পাশাপাশি কবরে শায়িত হলেন দুই ভাই, চোখের জলে ভাসছে এলাকা

দর্শনা অফিস

উঠানে ভিড় করেছেন নানা বয়সী মানুষ। কেউ বিলাপ করে কাঁদছেন, আবার কেউ বা নির্বাক। উঠানের ঠিক মাঝখানেই রাখা দুটি মরদেহ। দুটি মরদেহ ঘিরে বিলাপ যেন থামছে না। তবে বাস্তবতাকে সঙ্গী করে শেষ পর্যন্ত তাদের দাফন করা হয়েছে পাশাপাশি দুটি কবরে। এসময় স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীদের আর্তনাদে ভারী হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। গতকাল শুক্রবার দামুড়হুদা উপজেলার বাস্তপুর গ্রামে দুই ভাইয়ের দাফনের সময় এই হৃদয় বিদারক দৃশ্য দেখা গেছে। নিহতরা হলেন- দামুড়হুদা উপজেলার বাস্তপুর গ্রামের মৃত ইসাহক আলির ছেলে আখতারুজ্জামান (৪৫) এবং আলম হোসেন (৪০)। তারা সম্পর্কে আপন ভাই।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকালে নিজ বাড়িতে বৈদ্যুতিক মেশিনে বিচালী (গরুর ঘাস) কাটছিলেন বড় ভাই আক্তারুজ্জামান। এ সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। বড় ভাই আক্তারুজ্জামানকে বাঁচাতে এসে ছোট ভাই আলম হোসেনও বিদ্যুৎস্পৃষ্টে হন। পরিবারের লোকজন গুরুতর অবস্থায় দুই ভাইকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা ইলিয়াস হোসাইন বলেন, তারা চার ভাই। যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে একজন বড় অন্য জন মেঝ। গ্রামবাসীর চোখের সামনেই ছোট বেলা থেকেই একসঙ্গে বেড়ে উঠেছে তারা দুজন। সামাজিক অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে সবকাজেই একসঙ্গে দেখা যেত তাদের। খুব বেশি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল দুজনের। হঠাৎ দুর্ঘটনায় তাদের মৃত্যুটাও একসঙ্গে হয়েছে। বিষয়টি একেবারেই মেনে নিতে পারছি না আমরা।

দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) হুমাউন কবির বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বৃহস্পতিবার দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়। শুক্রবার নিজ গ্রামের গোরস্থানে দুই ভাইকে পাশাপাশি দাফন করা হয়েছে। দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তিথি মিত্র জানান, ঘটনাটি গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে শুনেছি। পরিবারের পক্ষ থেকে যদি সাহায্য সহযোগিতার আবেদন করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে ব্যবস্থা করা হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *