অনুপ্রবেশের মধ্যেই আজ শুরু রোহিঙ্গা ফেরানোর সম্মেলন

অনলাইন ডেস্ক


প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা আট বছরেও নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরতে পারেনি। উল্টো তাদের অনুপ্রবেশ অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ এখন আরাকান আর্মির হাতে, যা প্রত্যাবাসনের পথ আরও কঠিন করে তুলেছে। এমন পরিস্থিতিতে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দিকে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি ফেরাতে আজ রবিবার কক্সবাজারে শুরু হচ্ছে তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন। এ আয়োজনের আগেই বড় ধরনের সংঘাতের শঙ্কায় রাখাইনের বাড়িঘর ছেড়ে বাংলাদেশে প্রবেশের আশায় সীমান্তে অবস্থান করছেন হাজারো রোহিঙ্গা। এপারে ভেসে আসছে ওপারে সংঘাতের গোলাগুলির শব্দ। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে টেকনাফ সীমান্তে টহল জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

স্থানীয়দের ভাষ্য, টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং সীমান্তের ওপারে শুক্রবার রাত থেকে শুরু হওয়া গোলাগুলি শনিবার ভোর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। সীমান্তের ওপারে কুমিরখালী, শীলখালী ও সাইডং এলাকায় গোলাগুলি চলে।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সিরাজুল মোস্তফা চৌধুরী লালু বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ফের গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত থেমে থেমে সীমান্তের ওপারে কুমিরখালী, শীলখালী ও সাইডং এলাকা থেকে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। ভয়ে সীমান্তের কাছাকাছি চিংড়ির প্রজেক্টে থাকা লোকজন পালিয়ে এসেছে।

রাখাইন রাজ্যের দখলদার সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর গোলাগুলি ও সংঘর্ষ চলছে। নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হওয়ায় ওইসব এলাকার রোহিঙ্গারা ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। অনেকে নৌকায় নাফ নদ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছেন।

উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতা মো. হোসাইন বলেন, রাখাইনে এখনো অমানবিক নির্যাতন বন্ধ হয়নি। ফলে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে আসা বন্ধ হচ্ছে না। মূলত প্রাণে বাঁচতে তারা এপারে পালিয়ে আসার চেষ্টা করছে। সীমান্তে বেশ কিছু রোহিঙ্গা জড়ো হচ্ছে বলে আমরাও স্বজনদের কাছ থেকে জেনেছি।

বিজিবি সূত্র জানায়, শুক্রবার ৬২ জন রোহিঙ্গাকে প্রতিহত করা হয়েছে। এরপরও সীমান্তের ওপারে হাজারো রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে।

টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, কিছু লোক সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা কাউকে ঢুকতে দিচ্ছি না। যেসব পয়েন্ট দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করছে, সেখানে আমরা টহল বাড়িয়েছি। মূলত ক্যাম্পের দালালসহ একটি চক্র মিলে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে রোহিঙ্গা পারাপারের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা দালাল চক্রটি ধরতে অভিযান চালাচ্ছি। তাছাড়া গত রাতে সীমান্তের ওপার থেকে গোলার শব্দের বিষয়টি জেনেছি।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, সীমান্তে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *