে কোনো ধরনের বৈষম্য বা অশান্তি সৃষ্টি না হয়ে, বরং জাতীয় ঐক্যের বার্তা ছড়িয়ে পড়ুক।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থেকে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুমার সিংহ রায় এবং জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আহ্বায়ক উৎপল কুমার বিশ্বাস, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সদর উপজেলা শাখার সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক হেমন্ত কুমার সিংহ রায়, চুয়াডাঙ্গা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান পরিষদ গৌর শাখার সাধারণ সম্পাদক রাজেশ কুমার পাল, পূজা উদযাপন পরিষদ জেলা শাখার সদস্য পবিত্র কুমার আগরওয়ালা ও পলাশ কুমার সাহা, জেলা দোকান মালিক সমিতির সদস্য সচিব সুমন পারভেজ খান, সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক মহাবুল হক মহাবুব, জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি খন্দকার আরিফ, পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাজেদুল আলম মেহেদী এবং পৌর ছাত্রদলের সদস্য শাহারু আহমেদ।