স্টাফ রিপোর্টার
চুয়াডাঙ্গায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে জেলা শহরের রজব আলী সুপার মার্কেটস্থ জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ। প্রধান অতিথি থেকে কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-কোষাধ্যক্ষ মাহমুদ হাসান খান বাবু।
উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধান অতিথি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, ‘সদস্য পদকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে কেউ যদি দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করে, তা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। আমাদের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে সদস্যদের একটি সমন্বিত ডাটাবেজ রয়েছে। নবায়নকৃত সদস্যদের তথ্যও সেই ডাটাবেজে সংরক্ষিত থাকবে। প্রত্যেক সদস্যকে একটি আইডি কার্ড প্রদান করা হবে, যেখানে নাম, ছবি ও পরিচয়সহ কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে-যাতে সঙ্গে সঙ্গে যাচাই করা সম্ভব হয়। অনেকেই দাবি করেন তারা ১৯৭৫ সাল থেকে বিএনপির সঙ্গে যুক্ত, অথচ সেই সময় দল প্রতিষ্ঠা হয়নি-এ ধরনের অসংগতির অবকাশ রাখা হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, এই সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচিতে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি এমন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে, যা দেশের অন্য সব জেলায় অনুকরণীয় হয়ে উঠবে। আমাদের নেতাকর্মীদের ঐক্য এবং নিষ্ঠার ওপরই আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে।’
সভাপতির বক্তব্যে শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, ‘গত ১৬ বছরে যারা আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা, মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, যারা পুলিশি হয়রানিতে পোহাতে হয়েছে নিদারুণ দুর্ভোগ-সেই তৃণমূলের নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীরাই এই সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবেন। প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫১ জন সদস্যের মধ্যে ‘সুপার ফাইভ’ নেতারা অগ্রাধিকার পাবেন। একই সঙ্গে তাদের দায়িদ্বও থাকবে এই কার্যক্রমে চোখ রাখা। এবারের আয়োজন হবে নজরকাড়া ও দৃষ্টান্তমূলক।’
তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘আমি সবাইকে সতর্ক করে দিতে চাই-আওয়ামী দোসররা যেন কোনোভাবেই বিএনপির ছায়ায় প্রবেশ করতে না পারে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে যাঁরা আস্থা রেখে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করে গেছেন, বিএনপিতে শুধুমাত্র তাঁরাই স্থান পাবেন। প্রতিটি সদস্য ফরম যাচাই-বাছাই করে তবেই গ্রহণ করা হবে।’
অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল। তিনি বলেন, ‘এই কার্যক্রমে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে আমরা শুধু সহায়তার জন্য এসেছি। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির অভিজ্ঞ সভাপতি ও দক্ষ সাধারণ সম্পাদক সবার সঙ্গে নিয়ে সফলভাবে এই কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন বলেই আমরা বিশ্বাস করি। চুয়াডাঙ্গা জেলা বরাবরই কেন্দ্রের কাছে প্রত্যাশিত। এবারও আশা করি এই কর্মসূচিতে চুয়াডাঙ্গা সবার চেয়ে এগিয়ে থাকবে।’
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা কলেজ শাখার সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এইচ এম রাশেদ।
এছাড়া বক্তব্য দেন- জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সফিকুল ইসলাম পিটু, দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খাজা আবুল হাসনাত, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান পিন্টু, জীবননগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খান খোকন, জীবননগর পৌর বিএনপির সভাপতি শাহজাহান কবির, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আখতার হোসেন জোয়ার্দার।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি রাফিতুল্লাহ মহলদার, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক রোকন, মাহমুদুল হক পল্টু, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান লিপটন, দর্শনা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ আলী, জীবননগর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, জীবননগর পৌর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম তাজু, সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান ডাবলু, যুগ্ম সম্পাদক ময়েনউদ্দিন ময়েন, সদর পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক হাফিজুর রহমান মুক্ত, সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মকবুল হোসেন, আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মহাবুল মাস্টার, সাংগঠনিক খন্দকার আলী আজগর সাচ্চু, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুর রশীদ ঝন্টু, মত্স্যজীবী দলের আহ্বায়ক কামরুজ্জামান বাবলু।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব ও বাড়াদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোবারক হোসেন, আইনজীবী ফোরামের আহ্বায়ক অ্যাড. আ.স.ম রউফ, সদস্য সচিব অ্যাড. মানজারুল জোয়াদ্দার হেলাল, জেলা জজকোর্টের পিপি অ্যাড. মারুফ সারোয়ার বাবু, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজাউর করিম মুকুট, আবু জাফর মন্টু, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক জাহানারা পারভীন, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহেদ মোহাম্মদ রাজিব খান, জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিমুল হাবিব সেলিম, সেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এম.এ. তালহা, ছাত্রদলের সভাপতি মো. শাহজাহান খান ও সাধারণ সম্পাদক মো. মোমিনুর রহমান মোমিন, কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফ হোসেন জোয়ার্দার সোনা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন জেলা ওলামা দলের সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাওলানা আনোয়ার হোসেন। মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাসরীন পারভীনসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু এবং সফিকুল ইসলাম পিটু নিজ হাতে সদস্য সংগ্রহ ফরম পূরণ করে কার্যক্রমের সূচনা করেন। এ কার্যক্রম চলবে জুলাই মাসজুড়ে।