স্টাফ রিপোর্টার
হাজারো মানুষের ভালোবাসায় ও শ্রদ্ধায় চির বিদায় নিলেন বিএনপির নেতা জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মজুিবুল হক মালিক মজু। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
জেলা বিএনপির সাবেক এই যুগ্ম আহ্বায়ক মজিবুল হক মালিক মজু (৬৩) চুয়াডাঙ্গা শহরের ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ড পাড়ার বাসিন্দা। তিনি মরহুম এহসানুল হক মালিকের জ্যেষ্ঠ পুত্র। রাজনীতির মাঠে দীর্ঘদিন সক্রিয় থেকে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির রাজনীতিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে তিনি সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ১ ছেলে, ২ মেয়ে, ৩ ভাই ও ২ বোন সহ বহু গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
নিহতের পরিবার সুত্র জানায়, প্রতিদিনের ন্যায় গতকাল সকাল বেলা বাড়িতে নাস্তা করে বাজারের উদ্দেশ্যে বের হন। সকাল ১০ টার দিকে তিনি অসুস্থ বোধ করলে বাড়িতে চলে আসেন। এ সময় মজুর শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হলে পরিবারের সদস্যরা তাকে নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের দিকে রওনা দেন। তবে পথের মধ্যে তিনি না ফেরার দেশে পারি জমান।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আব্দুল কাদের জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মজিবুল হক মালিক মজুকে অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি।
তার আকর্ষিক মৃত্যুর সংবাদে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। তাকে শেষ বারের মত এক নজর দেখার জন্য সব শ্রেণী পেশার মানুষ ভীড় করেন। এলাকাবাসীরা জানান, মজুর অমায়িক ব্যবহারে সবার মনে স্থান করে নিয়েছে। জনপ্রিয়তা তুঙ্গে থাকার কারনে তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ও চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচন করেন। সেই সময় প্রচুর মানুষ তাকে সমর্থন দেন।
তার মৃত্যুতে চুয়াডাঙ্গা রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু ও সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তারা মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এদিকে মজুর মৃত্যুর সংবাদে দীর্ঘদিনের সহকর্মীকে দেখতে তার বাড়িতে ছুটে যান কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক এমপি শামসুজ্জামান দুদু, এ্যাড. ওয়াহিদুজ্জামান বুলাসহ দলীয় নেতা কর্মীরা। অপরদিকে বিএনপি নেতা লে. কর্ণেল অবঃ সৈয়দ কামরুজ্জামান, মজুর অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন।
মজিবুল হক মালিক মজুর নামাজে জানাজা গতকাল বাদ আসর চুয়াডাঙ্গার ঐতিহাসিক টাউন ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। স্বরণকালের বৃহৎ এ নামাজে জানাজায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পাড়া প্রতিবেশী ও নিকটজনেরা উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে রেললাইন সংলগ্ন জান্নাতুল বাকী কবরস্থানে বাবা- মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।
এর আগে পরিবারের পক্ষ থেকে মরহুম মজিবুল হক মালিক মজু মিয়ার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া চেয়েছেন তার সহোদর মকসু, শাহরিন হক মালিক ও মইনুল হক মালিক। মইনুল হক মালিক বলেন, আগামী রোববার বাদ আসর আমার ভাইয়ের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে সকলকে শরীক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
মরহুমের নামাজে জানাজা ও দাফন পরবর্তী দোয়া পরিচালনা করেন ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ড পাড়া বাইতুল আকছা জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা ইমাদুল হক।
মরহুমের নামাজে জানাজা ও দাফন কার্যে শরীক হন
কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো:শরীফুজ্জামান শরীফ, জেলা বিএনপির সিনিয়র সদস্য খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু, সাংগঠনিক সম্পাদক মো সফিকুল ইসলাম পিটু, পৌর বিএনপির সভাপতি মো সিরাজুল ইসলাম মনি, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো নজরুল ইসলাম নজু, দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খাজা আবুল হাসনাত, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো আখতার হোসেন জোয়ার্দার, সাধারণ সম্পাদক মো আমিনুল হক রোকন, আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি মো: আজিজুর রহমান পিন্টু, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো মনিরুজ্জামান লিপটন, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো:রফিকুল হাসান তনু, দর্শনা পৌর বিএনপির নেতা মো: হাবিবুর রহমান বুলেট, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক পল্টু, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো সাইফুর রশীদ ঝন্টু, জেলা কৃষক দলের আহবায়ক মোকাররম হোসেন, সদস্য সচিব ও বাড়াদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোবারক হোসেন, জেলা মৎস্যজীবি দলের আহবায়ক কামরুজ্জামান বাবলু, জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক মো সেলিমুল হাবিব সেলিম, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহেদ মোহাম্মদ রাজিব খান, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব এম,এ তালহা, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মতিয়ার রহমান মিশর, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান সাদিদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো শাহজাহান খান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক জুয়েল মাহমুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিপ্লব হোসেন সহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।