স্টাফ রিপোর্টার
“পরিবেশ সুরক্ষা” এই হোক আমাদের অঙ্গীকার, এই অঙ্গীকারকে ধারণ করেই পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ^ পরেিবশ দিবস উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৫ জুন ঈদের ছুটি থাকায় ২৫ জুন গতকাল বুধবার সকাল ১০ ঘটিকায় জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশ^ পরেিবশ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার শাখার (উপ-পরিচালক) ভারপ্রাপ্ত শারমিন আক্তার। সভায় জনসচেতন মূলক ডকুমেন্টরি প্রদর্শনের মাধ্যমে ও পরিবেশ বান্ধব কলম বিতরন করে আলোচনা সভার সূচনা হয়। শুরুতেই পরিবেশের দূষণ রোধে সচেতনমূলক বক্তব্য রাখেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সিনিয়র কেমিস্ট নরেশ চন্দ্র বিশ^াস। তিনি বলেন পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখতে হলে পলিথিনের ও প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে। তিনি বলেন পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত মোট ৮৩০ কোটি মেট্রিক টন প্লাস্টিক উৎপাদন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৩০ কোটি মেট্রিক টন প্লাস্টিক সরাসরি আবর্জনায় পরিনত হয়েছে। অর্থাৎ পৃথিবীর মোট উৎপাদিত প্লাস্টিকের ৮০ শতাংশ বর্জ্য হিসেবে রয়ে যাচ্ছে। এ সকল বর্জ্য মাটিতে ও পানিতে মিশে পরিবেশ দূষিত করছে। পরিবেশ দূষণরোধে সকলকে পলিথিন ও প্লাস্টিক পন্য বর্জনের আহবান জানান তিনি।
এছাড়াও মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য দেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দলোনের জেলা আহ্বায়ক আসলাম হোসেন অর্ক, প্রথম আলো পত্রিকার চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি শাহ আলম সানি, বড় সলুয়া নিউ মডেল কলেজের প্রভাষক মো: আহসান আহমেদ (জীববিজ্ঞান বিভাগ) সহ আরো অনেকে।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছাত্রী, শিক্ষকবৃন্দ, সরকারী বেসরকারী দপ্তরের প্রধান ও প্রতিনিধিগণ, এনজিও প্রতিনিধিগণ, -সামাজিক সংগঠন, ইটভাটা মালিক সমিতির সদস্যগণ, রাইস মিলের উদ্যোক্তাগণ ছাড়াও ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিক মালিক সমিতির সদস্যগণ। সভা শেষে পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার, সার্টিফিকেট ও ঔষধি গাছের চারা বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারি পুলিশ সুপার তাজরিনা সুলতানা। সভার সভাপতি শারমিন আক্তার দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে সমাপনী বক্তব্যে সকলকে পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যবহারে সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়ে আলোচনা সভার কার্যক্রম সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে,

“প্লাস্টিক দূষণ আর নয় বন্ধ করার এখনি সময়” এই প্রতিপাদ্যে মেহেরপুরে পালিত হয়েছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। দিনটি উপলক্ষে গতকাল বুধবার বেলা ১২ টায় মেহেরপুর জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সামনে থেকে শুরু হয়ে জেলা প্রশাসক চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। নেতৃত্ব দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ। জেলা প্রশাসকের সহকারী কমিশনার সাজেদুল ইসলাম, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজাফফর হোসেন উপস্থিত ছিলেন। শোভাযাত্রায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহণ করেন।
এদিকে, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাংনী উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ আয়োজন করা হয়। দিবসটির তাৎপর্য তুলে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় সভায় বক্তারা বলেন, পরিবেশের ভারসম্য রক্ষায় গাছের ভুমিকা অপরিসীম। আলোচনা সভায় অংশগ্রহনকারী ৩০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে গাছের চারা বিতরণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াত ইসলামের শুরা সদস্য নাজমুল হুদা, মেহেরপুর জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আশাদুজামান বাবলু, ইনসারুল হক ইন্সু, কাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলম হোসাইন প্রমুখ।
দামুড়হুদা অফিস জানিয়েছেন,

দামুড়হুদায় বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে র্যলি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে “প্লাস্টিক দূষণ আর নয়, বন্ধ করার এখনি সময়” এই স্লোগানকে সামনে রেখে দামুড়হুদা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে প্রথমে র্যালি বের হয়। র্যালি শেষে পরবর্তীতে পরিষদের সভাকক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তিথি মিত্রের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে এইচ তাসফিকুর রহমান, সমাজ সেবা কর্মকর্তা তোফাজ্জল হক, প্রকৌশলী কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ, দামুড়হুদা প্রেসক্লাব সভাপতি শামসুজোহা পলাশ, মৎস্য কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আল সাবাহ, একাডেমি মাধ্যমিক স্কুল সুপার ভাইজার রাফিজুল ইসলামসহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ ও আমন্ত্রণিত অতিথিবৃন্দ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বিশ্ব পরিবেশ দিবসের গুরুত্বরোপ করে বলেন পরিবেশ সুস্থ না থাকলে আমরা কেউ সুস্থ থাকব না। বর্তমানে প্লাস্টিকের দূষণ বেড়ে যাওয়ার কারণে আমাদের চারপাশের পরিবেশ মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন। ক্ষুদ্র বা মাইক্রো প্লাস্টিকের কণা বিভিন্ন মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে মরণব্যাধি রোগ যেমন ক্যানসার, স্ট্রোক, কিডনি ড্যামেজসহ নানা দুরারোগ্য ব্যাধির সৃষ্টি করছে। সুতরাং প্লাস্টিক বর্জ্যসমুহ অবশ্যই সঠিক জায়গায় ফেলতে হবে এবং রিসাইক্লিনের ব্যবস্থা করতে হবে। ইট ভাটা বন্ধ না করলে একদিকে যেমন উর্বর ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে, অপর দিকে ইটভাটার ধোয়ায় পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। তাই সঠিক নিয়ম মেনে ইট ভাটা চালাতে হবে। নিয়ম মেনে কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে যাতে আমাদের চারপাশের পরিবেশের ক্ষতি না হয়।ইলেকট্রনিক বর্জ্যসমুহ সঠিক জায়গায় ফেলতে হবে এবং রিসাইক্লিন করে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করতে হবে। যাতে পরিবেশের কোন ক্ষতি না হয়।