দর্শনা হল্ট স্টেশনে দুইটি ট্রেনের স্টপেজের দাবিতে মানববন্ধন

দর্শনা অফিস

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা হল্ট স্টেশনে ঢাকাগামী যাত্রীবাহি সুন্দরবন ও খুলনাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের স্টপেজের দাবিতে রেলপথ অবরোধ করেছে স্থানীয়রা। মঙ্গলবার দুপুর ২ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত দর্শনা রেলস্টেশনে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন থামিয়ে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। দর্শনা সরকারি কলেজ ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, সাধারণ শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সাধারণ জনতার এই আন্দোলনে অংশ নেয়।  এতে ভোগান্তিতে পড়েন শত শত রেলযাত্রী সহ দর্শনা-হিজলগাড়ি সড়কে চলাচলরত যান বাহন।

আন্দোলনকারীরা জানান, ঢাকা-খুলনার মধ্যে চলাচলকারী সবকটি ট্রেন দর্শনা স্টেশনে দিনের বেলায় স্টপেজ দিলেও রাতের বেলায় সুন্দরবন ও চিত্রা এক্সপ্রেস যাত্রা বিরতি নেই। এতে দর্শনা ও আশপাশের এলাকার মানুষের রাতের বেলায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এজন্য দীর্ঘদিন ধরে দর্শনায় দুটি ট্রেনের স্টপেজের দাবি জানানো হচ্ছে। বারবার আশ্বাস দিলেও কোন সমাধান মেলেনি। এদিকে ট্রেন অবরোধের খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছান দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তিথি মিত্র ও দর্শনা থানার ওসি শহীদ তিতুমীর। তবে আন্দোলনাকরীরা তাদের আশ্বাস মানেনি। ফলে ইউএনও এবং ওসি ফিরে যান। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ৭ দিনের মধ্যে দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে কর্মসূচি স্থগিত করেন আন্দোলনকারীরা। অন্যদিকে দুপুর সাড়ে তিনটায় ঢাকাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন অবরোধের কারনে উথলী  স্টেশনে আটকে পড়ে ছিল।

রেলপথ অবরোধের বক্তব্য রাখেন, দর্শনা পৌর বিএনপির সমন্বয় কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান বুলেট, দর্শনা সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আওয়াল হোসেন, দর্শনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি  মনিরুজ্জামান ধীরু, মোঃ হানিফ মন্ডল, দর্শনা ডিএস ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা প্রিন্সিপাল মাওলানা শফিউদ্দিন , দর্শনা পৌর পুরাতন বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক সোহেল, মুনিম লিংকন, মোহন, চুয়াডাঙ্গা জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ন আহ্বায়ক তানভীর অনিক, আবিদ হাসান রিফাত, সহ সদস্য সচিব তৌহিদ ইসলাম, দর্শনা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব পলাশ আহমেদ, কলেজ ছাত্র শিবিরের সাধারণ সম্পাদক হামজা ফরাজি প্রমুখ।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ন আহবায়ক তানভীর অনিক জানান, ঢাকা-খুলনার মধ্যে চলাচলকারী সবকটি ট্রেন দর্শনা স্টেশনে দিনের বেলায় স্টপেজ দিলেও রাতের বেলায় সুন্দরবন ও দিনের বেলায়  চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন দাঁড়ায় না। এতে দর্শনা ও আশপাশের এলাকার মানুষের  চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এজন্য দীর্ঘদিন ধরে দর্শনায় দুটি ট্রেনের স্টপেজের দাবিতে রেলপথ অবরোধ, অবস্থান ধর্মঘট ও সমাবেশ বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। বারবার আশ্বাস মিললেও কোন সমাধান মেলেনি। ট্রেনের  স্টপেজ না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চালবে।

দর্শনা পৌর বিএনপির সমন্বয় প্রধান সমন্বয় হাবিবুর রহমান বুলেট বলেন, দেশের অন্যতম ভারী চিনি শিল্প কারখানা, আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট, রেলবন্দর ও সীমান্ত এলাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান দর্শনা। এখানে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ আসা যাওয়া করে। এখান থেকে অনেক মানুষ বিভিন্ন স্থানে যান। কিন্তু এই সমৃদ্ধ এলাকাকায় ট্রেন না দাঁড়ানোর কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয় এই অঞ্চলের মানুষের। অবিলম্বে এখানে ঢাকাগামী সুন্দরবন ও খুলনাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের স্টপেজ দিতে হবে। না হলে আগামিতে দল মত নির্বিশেষে সকলকে সাথে নিয়ে রেলপথ অবরোধ ঘোষণা দেন।

পরে চুয়াডাঙ্গা সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন সৌমিক আহমেদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। শিক্ষার্থী ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে আগামী ৭ দিনের মধ্যে দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে কর্মসূচি স্থগিত করেন আন্দোলনকারীরা। প্রায় ২ ঘণ্টা পর চালু হয় রেল যোগাযোগ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *