স্টাফ রিপোর্টার
শারদীয় দুর্গাপূজায় সংসদীয় চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের ৫৭টি পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ। গত সোমবার মহাসপ্তমী থেকে গতকাল বুধবার মহানবমী পর্যন্ত পরপর তিন দিন চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকাসহ সদর ও আলমডাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন তিনি। শুধুমাত্র মণ্ডপ পরিদর্শনই নয়, প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত অবধি পূজামণ্ডপ কমিটির নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ ভক্তদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নেন।
বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে তিনি ভক্তদের হাতে প্রসাদ গ্রহণ করেন, কারো হাতে ধূপকাঠি ধরেন, আবার কারো সঙ্গে সম্প্রীতির উষ্ণতায় আলাপচারিতায় মেতে ওঠেন। জেলা বিএনপির এই নেতার সহযোগিতা ও উপস্থিতিতে ভক্ত-আয়োজকদের মনে স্বস্তি ও আনন্দ ছড়িয়েছে।
শারদীয় দুর্গাপূজা ও চুয়াডাঙ্গা-১ সংসদীয় আসনের ৫৭টি পূজামণ্ডপ পরিদর্শন নিয়ে জানতে চাইলে শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, ‘আমাদের দেশ সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের জন্য একটি নিরাপদ আবাসভূমি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ব আমাদের জাতির শক্তি। শারদীয় দুর্গাপূজা সেই সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বিগত বছরের মতো এবারও আমি প্রতিটি মণ্ডপের পূজা আয়োজনে অংশগ্রহণ করেছি। ভক্ত-শুভার্থীরা যেন নির্বিঘ্নে পূজা করতে পারেন, সে জন্য আমরা পূজার আগেই প্রস্তুতিমূলক বৈঠক করেছি। জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা প্রতিটি মণ্ডপে দায়িত্ব পালন করছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের নেতা জননেতা তারেক রহমানের অনুপ্রেরণায় এ বছরেও এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তার পক্ষ থেকে পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরুর পূর্বেই উপহার-সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দকে আমি শুরুতেই অনুরোধ করেছিলাম ঐক্য ও শৃঙ্খলা বজায় রেখে পূজা উদ্যাপন করার জন্য। মণ্ডপ পরিদর্শনকালে আমি আনন্দিত হয়েছি, কারণ সবাই মিলে সুন্দরভাবে পূজা আয়োজন করছে।’
আগামীকাল বৃহস্পতিবার (আজ) বিজয়া দশমীতে দেবী দুর্গার বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের সমাপ্তি হবে উল্লেখ করে শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, ‘আমরা চাই, এ উৎসবকে ঘিরে ভ্রাতৃত্ব, সম্প্রীতি ও ঐক্যের যে ধারা তৈরি হয়েছে, তা যেন সারা বছর ধরে অব্যাহত থাকে। বিসর্জনের পরেও জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সেরা মণ্ডপ ও সেরা আয়োজনকে পুরস্কৃত করা হবে। এর মাধ্যমে আয়োজকরা ভবিষ্যতে আরও উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা পাবেন।’
তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক, বিএনপি সবসময় মানুষের সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কেউ যেন পূজা-পার্বণকে বিভাজনের অজুহাত বানাতে না পারে, সে বিষয়ে আমরা সর্বদা সজাগ। আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং জেলা বিএনপির পক্ষ থেকেও সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছি, ভবিষ্যতেও করব। চুয়াডাঙ্গায় এ সার্বজনীন আনন্দোৎসব আমাদের সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
এদিকে, পরপর তিনদিনে ৫৭টি পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী জেলা বিএনপির নেতা শরীফুজ্জামা শরীফের সফরসঙ্গী ছিলেন জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনসহ বিভিন্ন বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক নেতা-কর্মী ও তার শুভাকাঙ্খীরা। গতকাল মহানবমীতে এই নেতার সফরসঙ্গী ছিলেন আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান পিণ্টু, যুগ্ম সম্পাদক মাহাবুল মাস্টার, পূজা উদ্যাপন কমিটির সমন্বয়ক হেমন্ত কুমার সিংহ রায়, জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম, চুয়াডাঙ্গা জেলা দোকান মালিক সমিতির সদস্যসচিব সুমন পারভেজ খান, পূজা উদ্যাপন ফ্রন্টের সদস্যসচিব হিরা লাল দেবনাথ ও আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার কাজী সাচ্চু।
আরও উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মীর উজ্জ্বল, আলমডাঙ্গা পৌর যুবদলের সদস্যসচিব সাইফুল আলম কনক, আলমডাঙ্গা পৌর পূজা উদ্যাপন পরিষদ নেতা ডা. অমল বিশ্বাস, পরিমল কালু ঘোষ, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি, সিনিয়র সহসভাপতি রাফিতুল্লাহ মহলদার, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক পল্টু, জেলা মৎস্যজীবী দলের সাবেক আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক বকুল, জেলা যুবদলের দপ্তর সম্পাদক মামুনুর রশীদ টনিক, আলমডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল রানা, সদস্যসচিব রাসেল আহমেদ, পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আতিক হাসান রিংকু, সদস্যসচিব তন্ময় আহমেদ, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব জাকারিয়া হোসেন শান্ত, চুয়াডাঙ্গা পৌর ছাত্রদলের সদস্য শাহারু আহমেদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের ৫৭টি পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করলেন শরীফুজ্জামান শরীফ
