আমাদের সমাজের কিশোর তরুণ ও ছাত্রদের শিক্ষার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তর থেকে বিজ্ঞানের প্রতি আকৃষ্ট করার তেমন বিশেষ কোন মাধ্যম বা ব্যবস্থা নেই। শ্রেণি কক্ষে বিজ্ঞানের যে পাঠ দেওয়া হয়-তা শুধু পরীক্ষায় পাশ ও নম্বর পাওয়ার জন্য পড়ানো হয়। ফলে বিজ্ঞান পড়ে কেউ ভেতর থেকে পরিবর্তন হওয়ার তাগিদ অনুভব করেন না। জন্মসূত্রেই মানুষ পরিচ্ছন্ন চিন Íার অধিকারী হতে চায়। কিন্তু আমাদের সমাজের প্রথাগত চিন্তা আমাদের তরুণদের মনের অজান্তেই কুপমন্ডক ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন চিন্তায় অভ্যস্ত করে দেয়। ফলে বিজ্ঞান পড়েও তার মনের কোন পরিবর্তন হয় না। এমনিতেই আমাদের দেশে বিজ্ঞান লেখক, বিজ্ঞানের বই ও বিজ্ঞান পত্রিকা নেই বললেই চলে। সহজ ভাষায় সাবলীল ভঙ্গিতে বিজ্ঞানের জটিল বিষয়গুলোকে তুলে ধরা হলে সহজেই তা বোধগম্য হয়। কিন্তু এরকম কোন দক্ষ ও চিন্তাশীল মানুষ বা শিক্ষক সমাজ আমাদের দেশে সৃষ্টি হচ্ছে না। শিক্ষক যদি বিজ্ঞান মনস্ক না হয়, তাহলে একজন শিক্ষক কী করে ছাত্রদের মনে বিজ্ঞানের গুরুত্বকে তুলে ধরবে? সমাজের সব মানুষকে কেন বিজ্ঞানমুখী করে তুলতে হবে আগে এই প্রশ্নের সমাধান দরকার। প্রতিটি মানুষকে কার্যকরণ সম্পর্কে অবহিত করে যে-কোন কাজের পেছনে যে যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকতে পারে, সে সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে তোলা। এতে করে শৈশব থেকেই মানুষ কুসংস্কারে বিশ্বাস করা থেকে কিছূটা দুরে থাকবে।
সমাজ গতিশীল হবে। মানুষ একটি আনন্দের জগতকে খূঁজে পারে। মনস্তÍত্ত্বিক ভাবে আমরা সমৃদ্ধ হব। আমরা সকলেই জানি যে মানুষ যে-পৃথিবীতে বাস করে তা রহস্যেঘেরা এক জটিল পৃথিবী। আদিম যুগে মানুষ পৃথিবীর কোন কিছুর রহস্য উদ্ঘাটন করতে না পেরে তাদের পুজো করত। কারণ তখন মানুষের জ্ঞানের কোন বিকাশ ঘটেনি। জ্ঞানের অভাবে মানুষ যা-তা বিশ্বাস করেছে। সূর্য্যকে দেবতা জ্ঞানে তাকে পুজো দিয়েছে। নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে ভুল ভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে তাকে বিধাতার অভিশাপ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। এই সব ক-ুচিন্তা পরিহার করে শৈশব থেকে যদি আমরা বিজ্ঞানের তথ্য ও বক্তব্যকে অন্তরে ধারণ করে সময়ের সাথে মিল রেখে চলতে পারি, তবে আমাদের পুরো প্রজন্ম অচিরেই নতুন প্রজন্মে পরিণত হবে। একজন উৎসাাহী তরুণ তার চঞ্চলতা ও অস্থিরতা নিয়ে যখন জীবনের গন্তব্য খুঁজে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে চায়-তখন তার সামনে থাকে না কোন সুষ্পষ্ট নির্দেশনা। সমস্যাকুল ও ঝঞ্ঝাবহুল বিশ্বে তার অবস্থান তাকে প্রতিনিয়ত নানা চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হয়। বিজ্ঞানের রহস্যভরা এই জগৎ তাকে সঠিক পথ দেখাতে পারে। বিজ্ঞানের যে সব তথ্য সাইক্লোপেডিয়াতে জমা হয়ে আছে তার আবিস্কার ও উদ্ভাবনার ইতিহাস আমাদের জানতে হবে। বিজ্ঞানের অভিযান তার উদ্ভাবনার ব্যর্থতা কিশোর মনে মানবিক অনুভুতি প্রেরণা সৃষ্টি করতে পারে। বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকা বই আমাদের বিজ্ঞানের আবিস্কারের খবরকে পৌঁছে দেবে না তরুণদের বিজ্ঞানের প্রতি অনুপ্রাণিত করবে। জলের প্রবাহ এবং উষ্ণতা, বাতাসের গতিবেগ ও রৌদ্রের প্রখরতা সম্পর্কে জ্ঞান লাভে যে কেউ অংশ নিতে পারে।দেশের জন্য আমাদের ভালবাসা হবে বিজ্ঞানভিত্তিক। আনন্দময় শিক্ষা ও সুন্দর জীবনের আকাংখা শুধু স্বপ্ন নয়, তা আমাদের অর্জনযোগ্য লক্ষ্য হওয়া উচিত।
বিজ্ঞান এক সাধনা ও কষ্টের দুর্গম পথযাত্রা। বিজ্ঞান-ভিত্তিক জ্ঞানের জন্য দরকার গবেষণা, জনপ্রিয় বিজ্ঞান পত্রিকা ও বইপত্র। বিজ্ঞানের জগৎ এখন ক্রমেই প্রসারিত হচ্ছে। সেই অর্থে জটিলও। কিন্তু আমাদের বিজ্ঞানের জগৎকে সহজসাধ্য করে উপস্থাপন করতে হবে। বিজ্ঞানের ব্যবহার কৌশল ও ভাষা সাধারণের বোধগম্য হতে হবে। বিজ্ঞানের আবিস্কার এবং সবার অধিগম্য করে তোলাই হবে বিজ্ঞানের প্রথম শর্ত। অনেক বিজ্ঞানী তাদের আবিস্কারকে অপূর্ব দক্ষতায় বোধগম্য করে তুলে ধরেছেন। যেমন হাক্সলি ও জেবি এস হ্যাল্ডেন। আমাদের দেশে বিজ্ঞান চর্চার ব্যাপারটি সার্বিকভাবে অবহেলিত। আরও অবহেলিত বিজ্ঞানের সাথে জনগণের সম্পর্ক সৃষ্টি। এর জন্য দরকার বিজ্ঞান সাংবাদিকতা। আমাদের অবস্থার পরিবর্তন করতে হলে, শুধু মুষ্টিমেয় বিজ্ঞানীর চেষ্টা নয়-সমগ্র জাতিকে সচেতন করতে হবে। অনুধাবন করতে হবে বিজ্ঞানের গুরুত্বকে। মনে রাখতে হবে আমরা বসবাস করি বিজ্ঞানের একচ্ছত্র আধিপত্যের জগতে। আমাদের দেশের অগ্রগণ্য বিজ্ঞান পথিক অক্ষয় কুমার দত্ত, বিদ্যাসাগর ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। অন্যদিকে জগদীশচন্দ্র বসু, সত্যেন্দ্রনাথ বসু মেঘনাদ সাহা ও কুদরত-এ-খুদা প্রমুখ বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণার বাইরেও জনসাধারণকে বোধগম্য করার জন্য বিজ্ঞান নিয়ে লিখেছেন। আমাদের সাহিত্য দর্শন ইতিহাস ও সমাজের বিকাশের নিয়ম সবই বিজ্ঞানভিত্তিক হওয়া উচিৎ। যুব সমাজকে বিজ্ঞানমনস্ক করার জন্য কী দরকার।
আমাদের সমাজের কিশোর তরুণ ও ছাত্রদের শিক্ষার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তর থেকে বিজ্ঞানের প্রতি আকৃষ্ট করার তেমন বিশেষ কোন মাধ্যম বা ব্যবস্থা নেই। শ্রেণি কক্ষে বিজ্ঞানের যে পাঠ দেওয়া হয়-তা শুধু পরীক্ষায় পাশ ও নম্বর পাওয়ার জন্য পড়ানো হয়। ফলে বিজ্ঞান পড়ে কেউ ভেতর থেকে পরিবর্তন হওয়ার তাগিদ অনুভব করেন না। জন্মসূত্রেই মানুষ পরিচ্ছন্ন চিন Íার অধিকারী হতে চায়। কিন্তু আমাদের সমাজের প্রথাগত চিন্তা আমাদের তরুণদের মনের অজান্তেই কুপমন্ডক ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন চিন্তায় অভ্যস্ত করে দেয়। ফলে বিজ্ঞান পড়েও তার মনের কোন পরিবর্তন হয় না। এমনিতেই আমাদের দেশে বিজ্ঞান লেখক, বিজ্ঞানের বই ও বিজ্ঞান পত্রিকা নেই বললেই চলে। সহজ ভাষায় সাবলীল ভঙ্গিতে বিজ্ঞানের জটিল বিষয়গুলোকে তুলে ধরা হলে সহজেই তা বোধগম্য হয়। কিন্তু এরকম কোন দক্ষ ও চিন্তাশীল মানুষ বা শিক্ষক সমাজ আমাদের দেশে সৃষ্টি হচ্ছে না। শিক্ষক যদি বিজ্ঞান মনস্ক না হয়, তাহলে একজন শিক্ষক কী করে ছাত্রদের মনে বিজ্ঞানের গুরুত্বকে তুলে ধরবে? সমাজের সব মানুষকে কেন বিজ্ঞানমুখী করে তুলতে হবে আগে এই প্রশ্নের সমাধান দরকার। প্রতিটি মানুষকে কার্যকরণ সম্পর্কে অবহিত করে যে-কোন কাজের পেছনে যে যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকতে পারে, সে সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে তোলা। এতে করে শৈশব থেকেই মানুষ কুসংস্কারে বিশ্বাস করা থেকে কিছূটা দুরে থাকবে। সমাজ গতিশীল হবে। মানুষ একটি আনন্দের জগতকে খূঁজে পারে। মনস্তÍত্ত্বিক ভাবে আমরা সমৃদ্ধ হব।আমর সকলেই জানি যে মানুষ যে-পৃথিবীতে বাস করে তা রহস্যেঘেরা এক জটিল পৃথিবী। আদিম যুগে মানুষ পৃথিবীর কোন কিছুর রহস্য উদ্ঘাটন করতে না পেরে তাদের পুজো করত। কারণ তখন মানুষের জ্ঞানের কোন বিকাশ ঘটেনি। জ্ঞানের অভাবে মানুষ যা-তা বিশ্বাস করেছে। সূর্য্যকে দেবতা জ্ঞানে তাকে পুজো দিয়েছে। নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে ভুল ভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে তাকে বিধাতার অভিশাপ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। এই সব ক-ুচিন্তা পরিহার করে শৈশব থেকে যদি আমরা বিজ্ঞানের তথ্য ও বক্তব্যকে অন্তরে ধারণ করে সময়ের সাথে মিল রেখে চলতে পারি, তবে আমাদের পুরো প্রজন্ম অচিরেই নতুন প্রজন্মে পরিণত হবে। একজন উৎসাাহী তরুণ তার চঞ্চলতা ও অস্থিরতা নিয়ে যখন জীবনের গন্তব্য খুঁজে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে চায়-তখন তার সামনে থাকে না কোন সুষ্পষ্ট নির্দেশনা।
লেখক- জাহিদ হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত কৃষি ব্যাংক, কর্মকর্তা ।



