আবারও গুরুতর অসুস্থ মীর রোকনুজ্জামান ঢাকায় জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভারে চিকিৎসাধীন, চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে হিমশিম

আলমডাঙ্গা অফিস
দীর্ঘদিন ধরে পেটের জটিল রোগে ভুগতে থাকা সাংবাদিক ও শিক্ষক মীর রোকনুজ্জামান আবারও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে তিনি রাজধানীর মহাখালীর জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের আইবিডি ক্লিনিকে ভর্তি রয়েছেন
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মীর রোকনুজ্জামান কয়েক বছর ধরে পেটে তীব্র ব্যথা, বমি ও রক্তশূন্যতায় (এনিমিয়া) ভুগছিলেন। অসংখ্যবার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেও সুনির্দিষ্ট রোগ নির্ণয় সম্ভব হয়নি। অবশেষে চার মাস আগে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হলে সিটি স্ক্যানে ধরা পড়ে তিনি ‘ক্রোনস ডিজিজ’-এ আক্রান্ত। এটি এক ধরনের দূরারোগ্য এবং জটিল অন্ত্রের রোগ, যেখানে খাদ্যনালীর একাধিক অংশ সরু হয়ে যায়, ফলে খাদ্য আটকে গিয়ে ব্যথা ও বমির সৃষ্টি হয়।
পরবর্তী পর্যায়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। গত তিন মাস ধরে তিনি জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত ২৭ এপ্রিল তার পেটে একটি জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ সুস্থতা অর্জন সম্ভব নয়; তাকে দীর্ঘমেয়াদি ও ব্যয়বহুল ইনজেকশন থেরাপির ওপর নির্ভর করতে হবে।
চিকিৎসার অংশ হিসেবে ‘অফধষরসধন’ নামের এক ধরনের ইনজেকশন নিতে হচ্ছে তাকে। প্রতিটি ইনজেকশনের মূল্য প্রায় ১৫ হাজার টাকা। প্রথম ডোজে একযোগে ৪টি এবং দ্বিতীয় ডোজে ২টি ইনজেকশন দেওয়া হয়। এখন থেকে প্রতি ১৪ দিন পর পর ১টি করে ইনজেকশন গ্রহণ করতে হবে।
সম্প্রতি কোরবানির ঈদের আগে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও গত ১০ দিন ধরে ফের আগের উপসর্গ দেখা দিলে তাকে পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালের ৬ষ্ঠ তলার বেড নং ৬২৯-এ চিকিৎসাধীন।
মীর রোকনুজ্জামান পেশাগত জীবনে একজন সাংবাদিক ও একটি বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক। বহু বছর আগে বাবা-মাকে হারানো মীর রোকনের পরিবারে রয়েছেন তার স্ত্রী ও তিন বছরের একমাত্র কন্যা সন্তান। ব্যয়বহুল চিকিৎসার ভার বহন করতে গিয়ে তিনি চরম আর্থিক সংকটে পড়েছেন।
তবে তার এই দুর্যোগে পাশে দাঁড়িয়েছে আত্মীয়স্বজন, এলাকাবাসী, সাংবাদিক সমাজ, ক্রীড়াপ্রেমী ব্যক্তিবর্গ, বন্ধু মহল ও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন। বিশেষ করে ‘মন্ডল স্পোর্টস’ এর ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। সহায়তাকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মীর রোকন বলেন, “আপনাদের সহযোগিতা না পেলে এতদূর আসা সম্ভব হতো না। দোয়া করি, আগামীতেও আপনারা পাশে থাকবেন।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *