দর্শনা অফিস
দর্শনায় জুলাই বিপ্লবে শহীদ মাসুদ রানার পরিবারের হাতে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা তুলে দিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আমীর ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অ্যাড. রুহুল আমিন। আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের নির্দেশনায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দর্শনা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আজমপুর মহল্লায় শহীদের শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে শহীদের স্ত্রী ও শিশু কন্যা আরবীর হাতে তিনি এই নগদ অর্থ তুলে দেন।
এ সময় তিনি পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং ভবিষ্যতে যে কোন প্রয়োজনে পাশে থেকে সহযোগীতার আশ্বাসদেন। তিনি জুলাই বিপ্লবে সরাসরি অংশ গ্রহণকারী এই বীরের আত্মত্যাগ গভীর কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন।
অ্যাড. রুহুল আমিন বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলায় দুজন শহীদকে নিয়ে প্রাথমিকভাবে ভুল তথ্য ছিল যে তারা তৎকালীন সরকারের পক্ষে ছিলেন। পরে শহীদের পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায় যে তারা আসলে জুলাইয়ের পক্ষের শক্তি ছিলেন। এই তথ্য জানার পর তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পরিবারকে প্রাপ্য আর্থিক সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ও দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আজিজুর রহমান, জেলা সেক্রেটারী অ্যাড. আসাদুজ্জামান, জেলা সহকারী সেক্রেটারী ও সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের, জেলা বায়তুল সেক্রেটারী কামাল উদ্দীন, দর্শনা থানা আমির মাওলানা রেজাউল করিম, সহকারী সেক্রেটারী জাহিদুল ইসলাম, দামুড়হুদা থানা আমীর নায়েব আলী, দর্শনা পৌর আমীর সাহিকুল আলম অপু, নায়েবে আমীর গোলজার হোসেন, পৌর সেক্রেটারী শাহরিয়ার আলম দবির, ইসলামী ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি সাগর হোসাইন, সাবেক সভাপতি হাফেজ এমদাদুল্লাহ জামেন, দর্শনা দারুসসুন্নাত সিদ্দীকিয়া ফাজিল মাসরাসার সহকারি অধ্যাপক আব্দুর রশিদসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় শহীদ মাসুদ রানার শশুর দর্শনা আজমপুরের অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মচারী বাবুল মিয়া আগত নেতৃবৃদ্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। শহীদ মাসুদ রানার মাগফিরাত কামনা, তার একমাত্র কণ্যা ও বিধবা স্ত্রীর মঙ্গল কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা আজিজুর রহমান।
উল্লেখ্য, ২০২৪ এর ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার আগের দিন ৪ আগস্ট সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে উত্তাল ঢাকার মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরের কাছে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন মাসুদ রানা মুকুল (৩৫)। মাসুদ রানা মুকুল চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার কয়রাডাঙ্গা গ্রামের স্কুল পাড়ার আব্দুর রায়হান ও জাহানারা খাতুনের ছোট ছেলে। আব্দুর রায়হান ও জাহানারা দমপতির তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার মাসুদ রানা মুকুল ঢাকার একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের লিফট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকুরী সুত্রে মিরপুর-১ নম্বর এলাকায় সনি সিনেমা হলের পেছনের দিকে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের নিরলসভাবে সহযোগিতা করেছেন শহীদ মাসুদ রানা মুকুল।