দুই দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রী বৃদ্ধি, ভ্যাপসা গরমের অতিষ্ঠ মানুষ দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়েছে ৪১.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস

স্টাফ রিপোর্টার

এই মৌসুমে প্রথম বারের মতো তীব্র তাপপ্রবাহ বহে যাচ্ছে চুয়াডাঙ্গার উপর দিয়ে। গত দুই দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে মানুষ ও প্রাণীকুল অস্থির হয়ে পড়েছে। ৭ মে চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৬.৮ ডিগ্রী ও পরদিন ৮মে বৃদ্ধি পেয়ে ৩৯.৭ ডিগ্রী সেলসিয়াসে দাঁড়ায়। গতকাল শুক্রবার আবারো প্রায় ২ ডিগ্রী বৃদ্ধি পেয়ে জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।  প্রতিদিনই বাড়তে শুরু করেছে তাপমাত্রা। বাতাসের আদ্রতা বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরমে শরীরে ঘাম ঝড়াচ্ছে। দ্বিতীয় দিনের মতো গতকালও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়েছে ৪১.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আদ্রতা ছিলো ৪৬ ভাগ।

ফলে জনজীবনে দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে রাস্তায় মানুষের চলাচল কমে যাচ্ছে। প্রয়োজন ছাড়া বাড়ী থেকে মানুষ বের হচ্ছেনা। দিনের বেশিরভাগ সময় সূর্যের তাপে গরম অনুভূত হচ্ছে। যা সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকছে। রোদের তীব্র প্রখরতায় চারপাশে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে। নির্মাণ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, ইজিবাইক চালক ও রিক্সা ভ্যান চালকরা দুর্বিসহ গরমে তাদের যানবাহন চালাতে পাছেনা। একটু প্রশান্তির জন্য গাছের তলায় কিংবা ঠান্ডা স্থানে বিশ্রাম নিচ্ছেন।

রিকশাচালক গফুর আলী  জানান, রোদের তাপে রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে এবং ঘন ঘন বিশ্রাম নিতে হচ্ছে। যেখানেই ছায়া পাচ্ছি বিশ্রাম নিচ্ছি। রোদের তেজের কারনে একটানা রিকশা চালানো সম্ভব হচ্ছে না।

শহরের মুদি ব্যবসায়ী ফরহাদ  হোসেন বলেন, শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় দোকানে বেচাকেনার চাপ একটু বেশি থাকে। অন্য দিন বেলা বাড়ার সাথে সাথে গরম বাড়ে। কিন্তু সকাল থেকে গরম শুরু হয়েছে। তাতে আমাদের অবস্থা নাভিশ্বাস। গরমে ফ্যানের বাতাসও যেন গরম লাগছে। কয়েকজন অভিভাবকের সাথে কথা হলে তারা বলেন গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে গরম শুরু হয়েছে। ফলে, বাচ্চারা রাতে ভ্যাপসা গরমে ছটফট করছে। কোটপাড়ার বাসিন্দা আলম বলেন, প্রচন্ড  গরম পড়ছে। কোথাও থাকা যাচ্ছে না। কয়েক দিন আগেও গরম কম ছিল। এখন বেড়ে গেছে। বৃষ্টি না হলে মানুষের অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে।

               আবহাওয়া অফিসের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে ৯মে ও গতকাল চুয়াডাঙ্গায় একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। গত বছর এই দিনে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো ৩৩.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক রকিবুল ইসলাম বলেন, শনিবার তাপমাত্রা আরো কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে। রবিবার থেকে হয়ত কিছুটা হ্রাস পেতে পারে। সেক্ষেত্রে তাপমাত্রা ৩৯/৪১ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করতে পারে। এই রকম আবহাওয়া ১৩ মে পর্যন্ত বিরাজ করতে পারে। তারপর বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা রয়েছে। চলতি মে মাসে দুটি নিন্মচাপ ও একটি সাইক্লোন বা ঘূর্ণীঝড় আঘাত হানতে হতে পারে। নিন্মচাপটি মে মাসের ১৫ তারিখের দিকে অপরটি মাসের দিকে হতে পারে। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *