স্টাফ রিপোর্টার
চুয়াডাঙ্গায় বেড়েই চলেছে সব ধরনের সবজির দাম। এতে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ।
জেলার ৪ উপজেলায় চলতি বর্ষা মৌসুমে টানা বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সবজি চাষিদের। ধারাবাহিক বৃষ্টিপাতের কারণে সব ধরনের সবজি ক্ষেত অনেকটা নষ্ট হয়ে গেছে। নিচু জমির সবজি ও ফসল পানির নিচে ডুবে গেছে।
বৃষ্টির প্রভাবে ফসলের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বেড়েছে সব ধরনের সবজির দাম। সবজির মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বেগুনের দাম। চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন বাজারে বেগুন বেচাকেনা হচ্ছে ১০০/১২০ কেজি দরে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পটোলের দাম বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। অর্থাৎ ৩০ টাকার পটল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। বর্তমানে পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে। বর্ষার শুরু থেকে বাজারে কাঁচা মরিচের ঝাঁজ রয়ে গেছে। কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৮০/২০০ টাকা কেজি দরে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারের সব সবজির দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এতে করে বিপাকে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষেরা। পকেটের টাকা শেষ গেলেও বাজারের প্যাকেট ভর্তি হচ্ছে না।
গতকাল বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গার বড় বাজার পাইকারি আড়ত ঘুরে দেখা গেছে বেগুন প্রতি কেজি ৯০/১০০ টাকা, পেয়াজ ৭৪/৭৫ টাকা, পটল ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২০/২৫ টাকা, লাউ প্রতি পিচ প্রকার ভেদে ২৫/৩৫ টাকা, করলা ৮০/৯০ টাকা, পেঁপে ১৫/২০ টাকা, পুইশাক প্রতি আটি ২০/২৫ টাকা ও লাল শাক প্রতি আটি ১৫/২০ টাকা দরে বেচাকেনা হচ্ছে।
আমাদের প্রতিনিধি হাসান নিলয় জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার জীবননগর উপজেলার শিয়ালমারি পশুহাটের কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির দাম বেড়ে যাওয়ার কারনে ক্রেতাদের মধ্যে অস্বস্তি বিরাজ করছে। বেগুন প্রতি কেজি ১০০-১২০ টাকা, কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, পটোল ৬০ টাকা, ধেঢ়োস ৫০ টাকা, করোলা ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, কাঁচকলা ৫০ টাকা, শশা ৬০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, লাউ ১ পিচ ৫০ টাকা, লালশাক ১৫-২০ টাকা আটি বিক্রি হচ্ছে। কয়েকদিনের ব্যবধানে এই সবজি গুলোর দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেড়েছে। অপরিবর্তিত আছে আলু, রসুন, শুকনা মরিচ ও মিষ্টি কুমড়ার দাম। তবে কমেছে কচু ও আমড়ার দাম।প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা।
এদিকে স্বস্তি নেই মাছের বাজারেও। ছোট সাইজের পোনা ও তেলাপিয়া মাছ ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রুই, কাতলা মৃগেল প্রতি কেজি ৩০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট সাইজের জাটকা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি। তবে কিছুটা দাম কম আছে পাঙ্গাশ মাছের।
বাজার করতে আসা আইয়ুব আলী বলেন, বাজার করার জন্য যে টাকা গুলো এনেছিলাম তা কাঁচা বাজার করতে গিয়ে শেষ হয়ে গেছে। মাছ ও অন্যান্য কিছু কেনা সম্ভব হচ্ছে না। সবজি বিক্রেতা জাকির আলী বলেন, টানা বৃষ্টিতে সবজি চাষে অনেক ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া বৃষ্টির কারনে সবজি সঠিকভাবে পরিবহন হচ্ছে না। যার কারনে মোকামে সবজি কম থাকায় বেশি দামে কিনে আনতে হচ্ছে।
ক্রেতারা সবজির দাম বৃদ্ধির জন্য বাজার সিন্ডিকেটকে কে দায়ী করছেন। বাজার সেন্টিগ্রেড ভেঙ্গে সবজির দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।
চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার কাঁচা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলম হোসেন বলেন, অতিবৃষ্টির কারনে গাছ মরে যাচ্ছে, এ কারনে সবজির উৎপাদন কম হচ্ছে। কিছু দিন থেকে বাজারে সবজির আমদানি অনেক কমে গেছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে সবজির দাম আরো বাড়তে পারে।