জীবননগরের ঋণের টাকা না পেয়ে ঋণগ্রহীতাকে, অন্ধকারে তালাবদ্ধ করে রাখলেন মাঠকর্মী

জীবননগর অফিস

জীবননগর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন(বিআরডিবি) কার্যালয়ে ঋণের টাকা না পেয়ে ঋণগ্রহীতা নুর নাহার (৪৭) খাতুনকে রাতের অন্ধকারে অফিসের বারান্দায়  আটকে রাখার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, জীবননগর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন (বিআরডিবি) মাঠকর্মী আবেদা সুলতানা ১১ বছর যাবত অফিসে কর্মরত রয়েছেন। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের লালচাও থানার ইসলামপুর গ্রামের মতিয়ার হোসেনের স্ত্রী। পরবর্তীতে তিনি ২০২৪ সালে উপজেলার বাঁকা গ্রামের মৃত ইব্রাহিম হোসেনের স্ত্রী নুরনাহার খাতুন (৪৭) কে তিন নামে তিন লক্ষ টাকা ঋণ প্রদান করেন। যার মেয়াদ এ বছর এপ্রিলের শেষ হয়। কিন্তু অফিস এখনো তার কাছে ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা পাওনা হয়। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি ১০ হাজার টাকা নিয়ে অফিসে আসেন। কিন্তু মাঠ কর্মী আবেদা সুলতানা জানান যেহেতু ঋণের মেয়াদ শেষ তাই এখনই টাকা দিয়ে যেতে হবে। কিন্তু তার কাছে টাকা না থাকায় তিনি তাকে বিআরডিবি অফিসের বারান্দায় রাতের অন্ধকারে তালাবদ্ধ রেখে বাসায় চলে যান। পরবর্তীতে স্থানীয়রা পুলিশের খবর দিলে পুলিশ এসে ওই বৃদ্ধ মহিলাকে উদ্ধার করে।

আর এ বিষয়ে মাঠ কর্মকর্তা আবেদা সুলতানা বলেন, আমি তার কাছে ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা পাই। কিন্তু সে কিস্তি দিচ্ছে না। যার কারনে অফিস আমার বেতন থেকে টাকা কেটে নিচ্ছে। যার কারনে আমি তাকে আটকে রেখে তার পরিবারের লোকজনের খবর দেই যাতে তারা টাকার নিশ্চয়তা দিয়ে নুরনাহার কে নিয়ে যায়।

এদিকে ঋণ গ্রহিতা নুরনাহার জানান, আমি অসুস্থ থাকার কারণে কিস্তির টাকা দিতে পারি নাই। তবে তার কাছে আমি তিন সপ্তাহের সময় চেয়েছি কিন্তু সে আমাকে সময় না দিয়ে রাতের অন্ধকারে আমাকে অফিসের বারান্দায় অন্ধকারে তালাবদ্ধ করে আটকে রাখে।

বিআরডিবি প্রধান কর্মকর্তা তারিক জামাল জানান, নুরনাহার তিন লক্ষ টাকা ঋণ নেয়। মেয়াদ শেষ হলেও সে টাকা পরিশোধ করে না। পরবর্তীতে আজকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে অফিসে আসে। এরপর আমরা তাকে বলি তাদের পরিবারের লোকজন ডেকে নিয়ে এসে টাকার ব্যাপারে মীমাংসা করতে । কিন্তু সে পরিবারের লোকজনকে না ডেকে পুনরায় সময় চায়। এজন্য আমরা তাকে রেখে দিয়েছি। কিন্তু তালাবদ্ধ অবস্থায় অন্ধকারে আছে এটা আমার জানা ছিল না।

আর এ বিষয়ে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ মামুন হোসেন বিশ্বাস জানান, আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সেই সাথে বৃদ্ধ মহিলাকে উদ্ধার করে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করি। এছাড়াও এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত থানায় লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *