দর্শনা অফিস
দর্শনায় চোর সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবককে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। গত রবিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে দর্শনা রেলগেট এলাকায় একটি মোটরসাইকেলে হাত দিলে স্থানীয়রা ইয়ামিন মিয়া (২৯) নামে এক যুবককে চোর সন্দেহে আটক করে বেধড়ক মারধর করে। খবর পেয়ে দর্শনা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ লক্ষ্য করে, তিনি বারবার নিজের নাম ও ঠিকানা পরিবর্তন করছেন। কখনো নাম বলেন ইয়ামিন, বাবার নাম জিলু মিয়া বা ঝিরু মিয়া, আবার কখনো ঠিকানা দেন গাজীপুর, শেরপুর কিংবা চান্দুরা। তার কথাবার্তা অসংলগ্ন হওয়ায় পুলিশ নিশ্চিত হয়, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। বিস্তারিত অনুসন্ধান চালিয়ে জানা যায়, ইয়ামিন মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। কাজের সময় দুর্ঘটনায় পড়ে মানসিক ভারসাম্য হারান। এর আগেও একাধিকবার তিনি বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন এবং পরিবার খুঁজে ফিরিয়ে এনেছিল। পরে দর্শনা থানা পুলিশ তার পরিবারকে খুঁজে বের করে গতকাল সোমবার দুপুরে ইয়ামিনকে তার মা-বাবার হাতে তুলে দেয়।
দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শহীদ তিতুমীর বলেন, প্রথমে আমরা তাকে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে পাই। কিন্তু কথোপকথনে বুঝতে পারি তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ। তখন মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিষয়টি বিবেচনা করি। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর তার পরিবারকে শনাক্ত করে ফিরিয়ে দিই। তিনি আরও বলেন, আইন কখনোই নিজের হাতে তুলে নেওয়া উচিত নয়। যা দেখা যায়, তা সব সময় সত্য নাও হতে পারে।