বিশ্ব ডেস্ক
লাতিন আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ায় আবারও ভয়াবহ সহিংসতা এবং সংঘাত মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, যার বড় শিকার হয়েছে সাধারণ মানুষ। জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস ওসিএইচএ (OCHA) জানাচ্ছে, ২০২৪ সালের প্রথম পাঁচ মাসেই ৬৬,০০০-এর বেশি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে চলমান সশস্ত্র সংঘর্ষই এর প্রধান কারণ। এই বাস্তুচ্যুতির হার গত বছরের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি—যা কলম্বিয়ার জন্য একটি গভীর মানবিক সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত এই সহিংসতার নতুন ঢেউ বইছে, বিশেষ করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ক্যাটাটুম্বো এবং দক্ষিণ-পশ্চিম কাউকা অঞ্চলে। ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (ইএলএন) গেরিলারা এবং সাবেক এফএআরসি (FARC) বিদ্রোহীদের ভিন্নমতাবলম্বীরা একে অপরের সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব বিস্তারের লড়াইয়ে লিপ্ত। জানুয়ারিতে এই সংঘর্ষে ৮০ জনেরও বেশি নিহত ও ২০ জন আহত হন। মার্চের শেষদিকে FARC বিদ্রোহীদের এক বিস্ফোরণে একজন সেনা নিহত হয় এবং আরও ৮০ জন আহত হয়। জাতিসংঘ ফেব্রুয়ারিতে ৩.৮ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দিয়ে ৫৬,০০০ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সাহায্য করতে উদ্যোগ নিয়েছে, কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই সীমিত।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, কলম্বিয়ায় বর্তমানে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ৭.৩ মিলিয়নেরও বেশি—যা সুদান ও সিরিয়ার পরে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ। মানবিক সহায়তার জন্য করা ৩৪২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের আবেদন এখনও ১৪ শতাংশ অর্থায়নেই সীমাবদ্ধ, ফলে সহায়তা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সাহায্যপ্রাপ্তদের চাহিদার মাত্র ২৫ শতাংশ পূরণ করা সম্ভব হয়েছে, বাকি হাজার হাজার মানুষ এখনো সাহায্যের বাইরে রয়ে গেছে। এই সংকট আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও সক্রিয় সহায়তা এবং সহানুভূতিশীল মনোভাবের দাবি রাখে, যাতে কলম্বিয়ার এই নিরীহ মানুষেরা আবারও নিরাপদ জীবনের আশায় ফিরে যেতে পারেন তাদের নিজভূমিতে। তথ্যসূত্র : ইউএন নিউজ, সিনহুয়া