আলমডাঙ্গা অফিস
আলমডাঙ্গা উপজেলার কালিদাসপুর ইউনিয়নের আসাননগর গ্রামে স্বাধীনতার পর থেকে আজ অবধি উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। গ্রামটির প্রধান সড়ক ও একমাত্র মসজিদে যাওয়ার পথটি দীর্ঘদিন ধরে ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে সাধারণ মানুষের যাতায়াতে নিত্যদিনের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গ্রামবাসীর অভিযোগ, প্রতি নির্বাচনের সময় প্রার্থীরা নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও ভোট শেষে সেই প্রতিশ্রুতিগুলো আর বাস্তবে রূপ নেয় না। বরং অনেক সময় উল্টো হুমকি-ধামকির মুখে পড়তে হয় এলাকাবাসীকে। স্থানীয়দের মতে, রাজনৈতিক সুবিধা না পাওয়ায় আসাননগর গ্রামটি বছরের পর বছর অবহেলিত থেকে গেছে।
ব্যক্তিগত উদ্যোগে এক আমেরিকান প্রবাসী মোহাম্মদ আজিম গ্রামটির মাঝামাঝি স্থানে একটি বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণ করলেও, রাস্তার দুরাবস্থার কারণে তা আজও কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। ২০১৭ সালে আসাননগর-বকসীপুর এলাকায় কুমার নদের ওপর একটি সেতু নির্মিত হলেও, সংযোগ সড়ক সংস্কার না হওয়ায় সেটিও এখন প্রায় অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে।
এলাকার তরুণরা জানিয়েছেন, তারা নিজেরাই স্বেচ্ছাশ্রমে মাঝে মাঝে ইটের সুরকি ও বালু ফেলে চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করেন, কিন্তু বড় ধরনের সংস্কারের ব্যয়ভার তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। বর্ষার সময় কাদা ও জলাবদ্ধতায় গোটা পথ ডুবে যায়, তখন মোটরসাইকেল, রিকশা-ভ্যান তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটেও চলাচল করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে।
গ্রামের বিভিন্ন স্থানে দেখা যায় কোথাও মাটি, কোথাও ভাঙা কংক্রিটের স্তূপ। স্কুলে যাওয়া শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে নামাজে যাওয়া মুসল্লিদেরও পড়তে হয় চরম দুর্ভোগে। এ বিষয়ে কালিদাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুল হক মিকা-এর সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি বরাবরের মতো উন্নয়নের আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবে রূপ নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
গ্রামবাসীর এক প্রবীণ সদস্য বলেন, আমরা বারবার জনপ্রতিনিধিদের জানিয়েছি, কিন্তু কেউ রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেননি। এখন প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপই আমাদের শেষ আশা।
আসাননগরের মানুষ আজও অপেক্ষায় — কবে দেখা মিলবে উন্নয়নের আলোর, কবে মসজিদে যাওয়ার পথ হবে চলাচলযোগ্য। দীর্ঘদিনের অবহেলার পর এই গ্রামের মানুষের একটাই দাবি রাস্তাটা সংস্কার হোক, আমরাও যেন ফিরে পাই আলোর দেখা।



