বিএনপি ক্ষমতায় গেলে চুয়াডাঙ্গাকে সকল দিক থেকে উন্নয়ন করা সম্ভব হবে: শামসুজ্জামান দুদু

স্টাফ রিপোর্টার

চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিজ বাসভবনে, গণমাধ্যমকর্মী, শিল্পকলা মঞ্চে মতবিনিময় ও অসুস্থ দলীয় কর্মীকে দেখতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে যান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। এসময় তিনি রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণসহ ধানের শিষের পক্ষে ভোট প্রার্থনাও করেন। 

গতকাল রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিজ বাসভবনে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামসুজ্জামান দুদু। তিনি এনসিপি’র মার্কা প্রসঙ্গে বলেন, প্রায় ৪০-৫০টা নিবন্ধীত রাজনৈতিক দল আছে তাদের মার্কাও আছে, তারা কাজও করছে। এনসিপি একটি নতুন রাজনৈতিক দল, নিবন্ধিত হবে, মার্কাও হবে একটু সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। সবরই নিজের নিজের পছন্দ থাকতে পারে। এনসিপির একটা প্লাসপয়েন্ট যারা ২৪’র গণঅভ্যান করেছিলো তাদের নেতৃত্ব পর্যায় তরুনদের একটা বড় অংশ তাদের সঙ্গে আছে। তারা একটা চাওয়া বা আকাঙ্খার কথা বলেছে। এনসিপি যে মার্কাটা দাবি করছে নির্বাচন কমিশনের তালিকায় সেই মার্কাটা নাই। এ সম্পর্কে আইনি প্রক্রিয়ার বিষয়টা নির্বাচন কমিশনই ভাল বলতে পারে। যে মার্কাটা নাই কোন একটি বিশেষ দলের জন্য মার্কাটা নির্বাচন কমিশনের তালিকায় সংযোজন করতে পারে কিনা নির্বাচন কমিশনই যানে।

তিনি জুলাই সনদ স্বাক্ষর ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, জুলাই সনদ স্বাক্ষর হয়েছে। নির্বাচনও হবে। একটি বিশেষ দলের কারণে নির্বাচন হবে না এমন কোন শঙ্কা নেই। এটা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হয়ে যাবে। তারাও নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে এটা আমার বিশ্বাস।

শিক্ষকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, একেকজনের লক্ষ্য একেক রকম হতে পারে। শিক্ষকদের মুল দাবির সাথে আমাদের দল কোন দ্বিমত পোষণ করছে না। আমি সকল যৌক্তিক দাবির প্রতি সম্মান জানাচ্ছি। কিন্তু সময়টা ভেবে দেখতে হবে। এই সকার শুধু নির্বাচনই করতে পারে। আগামী নির্বাচনে যে সরকার ক্ষমতায় আসবে সেই সরকারকেই সকল দাবি-দাওয়া ফেইজ করতে হবে। আমাদের বিভিন্ন সংকট সমস্যা আছে। একটু ধৈর্য্য ধরে নির্বাচিত সরকারের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

স্থানীয় জনগণের সমর্থনের বিষয়ে তিনি বলেন, যে সময় আমি নির্বাচিত হয়েছিলাম। সেই সময় আমাদের পার্টির মহাসচিবসহ বেশ কিছু স্থায়ী কমিটির সদস্যও পরাজিত হয়েছিলো। শুধু পরাজিতই হয় নাই। ঐ সময় আমরা সরকারও গঠন করতে পারি নাই। সেই সময় আমি চুয়াডাঙ্গা-১ আসন থেকে বিপুল ভোটের মাধ্যমে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলাম। এখানকার ভোটারগণ বিএনপিকে ভালোবাসে, শহীদ জিয়াকে ভালোবাসে, খালেদা জিয়াকে ভালোবাসে, তারেক রহমান ও ধানের শীষকে ভালোবাসে। আমি আশাবাদি আগামী নির্বাচনে ধানের শীষকে বিজয়ী করবে।

জুলাই সনদ স্বাক্ষর নিয়ে তিনি বলেন, জুলাই সনদে স্বাক্ষর হয়েছে। একটি দল আইনের জুলাই সনদের আইনের ভিত্তির উপর দাড়িয়ে রাজনৈতিক লড়াইটা অব্যাহত রেখেছে। তারা যদি আইনের ওই বিষয়টি মাথায় নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারে তাহলে তারাই আইনের ভিত্তি দিতে পারে।

চুয়াডাঙ্গার উন্নয়ন নিয়ে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, চুয়াডাঙ্গা একটি সীমান্তবর্তী জেলা হওয়াতে জাতীয় ভাবেই আমরা অবহেলিত। পদ্মার এপারের দিকে তাকালেই মনে হয় আমরা কতটা অবহেলিত। চুয়াডাঙ্গার রাস্তাঘাটগুলো একেবারেই চলাচলের উপযোগি নাই। শিক্ষার মান, স্বাস্থ্যসেবা কোনটাতেই উন্নত না। এখানে উন্নয়ন হতে হবে। সে জন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজন এবং একটি মেডিকেল কলেজ প্রয়োজন। কৃষিক্ষেত্রে চুয়াডাঙ্গা বিপ্লব আনলেও এখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এখানে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হলে ভালো হয়। বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় গেলে চুয়াডাঙ্গাকে সকল দিক থেকে উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।

শিল্পকলামঞ্চে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানে তারেক রহমান ভালবাসলে ধানের শীষকে বিজয়ী করতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। নানামুখি ষড়যন্ত্র আছে। পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র আছে। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে। যাই ঘটুক ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অবশ্যই বাংলাদেশে হচ্ছে। সেই নির্বাচনে শহীদ জিয়ার মার্কা, বেগম জিয়ার মার্কা, তারেক জিয়ার মার্কা, বাংলাদেশের মানুষের মার্কা ধানের শীষের কোন রকম ব্যতয় যেনো না ঘটে। সব সময় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। প্রচার কতে হবে। মানুষের কাছে যেতে হবে। আমরা যদি মনে করি ধানের শীষ ছাড়া কেউ নাই, তাহলে মস্ত বড় ভুল হবে। ঘরে বসে থাকা যাবে না। ঘরের বাইরে বেরুতে হবে, মানুষের কাছে যেতে হবে। মা-বোনদের কাছে অনুরোধ করতে হবে। ধানের শীষে ভোট প্রার্থনা করতে হবে। একটি মার্কার পাল্টা শক্তি নানা ভাবে, নানা মুখোরোচর ভাবে মিথ্যা কথা প্রচার করছে। কেউ কেউ বলছে তাদের সেই মার্কাই নাকি ভোট দিলে বেহেশতে চলে যাবে। এক আল্লাহ ছাড়া বেহেশতের মালিক কেউ না। আমাদের প্রত্যেকের রোজ হাশরে বিচার হবে। পাপ-পূন্যের বিচার করে কে বেহেশতে যাবে সেখানেই নির্ধারণ হবে। ঐ রাজনৈতিক দল নাকি বেহেশতের চাবি কাঠি নিয়ে বসে আছে। এতো বড় মিথ্যাবাদিরা যদি ক্ষমতায় যায় বা ক্ষমতার আসে পাশে যায় তাহলে বাংলাদেশের সর্বনাশ হয়ে যাবে। ইসলাম ব্যবসা করার বিষয় না। ইসলাম মানবতা এবং মানুষের ধর্ম, মানুষের অগ্রগতির ধর্ম। তারা কোরআনেরও ভূগোল ব্যাখ্যা দিচ্ছে। ইসলাম এবং সকল ধর্মের বিশ্বাসী বিএনপির রাজনীতি।

এসময় তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য পূনরায় বলেন, আপনারা মানুষের কাছে যান। বাড়িতে বাড়িতে যান ধানের শীষের পক্ষে ভোট চান। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বিএনপির রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে সহজ হবে। সভাতে সদর উপজেলা কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির প্রায় চার শতাধিক নেতাকর্মী বিএনপির ভাইস প্রেসিডেন্ট শামসুজ্জামাদন দুদু- কে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করেন।

নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় শেষে তিনি অসুস্থ নেতা সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক রহিতকে দেখতে সদর হাসপাতালে যান। অসুস্থ আরেক নেতা সদর উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক রহিত-কে দেখতে তার নিজ বাসা কলোনীপাড়াতে যান এবং খোঁজ খবর নেন।

               মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ওয়াহেদুজ্জামান বুলা, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি  শহিদুল ইসলাম রতন,  জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট শামীম রেজা ডালিম, বিএনপি নেতা বোরহান উদ্দিন, আবু জাফর সিদ্দীক, জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আশরাফ বিশ্বাস মিল্টু, সহ-সভাপতি আরিফুজ্জামান পিন্টু, সহ-সভাপতি মাগরিবুর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক পিনু মুন্সী, সদস্য রকি, সাবেক যুবদল নেতা ফারুক মল্লিক, রমজান, বিএনপি নেতা রবিউল মল্লিক, সদর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি হাজি আব্দুল মালেক মোল্লা, কতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান খোকন, সাবেক সভাপতি রবিউল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান, কুতুবপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক হাসমত আলী, কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আলী হোসেন, সাবেক সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সহিদুল ইসলাম, বিএনপি নেতা আলাউদ্দিন মেম্বার, প্রবাসী আরিফুল ইসলাম, আক্তারুজ্জামান আক্তার, ওয়াজিউর রহমান মানিক, যুবদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ, শ্রমিকদল নেতা জয়নাল, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক টোটন খান, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক সাইফুল ইসলাম জনি, সদর উপজেলা যুবদলের আহবায়ক এমএইচ মোস্তফা,  জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মকলেচুজ্জামান মকলেচ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আহসান হাবীব মুক্তি,  সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুনজুরুল জাহিদ, সহ-সাংঠনিক সম্পাদক তৌফাকুর রিংকু, প্রকাশনা সম্পাদক জুয়েল রানা, বিজ্ঞান ও তথ্য বিষয়ক সম্পাদক ওয়াহেদ আলামিন, সহ-কোষাধ্যক্ষ সাকিল আহমেদ শুভ, বন ও পরিবেশক বিষয়ক সম্পাদক আবু নোমান পাপন, সহ-দপ্তর সম্পাদক সোহেল রান, পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, শ্রুম বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিম আহমেদ, জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি সুজন, সহ-সভাপতি প্রীতম, সহ-সভাপতি সোহেল রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবাবিল হোসেন সাদ্দাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক হিরোক আহমেদ, সদস্য রিমন বিশ্বাস, সদর থানা ছাত্রদলের আহবায়ক আনিচুর রহমান আনিচ, যুগ্ম আহবায়ক আল বেলাল, সদস্য আমান উল্লা আমান, আল মিজান শুভ, খালেকউজ্জামান বাঁধন, পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক রানা হামিদ ও আশিকুর রহমান আশিক,  পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আতিকুর রহমান বিদ্যুৎ,  জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ আলী আশরাফ রনি, সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ রাজন হোসেন, জেলা যুবদল সদস্য সামিউল আলীম রকি, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য শরিফ, সেলুন, রাকিব, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক জিন্না ফয়সাল ইকবাল, যুগ্ম আহবায়ক রুবেল জোয়ার্দ্দার, সদস্য সাইফুল ইসলাম, মিনারুল ইসলাম, নয়ন মিয়া, সবুজ লস্কর, সালাম ও রাকিব, জাতীয়তাবাদী গণতন্ত্র পরিষদের  সিনিয়র সভাপতি আরিফুল ইসলাম রনি, সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন, যুবদল নেতা সুজন মন্ডল,  সোহানুর রহমান সোহান, বশির আহমেদ শিবলু, পৌর যুবদল সদস্য সুমন রশিদ, হিন্দু বৌদ্ধ কল্যাণ ফ্রন্টের আহবায়ক অপূর্ব সাহাসহ প্রমুখ বিএনপি ছাত্রদল, যুবদল ও অঙ্গ সংগটনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেন। দুই দিনের কর্মসূচি শেষে তিনি রোববার বিকেলে বেনাপোল ট্রেনযোগে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *