ঢাকায় জাতীয় সমাবেশ সফল করতে চুয়াডাঙ্গা জামায়াতের সাংবাদিক সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার

চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতে ইসলামী আমীর অ্যাড. রুহুল আমিন বলেন, আগামী ১৯ জুলাই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সংগঠনের উদ্যোগে এক জাতীয় সমাবেশের আয়োজন করেছে। এই জাতীয় সমাবেশকে ঘিরে আমাদের ৭ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ৭ দফা দাবি কেন্দ্রীয় সংগঠন পেশ করেছে। আমরা সব সময়ের জন্য একটি দেশের গণতন্ত্র এবং মূল্যবোধকে টিকিয়ে রাখার জন্য মানবিক মূল্যবোধকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা রাজনীতি করে আসছি। তারই ধারাবাহিকতায় এই সম্মেলন খুবই ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করছি। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে এই সম্মেলনটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এই সম্মেলনের মাধ্যমে সরকারকে বলেছি যে জাতীয় নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। দিনের ভোট রাতে হয় এরকম ভোট যেন আর বাংলাদেশে না হয়, আমার ভোট আরেকজন দেয় এমন ভোট যেন বাংলার জমিনে না হয়, ভোট সেন্টার দখল করা, বুথ দখল করা এমন কালচার যেন আর বাংলার জমিনে না হয়। এই কারণেই আমরা বলেছি এখন এই অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের দাবি একটি চূড়ান্তভাবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বাংলার ভোটের জন্য অবশ্যই করতে হবে। আমরা আরো বলেছি একটি সংস্কার অবশ্যই হতে হবে। সেই সংস্কারটি বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের শিক্ষানীতি কেমন হবে এই ব্যাপারে কোন বক্তব্য নেই, তার সংস্কার হওয়া উচিত।

গতকাল বুধবার বেলা ১২ টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে এক সংবাদ সন্মেলনে তিনি উপরোক্ত মন্তব্য করেন। জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী অ্যাড. মাসুদ পারভেজ রাসেলের সঞ্চালনায় রুহুল আমিন আরো বলেন, সরকার পরিবর্তনের নিয়ম কেমন হবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার না দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে সে ব্যাপারে কোন চূড়ান্ত কোন নীতি বাংলাদেশে হয়নি তার ব্যাপারে অবশ্যই একটি সংস্কার হতে হবে। দেশের সিভিল প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, আর্মি প্রশাসন সকল প্রশাসন ঘুষ বাণিজ্যের সাথে জড়িত তার ব্যাপারে অবশ্যই একটি সংস্কার প্রয়োজন আছে। যে দলই ক্ষমতায় থাকে তার হাতে টেন্ডার বাজি, তার হাতে ঠিকাদারি, তার হাতে ঘাট, তার হাতে মাঠ, তার হাতেই বাওড়, তার হাতেই বিল সবকিছুই তারা মুষ্টিগত করে রাখে এ ব্যাপারেও সংস্কার হতে হবে। পুলিশ প্রশাসন যে সরকারের অধীনে থাকে তাদের কথামতোই মানুষের বুকে গুলি করতে তারা দ্বিধাবোধ করে না তারও একটি সংস্কার হতে হবে। র‌্যাব প্রশাসন যারা সরকারে থাকে তাদের কথামতোই মানুষকে আয়না ঘরে নিয়ে যায় তারও একটা সংস্কার হতে হবে। এভাবেই প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে সংস্কার ছাড়া এই জুলাই আন্দোলনের রক্তের মূল্য দেওয়া কোন অবস্থাতেই সম্ভব নয়।

এরপর জুলাই গণহত্যার বিচার হতে হবে। যারা নির্বিচারে গুলি করেছে তাদের বিচার হতে হবে। যারা  হেলিকপ্টার থেকে গুলি করেছে তাদের বিচার হতে হবে। যারা নির্বিচারে পথচারী মানুষকে হত্যা করেছে তাদের বিচার হতে হবে।

এরপরেই আমরা আমাদের দাবির সাথে বলেছি যারা জুলাইয়ে আহত হয়েছে, যারা জুলাইয়ের শহীদ হয়েছে এই পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন করতে হবে। যারা দেশের জন্য রক্ত দিয়েছে, দেশের জন্য জীবন দিয়েছে, দেশের জন্য চোখ হারিয়েছে, পা হারিয়েছে এই দেশকেই তাদের মূল্য দিতে হবে। এই দেশকেই তাদের সম্মান করতে হবে। বাংলাদেশী যারা প্রবাসে থাকে, ১ কোটির উপরে যারা প্রবাসী আছে এই প্রবাসীদেরকে ভোটের অধিকার দিতে হবে।

তারপর আমরা বলেছি বাংলাদেশে পি আর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন করতে হবে। আমাদের এই দাবিগুলো আপনাদের মাধ্যমেই সমগ্র জাতিকে আমরা জানাতে চাই। আমরা এই দাবিগুলো আদায়ের জন্যই শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমরা সমবেত হব ১৯ তারিখ বেলা ২ ঘটিকার সময়। চুয়াডাঙ্গায় আমার সকল নেতাকর্মীসহ আমরা একসাথে যাবো আল্লাহ যদি চাহেন। আগামীকাল রাত ১১ টায় চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সামনে থেকে আমরা যাবো।

সংবাদ সন্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মওলানা আজিজুর রহমান, জেলা সহ-সেক্রেটারি আবদুল কাদের, জেলা অর্থ সম্পাদক কামাল উদ্দিন, পৌর আমির অ্যাড. হাসিবুল ইসলাম, পৌর নায়েবে আমির মাহবুব আশিক শফিসহ জামায়াত ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতৃবুন্দ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *