স্টাফ রিপোর্টার
চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এসএসসি ২০২৫ কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯ টায় চুয়াডাঙ্গা চেম্বার ভবনে এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষায় এ প্লাস প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। জেলার ২৫০ জন কৃতি শিক্ষার্থীকে সম্মাননা হিসেবে ক্রেস্ট ও পুরস্কার প্যাকেজ প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি সাগর আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় ছাত্র অধিকার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আমীর এ্যাড. রুহুল আমিন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় গবেষণা সম্পাদক মুঃ ফখরুল ইসলাম, সাবেক কেন্দ্রীয় পরিষদ সদস্য ও জামায়াতে ইসলামী চুয়াডাঙ্গা জেলা সহকারি সেক্রেটারি এ্যাড. মাসুদ পারভেজ রাসেল এবং চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মাহাবুবুর রহমান মিলন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি আমিরুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ফ্যাসিস্ট সরকারকে যেভাবে এ দেশের ছাত্রসমাজ রাস্তায় নেমে প্রতিরোধ করেছে এবং অবশেষে এদেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে তা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবময় অধ্যায়। আগামী দিনে এ দেশের ছাত্রসমাজ আর কোনো শক্তির কাছে মাথা নত করবে না। সত্য, ন্যায় ও জনগণের অধিকারের জন্য তারা সর্বদা দৃঢ় অবস্থান নেবে।
তিনি সতর্ক করে দিয়ে আরও বলেন, যদি মাসাল পাওয়ার দিয়ে রাজনীতি করা হয়, তবে তার পরিণতিও হবে আজকের ফ্যাসিস্ট সরকারের মতো করুণ ও লজ্জাজনক।
বাংলাদেশ ছাত্র শিবিরের লক্ষ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা এমন একদল তরুণ তৈরি করতে চাই, যারা হবে সৎ, দক্ষ, যোগ্য ও নৈতিকতাসম্পন্ন—যারা আগামীর বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে এবং বিশ্ব দরবারে দেশের মর্যাদা উজ্জ্বল করবে।
এর সাথে তিনি আরও বলেন, মেধাবী হওয়ার পাশাপাশি তোমাদের দেশপ্রেমিক হতে হবে এবং সত্যিকার অর্থে সুন্দর মানুষ হতে হবে। সুন্দর মানুষের গুণাবলীর মধ্যে রয়েছে—সত্যবাদিতা, ন্যায়পরায়ণতা, নৈতিকতা ও ন্যায়ের প্রতি অবিচল অবস্থান। এই গুণগুলো নিজেদের মাঝে ধারণ করতে হবে।
তোমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি। কেবল মেধার সম্মান বা সংবর্ধনা পাওয়ার জন্য নয়, বরং প্রকৃত সাফল্যের জন্য পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে হবে এবং নৈতিক শিক্ষার পরিধি আরও বাড়াতে হবে।”
প্রধান আলোচক মো. রুহুল আমিন বলেন,
বাংলাদেশে গোল্ডেন এ প্লাস কিংবা এ প্লাস পাওয়া অনেক শিক্ষার্থী পরবর্তীতে দক্ষ চিকিৎসক ও প্রকৌশলী হয়েছেন। তাদের জ্ঞানের ঘাটতি নেই, কিন্তু দুঃখজনকভাবে অনেক সময় দেখা যায়—একজন চিকিৎসক বিনা কারণে রোগীকে অতিরিক্ত পরীক্ষা করাচ্ছেন, একজন প্রকৌশলী মানসম্মত রডের পরিবর্তে নিম্নমানের বাস ব্যবহার করছেন। জ্ঞান তাদের আছে, কিন্তু অভাব রয়েছে নৈতিকতার।
এই নৈতিকতা অর্জন করতে হলে আমাদের কোরআন পড়তে হবে, কোরআন জানতে হবে এবং কোরআন বুঝতে হবে। একসময় বাংলাদেশে প্রতি ১০০ জনে প্রায় ৬০ জন কোরআন পড়তে পারতেন অথচ আজ সে সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে হয়তো ৭ জনেরও নিচে।
তাই যেমন মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করে আপনারা গোল্ডেন এ প্লাসের সম্মাননা পাচ্ছেন, তেমনি কোরআন শিখে ও বুঝে আখিরাতেও সম্মানিত হওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে।
অতিথিদের আলোচনা শেষে চুয়াডাঙ্গা জেলার ২৫০ জন এসএসসি কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্রেস্ট ও উপহার সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।