জীবননগর অফিস
জীবননগর উপজেলার হাসাদাহ ইউনিয়নের বালিহুদা গ্রামে অবস্থিত মারকাজুল উলূম বালিহূদা মাদ্রাসার শিক্ষক জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে গত রোববার রাত ১১ বছর বসয়ী এক ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এই মামলা হওয়ার পর মাদ্রাসার পরিচালক চুয়াডাঙ্গা জেলা বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা জুবায়ের খান বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হকের সঙ্গে তোলা একটি ছবি জীবননগর থানার ওসি, ওসি (তদন্ত)-সহ মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বিভিন্ন ব্যক্তিকে পাঠিয়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন। এক পুলিশ কর্মকতার কাছে মাওলানা মামুনুল হকের সঙ্গে তোলা একটি ছবি পাঠানোর আগের দিন ম্যাসেজে মাওলানা জুবায়ের খান লেখেন, টাকাটা উদ্ধারের জন্য দায়ীত্ব এসআইকে একটু বলে দিয়েন, মাদরাসার টাকাটা যেন উদ্ধার করা হয়। এর কয়েক ঘণ্টা পর তাকে কল করেন। পরের দিন মাওলানা মামুনুল হকের সঙ্গে তোলা একটি ছবি তাঁকে পাঠান। এর কয়েক ঘণ্টা পর ফের তাঁকে কল করেন। এদিকে মাওলানা জুবায়ের খানের প্রভাবের কারণে আতঙ্কে রয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাওলানা জুবায়ের খান বলেন, আমি একটা রাজনৈতিক দলের প্রার্থী। এখানকার ওসি, ডিসি, এসপি তাদের সাথে সমন্বয় করার জন্য এবং আমার পরিচিতি ও আমার কার্যক্রমের বিষয় তাদের সাথে শেয়ার করতে পারি না? আমি শুধু তাদেরকে না সাংবাদিকদের কাছেও এই ছবি পাঠাইছি। এখানে এই ছবি দেখিয়ে আমি কোনো প্রভাব বিস্তার করিনি।
জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন হোসেন বিশ্বাস বলেন, মাদ্রাসার পরিচালক জুবায়ের খান বাদী হয়ে মাদ্রাসা ভাঙচুর এবং ২ লাখ টাকা লুটপাটের বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এছাড়া ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবার থানায় বলাৎকারের বিবিধ অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে। আমরা দুটি বিষয়ই তদন্ত করছি। তিনি আরও বলেন, জুবায়ের খান কয়েকজন পুলিশ সদস্যের হোটসঅ্যাপে মাওলানা মামুনুল হকের সঙ্গে তোলা একটি ছবি পাঠিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা বিব্রতবোধ করছি।
বলাৎকারের মামলার অভিযোগে বলা হয়, জীবননগর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বালিহুদা গ্রামে অবস্থিত মারকাজুল উলূম বালিহূদা মাদ্রাসায় পড়ার ১১ বছর বয়সী ওই শিক্ষার্থী। গত ২৪ জুন মঙ্গলবার রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় ওই ছাত্রকে জোরপূর্বক বলাৎকার করে জিল্লুর রহমান নামের এক শিক্ষক। বিষয়টি ওই ছাত্রের বাবা মাদ্রাসার পরিচালক জুবায়ের খানকে জানালে তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। উল্টো তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন। মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষক জিল্লুর রহমান মাগুরা জেলার বাসিন্দা। তিনি দুই বছর যাবত ওই মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করছেন।