ঝিনাইদহে মালিকানা জটিলতায় ঝুলে আছে ইলা মিত্র স্মৃতি সংরক্ষণশালার কাজ

ঝিনাইদহ অফিস

ভারত ও বাংলাদেশের এক কিংবদন্তী নারী নেত্রী ইলা মিত্র। তেভাগা আন্দোলন, নারীর শিক্ষা, কৃষকের অধিকার রক্ষায় নেতৃত্ব দেয়া, খেলাধুলাসহ নানাবিধ প্রতিভার অধীকারি তিনি। কলকাতায় জন্মনেয়া এই নারী নেত্রীর ছোটবেলার বেশ কিছুটা সময় কেটে ঝিনাইদহের পৈত্রিক ভীটা বাগুটিয়ায়। কিন্তু আজ তার সে স্মৃতি ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে। মালিকানা জটিলতায় থেমে আছে ”ইলা মিত্র স্মৃতি সংরক্ষণশালার” কাজ। স্থানীয়দের দাবী দ্রুতই যেন সরকারি হস্তক্ষেপ হয় সেখানে।

গতকাল রবিবার দৈনিক আজকের চুয়াডাঙ্গা পত্রিকার ঝিনাইদহ প্রতিনিধি বাড়িটি পরিদর্শনকালে দেখতে পায় জরাজীর্ণ ও কর্দমাক্ত মেঠো রাস্তার পাশেই ভগ্নদশায় দন্ডায়মান একটি দুতলা ভবন। যেটি দুরদুরান্ত থেকে প্রতিদিন দেখতে আসতেন অসংখ্য ভ্রমনপিপাসুরা। তবে যাতায়াতের উপযোগী রাস্তা না থাকা ও ভবনটি ঝুকিঁপূর্ণ হওয়ায় কমেছে পর্যটক। এ ভবনটিতে শৈশব কেটেছে ভারতীয় নারী নেত্রী ইলা মিত্রের। অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে থেকে অস্তিত্ব বিলিন হওয়ার উপক্রম হয়েছে এটির। ইতোমধ্যে একটি ভবনের ছাদ ভেঙ্গে পড়ে বেরিয়ে এসে লোহার পাত ও কাঠ। বিভিন্ন দেয়ালে ধরেছে ফাটল। এখানে রয়েছে ১৭ শতক জমির উপর দুতলা ও একতলা বিশিষ্ট দুটি ভবন যার রয়েছে একটি প্রধান ফটক ও ৭টি কক্ষ।

স্থানীয়রা বলছে তেভাগা আন্দোলনের নেত্রী নাচোলের রাণী খ্যাত ইলা মিত্রের পৈত্রিক নিবাস ও তেভাগা আন্দোলন আজ কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে। এখনই সরকারি হস্তক্ষেপ না হলে তেভাগা ও ইলা মিত্রের ইতিহাস ঐতিহ্য থেকে বঞ্চিত হবে নতুন প্রজন্ম। এটি নতুন করে সংস্কার ও ইলা মিত্র স্মৃতি সংরক্ষণশালা করলে স্থানীয় উন্নয়ন হবে বলে মন্তব্য করেন এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা মুদি দোকানী আব্দুস সবুর বলেন, ইলা মিত্রের কথা আমার বাপ দাদার মুখে শুনেছি তিনি খুবই বিখ্যাত একজন মানুষ তার এ পৈতিৃক নিবাসটি যদি যাদুঘর করা যায় তাহলে এলাকায় নতুন নতুন ব্যাবসায় বাণিজ্য গড়ে উঠবে এতে করে এ এলাকার সুনাম বৃদ্ধি পাবে। এদিকে পৈত্রিক ক্রয় সূত্রে পাওয়া বাড়িটি ব্যাবহার করছেন, জাহাঙ্গীর আলম ও তার তিন ভাই তারা দাবি করেন এ বাড়িটি সরকারিভাবে নিয়ে এক ইলামিত্রের সংরক্ষণশালা করা হোক তবে তাদের সকল ভাইকে র্পুনঃবাসন করতে হবে।

তবে সরকারি বরাদ্দের বাইরে গিয়ে র্পুুনঃবাসন জটিলতায় মালিকানা সত্ব না ছাড়ায় এখনও শুরু হয়নি ইলা মিত্র স্মৃতি সংরক্ষণশালার কাজ। সরকারিভাবে সরেজমিন ঘুরে দেখে এসছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নিগ্ধা দাস। বাংলাদেশ প্রত্নতাত্বিক বিভাগের নির্দেশনা পেলেই কাজ শুরু করার আশ্বাস তার।

১৯৪৬ সালের তেভাগা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া ইলা মিত্র ২০০২ সালের ১৩ই অক্টোবর ইন্তেকাল করেন। ৭৬ বছরের জীবনীতে ইলা মিত্র তেভাগা আন্দোলন, কৃষক সংগ্রাম, খেলাধুলা, গান, অভিনয়সহ নানা সাংস্কৃতিমূলক কর্মকান্ডের জন্য ভারতসহ বাংলাদেশে বিখ্যাত হয়ে ওঠেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *