জীবননগর পৌর বিএনপি আয়োজিত জনসভায় জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু

জীবননগর অফিস
চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেছেন, আপনারা জানেন একটি দীর্ঘ সংগ্রাম, অর্থাৎ ১৭ বছরের সংগ্রামের পরে ছাত্র-জনতা যখন চূড়ান্তভাবে এই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে, তার ফলাফলের ভিত্তিতেই ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারি সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যান। আমরা এখানে যারা উপস্থিত আছি, অধিকাংশ জিয়ার সৈনিক। বেগম খালেদা জিয়ার কর্মী এবং তারেক রহমানের সহকর্মী। আমাদের নেতা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কী শিক্ষা দিয়েছিলেন? তার অনেকগুলো গুণ, তারমধ্যে অন্যতম প্রধান গুণ ছিল সততা, নিষ্ঠা এবং কর্মপরিশ্রম, আর চার নম্বর হলো ইমানদারি। শুক্রবার বিকেলে জীবননগর মুক্তমঞ্চে জীবননগর পৌর বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা বিএনপির সভাপতি আরও বলেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি আজ দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে অবিচল। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা এবং ৩১ দফা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই দেশকে আবারও সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। সাধারণ জনগণ বিএনপির মূল শক্তি। আগামী জাতীয় নির্বাচনে আপনাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে ধানের শীষ কে বিজয়ী করবেন এটাই আপনাদের কাছে প্রত্যাশা। আগামী দিনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠপুত্র আমার নেতা তারেক রহমান বাংলাদেশের নেতৃত্বে আসবেন এবং জনগণের ওপর নির্ভর করে দেশকে এগিয়ে নেবেন।
বাবু খান বলেন- আমি আমার আগের অনেক বক্তব্যে বলেছি, আমরা যারা জিয়ার সৈনিক, গত ১৭ বছরে আমরা ইমানদারির পরীক্ষা দিয়েছি। কী করেছি? আমরা শত অত্যাচার নিপিড়নের মধ্যে দল পরিবর্তন করি নাই, কী করেছি? আমরা আমাদের ইমান বিক্রি করেছি? আমরা আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে ইস্পাত কঠিন ঐক্য বজায় রেখে ১৭ বছর ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে আগস্ট মাসের ৫ তারিখে আমাদের ফলাফল পেয়েছি।  
বিজিএমইএর সভাপতি বাবু খান বলেন, আমি যখন ছোট আকারে কর্মীদের সঙ্গে কথা বলি, তিনটা কথা বলি, এই দেশে দুজন স্বৈরাচার। একজন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যিনি তার কর্মকাণ্ডের কারণে জনরোষের মুখে গদি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি দেশে থাকতে পেরেছিলেন এবং রাজনীতি করতে পেরেছিলেন। কিন্তু ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা জনরোষ ও ছাত্র আন্দোলনের মুখে গদি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন এবং দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। ভবিষ্যতে আমাদের মধ্য থেকে যে দলেরই হোক, নতুন করে যদি ফ্যাসিস্ট তৈরি হয় তাহলে তার পরিণিত কী হবে? পালিয়ে যেতেও পারবে না। ওই জায়গায়ই জীবন দিতে হবে। এটাই হচ্ছে আগামীদিনের ফ্যাসিস্টের পরিণতি।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি নিজেদেরকে জিয়ার সৈনিক মনে করি, বেগম জিয়ার কর্মী মনে করি, মনে করি তারেক রহমানের সিপাহশালা তাহলে জনগণের সাথে থাকতে হবে, জনগণের ভালোবাসা অর্জন করতে হবে। জনগণের উপকার করতে পারলে করবেন কিন্তু জনগণের কোনো অপকার করবেন না। যদি এটা আমরা বজায় রাখতে পারি, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে যেই নির্বাচন, সেই নির্বাচনে মানুষ কোথায় ভোট দেবে? ধানের শীষে। আমাদের নতুন একটি প্রতিদ্বন্দ্বী দল দাঁড়িয়েছে, কি বলছে? ইতিমধ্যে আমার অনেক ভাইয়েরা বলেছেন মিথ্যা কথা বলা মিথ্যা বিষাদি করার দিন শেষ। নতুন প্রজন্ম শিক্ষিত। পুরোনো প্রজন্ম অনেক অভিজ্ঞ। ভোটের বিনিময়ে জান্নাতও পাওয়া যায় না। বেহেশতও পাওয়া যায় না। একটা প্রশ্ন করবেন ওনাদের কে একটা প্রশ্ন করবেন, যারা ভিন্ন ধর্মের অর্থাৎ হিন্দু, বৌদ্ধ, খিষ্ট্রান যারা ভাই ও বোনেরা আছেন। তারা যদি ওই মার্কায় ভোট দেয় তারা কী বেহেশত যাবে? মার্কায় ভোট দিয়ে বেহেশত যাওয়া যাবে না।
জীবননগর পৌর বিএনপির সভাপতি শাহজাহান কবীরের সভাপতিত্ব মুক্তমঞ্চের জনসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পৌর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি তাজুল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিউদ্দিন শফি, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দীন ঠান্ডু। জীবননগর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সামসুজ্জামান ডাবলুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পৌর যুবদলের আহ্বায়ক হযরত আলী সরকার, সদস্যসচিব মনিরব হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আরসাফ হোসেন, সদস্যসচিব সুমন বিশ্বাস, কৃষক দলের আহ্বায়ক ইউনুচ আলী, সদস্যসচিব নাজমুল সবুর, মৎস্যজীবী দলের সভাপতি জাহিদ হোসেন, পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক কিরণ হাসনাত রাসেল, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রিমন, ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম, জীবননগর উপজেলা বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি রমেন বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক সাগর বিশ্বাসসহ পৌর, ওয়ার্ড বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *